এইচবিওর জনপ্রিয় সিরিজ ‘গেম অব থ্রোনস’ অনেকেই দেখেছেন। সেখানে বিভিন্ন প্রাণীর মধ্যে সাড়ে ১২ হাজার বছর আগে বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া ডাইর উলফ নামের সাদা নেকড়ের কাল্পনিক দৃশ্য ভীষণ জনপ্রিয় হয়েছিল। সেই নেকড়ের জাত জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মাধ্যমে আবার পৃথিবীতে ফিরিয়ে এনেছেন যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসভিত্তিক কলোসাল বায়োসায়েন্সেস প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞানীরা। বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, এখন পর্যন্ত ১২ হাজার বছর আগে বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া নেকড়ের জাতের তিনটি শাবক জন্ম নিয়েছে। দুটি পুরুষ শাবকের জন্ম হয়েছে গত বছরের ১ অক্টোবর এবং নারী শাবকের জন্ম হয়েছে গত ৩০ জানুয়ারি।

জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মাধ্যমে পুরোনো ডিএনএ, ক্লোনিং ও জিন সম্পাদনার মাধ্যমে ডাইর উলফ শাবকের জন্ম দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। গত বছর জন্ম নেওয়া দুটি নেকড়ের নাম রাখা হয়েছে রোমুলাস ও রেমাস। প্রায় চার ফুট লম্বা নেকড়ে দুটির ওজন বর্তমানে ৩৬ কেজিরও বেশি। এর ফলে স্বাভাবিকভাবে বড় হচ্ছে নেকড়ে দুটি। প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ইলন মাস্ক দুটি নেকড়ের জন্মের পর খুদে ভ্লগ লেখার সাইট এক্সে (সাবেক টুইটার) প্রকাশ করে লিখেছেন, ‘দয়া করে একটি ক্ষুদ্র পোষ্য লোমশ ম্যামথ তৈরি করুন।’

বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, ক্লোনিংয়ের জন্য ডাইর উলফের নিকটতম জীবিত প্রজাতি ধূসর নেকড়ের ডিএনএ ব্যবহার করা হয়েছে। ডাইর উলফ ছিল উত্তর আমেরিকার শীর্ষ শিকারি প্রাণী। তারা ধূসর নেকড়ের চেয়ে আকারে বড় ছিল। তাদের পশম সামান্য ঘন ও চোয়াল শক্তিশালী। কলোসাল বায়োসায়েন্সেসের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও জেনেটিকস বিজ্ঞানী জর্জ চার্চ জানিয়েছেন, রক্তের নমুনা সংগ্রহের পর কালচার করে ক্লোন করা হয়েছে। এরপর ১৩ হাজার বছরের পুরোনো একটি দাঁত এবং ৭২ হাজার বছরের পুরোনো একটি খুলি থেকে ডিএনএ সংগ্রহ করে সুস্থ ডাইর উলফের শাবক জন্ম দিয়েছি।

ডাইর উলফের শাবকগুলোর আচরণ অন্যান্য নেকড়ে প্রজাতির থেকে বেশ আলাদা। মানুষের উপস্থিতিতে কুকুরছানার মতো উল্লাস দেখা যায়নি শাবকদের মধ্যে। রোমুলাস ও রেমাস মানুষ থেকে বেশ দূরত্ব বজায় রাখছে। জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মাধ্যমে ডাইর উলফের মতো বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া ম্যামথ, ডোডো ও তাসমানিয়ান বাঘকে পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনতে আগ্রহী বিজ্ঞানীরা।

সূত্র: এনডিটিভি

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: হ জ র বছর র জন ম

এছাড়াও পড়ুন:

ঋণ নেওয়ার আগে যে ১০টি বিষয় অবশ্যই জানা উচিত

নানা কারণে আপনার ঋণ নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। অনেক সময় মানুষ ব্যক্তিগত ঋণ, গৃহঋণ নেয়। আবার গাড়ি কেনার জন্যও অনেকে ঋণ নেন। ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমেও ঋণ নেওয়া হয়।

