সর্বস্তরের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে আয়োজিত হবে এবারের চৈত্রসংক্রান্তি এবং বর্ষবরণ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলায় নববর্ষের শোভাযাত্রায় বাঙালিসহ অংশ নেবে ২৭ নৃগোষ্ঠীও। এ ছাড়া দুই শতাধিক তরুণ মিউজিশিয়ান গিটার ও ফিলিস্তিনের পতাকা নিয়ে হাজির হবেন এই শোভাযাত্রায়।

গতকাল বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। তিনি বলেন, গণঅভ্যুত্থানের পর বড় পরিসরে চৈত্র বিদায় ও বাংলা নতুন বছরকে বরণ করার উৎসবের আয়োজন করেছে সরকার। এবারের নববর্ষের আয়োজনের প্রধান বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, এটি হতে যাচ্ছে অন্তর্ভুক্তিমূলক। তার জন্য প্রস্তুত পাহাড় থেকে সমতল– পুরো দেশ। 

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার সহকারী প্রেস সচিব সুচিস্মিতা তিথি। এ সময় পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, এবার পার্বত্য এলাকার সাংস্কৃতিক উৎসব নতুন মাত্রায় উদযাপন করা হবে। 

রাজধানী ও সারাদেশের চৈত্রসংক্রান্তি ও নববর্ষে কী কী আয়োজন রয়েছে তা সংক্ষেপে তুলে ধরে সংস্কৃতি উপদেষ্টা বলেন, আমাদের উৎসবটা এবার চৈত্রসংক্রান্তি থেকে শুরু হচ্ছে। চৈত্রসংক্রান্তি উপলক্ষে ঢাকা শহরে শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে কনসার্ট হবে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। 

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এ বছর পহেলা বৈশাখে সুরের ধারার প্রভাতি আয়োজনটি হবে ধানমন্ডির রবীন্দ্র সরোবরে। ছায়ানট রমনা বটমূলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করবে ভোর সোয়া ৬ টায়। এ বছর পার্বত্য চট্টগ্রামের ১২টি জনগোষ্ঠীকে পহেলা বৈশাখের আয়োজনে সম্পৃক্ত করে পাহাড়ের বৈশাখী আয়োজনে বিস্তৃত করা হচ্ছে। আগামী ১৩ এপ্রিল দেশের ১২টি জেলার আধ্যাত্মিক ধারার সংগীতানুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। সন্ধ্যায় নবপ্রাণ আন্দোলন রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমিতে ‘বাংলার উৎসব’ শিরোনামে বর্ষবিদায়ের অনুষ্ঠান আয়োজন করবে। 

পহেলা বৈশাখের দিন বিকেল ৩টায় রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে বৈশাখী ব্যান্ডশোর আয়োজন করা হয়েছে। এদিন সন্ধ্যা ৭টায় জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় ড্রোন শোতে ফুটিয়ে তোলা হবে বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য। এতে সহযোগিতা করছে চীন দূতাবাস। 

পহেলা বৈশাখের সকাল থেকে বাংলা একাডেমিতে বিসিক আয়োজন করছে বৈশাখী মেলা। একই দিনে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলায় বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনে শুরু হবে ১৫ দিনব্যাপী বৈশাখী মেলা। 

আগের দিন থেকে ৩০টি জেলায় শুরু হবে তিন দিনব্যাপী বৈশাখী লোকনাট্য উৎসব। ১৫ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত ১২টি জেলায় শিল্পকলা একাডেমিতে প্রদর্শিত হবে অ্যাক্রোবেটিক প্রদর্শনী।  

এর আগে দুপুর ১২টায় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা সেমিনার কক্ষে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে সংস্কৃতি উপদেষ্টা ছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক (দায়িত্বপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ ওয়ারেছ হোসেন, বাংলা ব্যান্ড মিউজিশিয়ান্সের পক্ষ থেকে ওয়ারফেজ ব্যান্ডের সদস্য শেখ মনিরুল আলম টিপু ও বিভিন্ন ব্যান্ড দলের সদস্য।

এতে মোস্তফা সরয়ার ফারুকী জানান, এ বছর পহেলা বৈশাখের শোভাযাত্রায় প্রথমবারের মতো বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীসহ দুই শতাধিক ব্যান্ড মিউজিশিয়ান অংশগ্রহণ করবেন। ব্যান্ড মিউজিশিয়ানরা ‍পৃথিবীর শান্তি কামনায়, বিশেষ করে ফিলিস্তিনিদের জন্য সম্মিলিতভাবে একটি গান গাইবেন। 

চৈত্রসংক্রান্তি উপলক্ষে ১৩ এপ্রিল সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজন করা হবে ‘ব্যান্ড শো’। এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করবে বাংলাদেশের জনপ্রিয় ব্যান্ড দলগুলো। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: চ ত রস ক র ন ত এক ড ম ত শ ল পকল উপদ ষ ট নববর ষ অন ষ ঠ

এছাড়াও পড়ুন:

