ঈদুল ফিতরের ৯ দিনের ছুটিতে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ বিভিন্ন সমস্যার কথা জানিয়ে কল আসে প্রায় ২ লাখ ৪০ হাজার ৬৯৩টি। এর মধ্যে ভুয়া কল ছিল ১ লাখ ১৮ হাজার ৪১৬। সেবা নেওয়ার মানসিকতা থেকে কল আসে ৪৬ শতাংশ। বাকি ৫৬ শতাংশই ভুয়া। সে জন্য ভোগান্তি হয়েছে পুলিশের। যেসব কল আসে, তার মধ্যে বেশি ছিল মারামারি-সংঘর্ষের ঘটনার। এ ছাড়া মাইকে উচ্চ শব্দে গানবাজনা, হামলা, দুর্ঘটনা ও নারী নির্যাতনের ঘটনায় সহায়তা চেয়েও কল আসে।

জাতীয় জরুরি সেবার পরিদর্শক আনোয়ার সাত্তার গতকাল বুধবার  এ বিষয়ে বলেন, ঈদের ছুটির মধ্যে জাতীয় জরুরি সেবার মাধ্যমে নাগরিকদের চাহিদা অনুযায়ী জরুরি সেবা সরবরাহ করা হয়েছে। ঈদে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ছুটি থাকলেও জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কোনো ছুটি থাকে না। রাত-দিন ২৪ ঘণ্টা এই সেবা খোলা থাকে। এবার বিভিন্ন সহায়তার জন্য কল আসে ২ লাখ ৪০ হাজার ৬৯৩টি। তিনি বলেন, প্রতি মুহূর্তে ১০০টি কল রিসিভ করার সক্ষমতা রয়েছে। পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও অ্যাম্বুলেন্স-সংক্রান্ত সেবা দেওয়ার পাশাপাশি চাহিদা অনুযায়ী অন্য জরুরি সেবাও দেওয়া হয়েছে। এবার ঈদে জরুরি সেবা প্রদানযোগ্য ফোনকল ৪৬ শতাংশ এবং সেবা প্রদানযোগ্য নয়– এমন কল ছিল ৫৬ শতাংশ। আগের তুলনায় মানুষ এখন ৯৯৯ থেকে জরুরি সেবা বেশি নিচ্ছেন বলে মনে করেন তিনি।

৯ দিনে যেসব অভিযোগে কল

ঈদের ছুটিতে ১০টি সমস্যার তথ্য জানিয়ে ৯৯৯-এ আসা কলের মধ্যে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে মারামারি-সংক্রান্ত কল আসে ৩ হাজার ৭৬৮টি, এর পর শব্দদূষণের প্রতিকার চেয়ে ১ হাজার ২৩৩টি, অগ্নিকাণ্ডের ১ হাজার ২২২টি, জরুরি চিকিৎসাসেবার ৯৪৪টি, অবরুদ্ধ বা আটকে রাখার ঘটনায় ৯০৩টি, সন্ত্রাসীমূলক কর্মকাণ্ড প্রতিরোধে ৭৭৮টি, নারী নির্যাতনের প্রতিকার চেয়ে ৭৩৭টি, দুর্ঘটনায় ৫৭১টি, চুরি-সংক্রান্ত ৫৩৩টি এবং জমিজমা নিয়ে ৫০০টি।

৯ দিনে যত কল

২৮ মার্চ কলের সংখ্যা ২৮ হাজার ৬৮টি, ২৯ মার্চ ২৭ হাজার ৮০৮টি, ৩০ মার্চ ২৫ হাজার ৭৫৫টি, ৩১ মার্চ ২৩ হাজার ৪৯৮টি, ১ এপ্রিল ২৫ হাজার ৬৫২টি, ২ এপ্রিল ২৬ হাজার ৮১টি, ৩ এপ্রিল ২৮ হাজার ৪৬০টি, ৪ এপ্রিল ২৭ হাজার ৩৮০টি এবং ছুটির সর্বশেষ দিন ৫ এপ্রিল কলের সংখ্যা ছিল ২৭ হাজার ৯৯১টি।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ৯৯৯ এ র ঘটন