কিন্তু অনেকেই ঋণের সঙ্গে সম্পৃক্ত কিছু মৌলিক শব্দ সম্পর্কে জানেন না। ব্যাংকের কর্মকর্তারা যখন এসব শব্দ বলেন, তখন অনেক কিছুই বোঝেন না ঋণ নিতে ইচ্ছুক গ্রাহকেরা। ফলে নিয়মকানুন না জেনেই ঋণ নেন। এতে নানা অপ্রত্যাশিত ঝামেলা তৈরি হয়। তাই ঋণ নেওয়ার আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বোঝা খুব দরকার।

১. আসল টাকা (প্রিন্সিপাল)

আপনি যে পরিমাণ টাকা ঋণ নিচ্ছেন, সেটিই আসল। এর ওপরই সুদ ধরা হয়। কিস্তি পরিশোধের সঙ্গে আসল ধীরে ধীরে কমতে থাকে।

২. সুদের হার (ইন্টারেস্ট রেট)

ঋণ নেওয়ার আগে সবচেয়ে ভাবতে হয় সুদের হার নিয়ে। সুদের হার বেশি হলে খরচ বেড়ে যায়। ঋণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সুদের হার। এটি স্থিরও হতে পারে, আবার বাজারদরের ওপর নির্ভর করে বাড়তে-কমতেও পারে।

৩. মাসিক কিস্তি (ইএমআই)

ঋণের সুদ ও আসল পরিশোধ বাবদ প্রতি মাসে যে নির্দিষ্ট টাকা আপনাকে দিতে হবে। সেটি হলো ইএমআই বা ঋণের কিস্তি।

৪. ঋণের মেয়াদ

কত বছরের মধ্যে ঋণ শোধ করতে হবে, সেটিই হলো ঋণের মেয়াদ। মেয়াদ বেশি হলে কিস্তি ছোট হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা বেড়ে যায়। ছোট মেয়াদে কিস্তি বড় হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা কমে।

৫. অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)

শুধু সুদ ও আসল নয়, বরং ঋণের সব খরচ (যেমন ফি, চার্জ) মিলিয়ে আসল ব্যয় কত হবে, তার হিসাব হলো অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)। এটিই প্রকৃত খরচ বোঝায়।

৬. আগাম পরিশোধ (প্রিপেমেন্ট)

ঋণের বোঝা কমাতে অনেকে ঋণের সুদ ও আসলের টাকা আগেই শোধ করে দিতে চান। এতে সুদের খরচ কমে যায়।

৭. প্রসেসিং ফি

আপনি ঋণের জন্য কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আবেদন করলেন। কিন্তু ঋণ আবেদন মঞ্জুর থেকে শুরু করে ছাড় কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কিছু মাশুল দিতে হয়। এটিই প্রসেসিং ফি। এটি কখনো ঋণের টাকা থেকে কেটে নেওয়া হয়, আবার কখনো আলাদা দিতে হয়।

৮. স্থগিতকাল (মোরাটোরিয়াম)

বিশেষ পরিস্থিতিতে কিছুদিনের জন্য কিস্তি বন্ধ রাখার সুযোগকেই বলে স্থগিতকাল। তবে এই সময়েও সুদ জমতে থাকে। অনেক সময় ঋণ পরিশোধের জন্য বিশেষ কিস্তি ভাগও করে দেওয়া হয়।

৯. জামানত (কোলেটারাল)

ঋণের নিরাপত্তা হিসেবে আপনার সম্পদ (যেমন বাড়ি, সোনা, জমি) ব্যাংকে বন্ধক রাখা হয়। কিস্তি না দিলে ব্যাংক ওই সম্পদ বিক্রি করে টাকা তুলে নেয়।

১০. লোন-টু-ভ্যালু রেশিও

আপনি যত টাকা ঋণ নিচ্ছেন আর জামানতের মূল্য কত—এই অনুপাতকে বলে লোন টু ভ্যালু রেশিও (এলটিভি)। এর অনুপাত যত কম হয়, ব্যাংকের ঝুঁকি তত কম।

সম্পর্কিত নিবন্ধ