আষাঢ়ের প্রথম দিন আজ

ঝমঝম বৃষ্টি, কর্দমাক্ত পথঘাট, খাল-বিলে থৈ থৈ পানি- এমন দৃশ্যপট সামনে না থাকলেও ভেবে নিতে দোষ কি। কারণ, আজ পহেলা আষাঢ়।

রবি ঠাকুরের ভাষায়— ‘আবার এসেছে আষাঢ় আকাশও ছেয়ে... আসে বৃষ্টিরও সুবাসও বাতাসও বেয়ে...’।

অবশ্য একেবারে নিরাশ করেনি আষাঢ়। রাজধানীতে সকাল থেকেই আকাশে মেঘের আনাগোনা আর কোথাও হালকা বৃষ্টি জানান দিচ্ছে প্রকৃতিতে বর্ষার আগমন। বর্ষার আগমন যেন স্বস্তি-শান্তি ও আনন্দের। তীব্র গরমে হাঁসফাঁস নগরবাসীর জীবনে এক আনন্দের বার্তা। 

বাংলার প্রকৃতিতে আলাদা বৈশিষ্টময় বর্ষা ঋতুর আজ যাত্রা শুরু হলো। 

বলা হয়, গ্রীষ্মের খরতাপের ধূসর নাগরিক জীবন আর রুদ্র প্রকৃতিতে প্রাণের স্পন্দন জাগায় বর্ষা। জ্যৈষ্ঠের প্রচণ্ড খরতাপে রুক্ষ প্রকৃতি সজীব হয়ে উঠবে বর্ষার বর্ষণের মৃদঙ্গ-ছোঁয়ায়, এটাই যে সকল বাঙালির চাওয়া। 

আষাঢ়ের রিমঝিম বৃষ্টি গ্রীষ্মের ধুলোমলিন জীর্ণতাকে ধুয়ে ফেলে গাঢ় সবুজের সমারোহে প্রকৃতি সাজে পূর্ণতায়। রঙিন হয়ে পুকুর-বিলে ফোটে শাপলা-পদ্ম। বর্ষা ঋতু তার বৈশিষ্ট্যের কারণে স্বতন্ত্র। বর্ষার প্রবল বর্ষণে নির্জনে ভালোবাসার সাধ জাগে, চিত্তচাঞ্চল্য বেড়ে যায়। বর্ষার নতুন জলে স্নান সেরে প্রকৃতির মনও যেন নেচে ওঠে। ফুলে ফুলে শোভিত হয় প্রকৃতি। তাই বর্ষাবিহীন বাংলাদেশ ভাবাই যায় না। 

বর্ষা বাঙালি জীবনে নতুন প্রাণসঞ্চারকারী। বৃষ্টিস্নাত কদম ফুলের সৌন্দর্য্য যে দেখেছে, মুগ্ধ নয়নে চেয়ে না থেকে পারেনি। এর বর্ণনায় পল্লীকবি জসীমউদদীন লিখেছেন- ‘বনের ঝিয়ারি কদম্বশাখে নিঝঝুম নিরালায়, / ছোট ছোট রেণু খুলিয়া দেখিছে, অস্ফুট কলিকায়।’

বৃষ্টি হলে গ্রামের নদী নালা পুকুরে জল জমে থৈ থৈ করে। বর্ষা আনন্দ-বেদনার সারথী। সবুজের সমারোহে, মাটিতে নতুন পলির আস্তরণে বর্ষা আনে জীবনেরই বারতা। 

উন্নয়নের নামে চলমান প্রাণ-প্রকৃতি ধ্বংসের প্রক্রিয়া বন্ধের দাবি নিয়ে প্রতি বছরের মতো এ বছরও বর্ষা ঋতুকে বরণ করে নিতে ‘বর্ষা উৎসব’ আয়োজন করেছে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী। 

রবিবার (১৫ জুন) আষাঢ়ের প্রথমদিনে বাংলা একাডেমির নজরুল মঞ্চে এ উৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সকালে সুর-সংগীতে প্রকৃতি-বন্দনার মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে উৎসবের কর্মসূচি।

ঢাকা/টিপু

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কপালে ১৩টি এবং থুতনিতে ৪টি সেলাই করা লাগে
  • দেশের পর এবার বিদেশেও ঈদের সিনেমার মুক্তি
  • বকুলতলায় বৃষ্টির সুর
  • কলকাতায় নতুন সিনেমার শুটিং শুরু করলেন জয়া
  • বর্ষা উৎসবে বন ও পরিবেশ ধ্বংসের প্রতিবাদ, পান্থকুঞ্জ পার্ক রক্ষাসহ কয়েকটি দাবি
  • নাচ-গান-আবৃত্তিতে চারুকলায় বর্ষাবরণ
  • মেঘ-রোদের লুকোচুরির সকালে নাচে-গানে বর্ষাবরণ 
  • মেঘ-রোদের লুকোচুরি সকালে নাচে-গানে বর্ষাবরণ 
  • আষাঢ়ের প্রথম দিন আজ
  • কলিজা ঠান্ডা করে দেওয়া ছবি ‘উৎসব’