এছাড়াও পড়ুন:

রাইজিংবিডিতে সংবাদ প্রকাশ: ডেরা রিসোর্টের লাইসেন্স বাতিল

মানিকগঞ্জের ঘিওরের বালিয়াখোড়ায় অবস্থিত ডেরা রিসোর্ট এন্ড স্পা সেন্টারের নানা অনিয়ম নিয়ে রাইজিংবিডিতে ‘কবরস্থানে হরিণের খামারসহ নানা অনিয়মের আখড়া ডেরা রিসোর্ট’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পর প্রতিষ্ঠানটির লাইসেন্স বাতিল করেছে বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়। একইসঙ্গে ডেরা রিসোর্টে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করতে মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 

বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর)  বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সহকারী নিয়ন্ত্রক (সিনিয়র সহকারী সচিব) শেখ রাশেদুজ্জামান স্বাক্ষরিত এক নির্দেশনা পত্রে এ তথ্য জানানো হয়েছে। 

জানা গেছে, ডেরা রিসোর্ট এন্ড স্পা সেন্টার ২০২২ সালের ১৮ ডিসেম্বর লাইসেন্স প্রাপ্তির আবেদন করেন। নানা অনিয়মের কারণে তাদের লাইসেন্স নামঞ্জুর করা হয়েছে। রিসোর্টের লাইসেন্স না থাকায় প্রশাসনকে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 

২০২৫ সালের ১৪ জানুয়ারি ‘ফসলি জমি দখল করে ডেরা রিসোর্ট নির্মাণ, বিপাকে কৃষক’; ১৯ মার্চ ‘ছাড়পত্র ছাড়াই চলছে ডেরা রিসোর্ট, তদন্ত কমিটি গঠন’ শিরোনামে দুটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে রাইজিংবিডি। গত ১৩ সেপ্টেম্বর ‘কবরস্থানে হরিণের খামারসহ নানা অনিয়মের আখড়া ডেরা রিসোর্ট’ শিরোনামে প্রতিবেদনটি প্রকাশের পর বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয় ডেরার লাইসেন্স নামঞ্জুর করে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন। 

সুশাসনের জন্য নাগরিক মানিকগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ইন্তাজ উদ্দিন বলেন, “অনলাইন নিউজ পোর্টাল রাইজিংবিডিতে ডেরা রিসোর্ট নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলোতে সাধারণ মানুষের ক্ষোভ ও ভোগান্তি তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদক অনুসন্ধান করে ডেরা রিসোর্টের নানা অনিয়ম তুলে এনেছেন। প্রতিবেদন প্রকাশের পর প্রশাসন লাইসেন্স বাতিল করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে এটি ভালো উদ্যোগ। তবে এসব নির্দেশনা কাগজে কলমের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে বাস্তবায়ন করাটাই বড় কাজ। নির্দেশনা বাস্তবায়ন হলে সুশাসন নিশ্চিত হবে।” 

মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসক ড. মানোয়ার হোসেন মোল্লা বলেন, “মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার কপি পেয়েছি। সে অনুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

ডেরা রিসোর্ট এন্ড স্পা সেন্টারের ব্যবস্থাপক ওমর ফারুক বলেন, “লাইসেন্সের বিষয়ে কোন নোটিশ এখনও পাইনি আমরা। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার বিষয়েও জানা নেই। যদি লাইসেন্স বাতিল করে থাকে, তাহলে আমরা আইনিভাবে বিষয়টি সমাধান করব।”

এ বিষয়ে জানতে বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সকালে এশিউর গ্রুপের অঙ্গসংগঠন ডেরা রিসোর্ট এন্ড স্পা সেন্টারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শেখ সাদীর মোবাইলে ফোন করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

ঢাকা/চন্দন/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