কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে বাংলা নববর্ষ উদযাপনে জমজমাট বৈশাখী উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। সোমবার (১৪ এপ্রিল) বৈশাখের প্রথম দিন সকাল থেকেই সৈকতের লাবণী, সুগন্ধা, কলাতলী ও ইনানী পয়েন্টে ভিড় করছেন হাজারো পর্যটক ও স্থানীয় মানুষ।

রঙ-বেরঙের পোশাক, মুখে হাসি আর হাতে পান্তা-ইলিশের থালা—সব মিলিয়ে উৎসবমুখর পরিবেশে মুখরিত সমুদ্রসৈকতের বিভিন্ন পয়েন্ট। সৈকতে বিভিন্ন সংগঠনের আয়োজনে আনন্দ শোভাযাত্রা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়েছে এবং বৈশাখী মেলা বসেছে। লাবণী পয়েন্টে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে উন্মুক্ত মঞ্চ করা হয়েছে।

সবার প্রত্যাশা, নতুন বছর মানুষের জীবনে বয়ে আনবে অনাবিল আনন্দ। থাকবে না হিংসা-বিদ্বেষ, দুর্নীতি ও হয়রানি।

সকাল ১০টার পর থেকে সৈকতে ভিড় বাড়তে থাকে। পরিবার-পরিজন, বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করতে নানা বয়সের মানুষ যোগ দেন বৈশাখী উৎসবে।

ঢাকার বাসাবো থেকে আসা পর্যটক রণধীর দিব্য বলেছেন, সমুদ্র আর বৈশাখী উৎসব একসঙ্গে উপভোগ করার অভিজ্ঞতা অসাধারণ। কক্সবাজারে নববর্ষ উদযাপন অনেক আনন্দ দিয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা জুবায়ের আহমদ বলেছেন, পহেলা বৈশাখে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে সমুদ্র দেখতে এলাম। এ ধরনের উৎসব স্থানীয় পর্যটন শিল্পকে যেমন চাঙ্গা করে, তেমনই আমাদের সংস্কৃতির সঙ্গে সবাইকে আরো গভীরভাবে যুক্ত করে।

পর্যটক ও দর্শনার্থীদের সুবিধার্থে কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশ ও জেলা প্রশাসন কঠোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তা ও সহায়তা নিশ্চিত করতে মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ। সৈকতে ট্যুরিস্ট পুলিশ, বিচকর্মীরা সার্বক্ষণিক পর্যটকদের সহায়তা করছেন।

বিচকর্মীদের সহকারী সুপারভাইজার বেলাল হোসেন বলেছেন, ঈদের পর সৈকতে এটি দ্বিতীয় বৃহৎ পর্যটক সমাগম। পহেলা বৈশাখে সৈকতে আনন্দ করতে পরিবার ও আপনজনদের নিয়ে বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লোকজন বেড়াতে এসেছেন। তাদেরকে আমরা সার্বক্ষণিক সেবা দিয়ে যাচ্ছি।

১৪৩২ বঙ্গাব্দের বৈশাখী উৎসব ঘিরে কক্সবাজারে পর্যটকদের উপস্থিতি স্থানীয় ব্যবসায়ীদের মুখে হাসি ফুটিয়েছে। হোটেল-মোটেল, খাবারের দোকান ও পর্যটনসংশ্লিষ্ট ব্যবসায় চাঙাভাব দেখা দিয়েছে।

ট্যুরিস্ট পুলিশের কক্সবাজার রিজিয়নের প্রধান (অতিরিক্ত ডিআইজি) মো.

আপেল মাহমুদ বলেছেন, পর্যটকদের নিরাপত্তা ও নির্বিঘ্ন উৎসব উদযাপনে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সৈকতে প্রতিটি পয়েন্টে ট্যুরিস্ট পুলিশের সদস্যরা আছেন। পর্যটকরা যে কারো অনিয়মের বিরুদ্ধে ট্যুরিস্ট পুলিশের কাছে অভিযোগ করতে পারবেন। কেউ পর্যটকদের হয়রানির চেষ্টা করলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ঢাকা/রফিক

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর বল ছ ন ব যবস আনন দ

এছাড়াও পড়ুন:

‘মবের’ পিটুনিতে নিহত রূপলাল দাসের মেয়ের বিয়ে আজ

রূপলাল রবিদাসের বাড়িতে সকাল থেকেই ব্যস্ততা। সড়কে রঙিন গেট, উঠানে বাঁশের মাচা, রঙিন কাপড়ের প্যান্ডেল, ধোঁয়া উঠছে রান্নার হাঁড়ি থেকে। বাইরে থেকে দেখে মনে হয়, আনন্দঘন উৎসব। তবে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে বোঝা যায়, এই উৎসবের ভেতর আছে গভীর শোকের ছায়া। আজ রোববার রূপলালের মেয়ের বিয়ে। এই মেয়ের বিয়ে দিন ঠিক করতে যাওয়ার আগের দিন ‘মবের’ শিকার হয়ে পিটুনিতে প্রাণ হারান রূপলাল।

রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের ঘনিরামপুর গ্রামে নিহত রূপলাল রবিদাসের বাড়ি। রূপলালের পরিবার ও স্থানীয় মানুষেরা জানান, ১০ আগস্ট মিঠাপুকুর উপজেলার শ্যামপুর এলাকার এক তরুণের সঙ্গে রূপলালের বড় মেয়ে নূপুর রানীর বিয়ের দিন ঠিক করার কথা ছিল। এ জন্য ৯ আগস্ট মিঠাপুকুর থেকে নিজের ভ্যান চালিয়ে রূপলালের বাড়ির উদ্দেশে রওনা হন তাঁর ভাগনির স্বামী প্রদীপ দাস। কিন্তু গ্রামের ভেতর দিয়ে রাস্তা না চেনায় প্রদীপ দাস সয়ার ইউনিয়নের কাজীরহাট এলাকায় এসে রূপলালকে ফোন করেন। রূপলাল সেখানে যান। তাঁরা দুজনে ভ্যানে চড়ে রূপলালের বাড়ি ঘনিরামপুর গ্রামের দিকে রওনা হন। রাত ৯টার দিকে তারাগঞ্জ-কাজীরহাট সড়কের বটতলা এলাকায় পৌঁছালে ভ্যানচোর সন্দেহে তাঁদের দুজনকে থামান স্থানীয় কয়েকজন। এরপর সেখানে লোক জড়ো হতে থাকেন। একপর্যায়ে মব তৈরি করে রূপলাল দাস ও প্রদীপ দাসকে গণপিটুনি দিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় রূপলালের স্ত্রী হত্যা মামলা করেন এবং পুলিশ ৬ জনকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠায়।

আরও পড়ুনহাত জোড় করে বাঁচার আকুতি, তবু শেষ রক্ষা হয়নি রূপলাল ও প্রদীপের১১ আগস্ট ২০২৫

বাবার মৃত্যুর পর নূপুর রানীর বিয়ের আয়োজন বন্ধ হয়ে যায়। রূপলালকে হারিয়ে পুরো পরিবার দিশাহারা হয়ে পড়ে। তবে রূপলালের পরিবার জানিয়েছে, মেয়ের বিয়ের জন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এক লাখ, তারাগঞ্জ হাটের ব্যবসায়ীরা ৭১ হাজার, উপজেলা বিএনপির পক্ষ থেকে ৭৫ হাজার, একটি সংগঠন থেকে এক লাখ টাকা পেয়েছেন। এ ছাড়া নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুজন হৃদয়বান ব্যক্তি রূপলালের ছেলে জয় রবিদাস ও ছোট মেয়ে রুপার পড়াশোনা দায়িত্ব নিয়েছেন। তাঁদের সমাজসেবা অধিদপ্তরের মাধ্যমেও শিক্ষাবৃত্তি দেওয়া হচ্ছে। ওই টাকায় তাঁরা পড়াশোনা করছেন।

নূপুর রানীর বিয়ে উপলক্ষে বাড়ির সামনের সড়কে রঙিন গেট স্থাপন করা হয়েছে। আজ রোববার সকালে রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের ঘনিরামপুর গ্রামে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শেফালি আর দীপ্তিতে নতুন মুম্বাইয়ে নতুন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ভারত
  • ‘মবের’ পিটুনিতে নিহত রূপলাল দাসের মেয়ের বিয়ে আজ
  • দুই দিনে যেতে পারেননি কোনো পর্যটক, কক্সবাজার-সেন্ট মার্টিন জাহাজ চলাচল অনিশ্চিত
  • অনুমোদনের প্রথম দিন সেন্ট মার্টিন যায়নি কোনো পর্যটকবাহী জাহাজ
  • সেন্টমার্টিনের দ্বার খোলা, ছাড়েনি জাহাজ
  • ভালো ফলনের আশায় গাছকে খাওয়ান তাঁরা
  • পর্যটন শিল্প বিকাশে আইকন গ্লোবাল ট্যুর অপারেটর আল মামুন
  • সুন্দরবনের নতুন পর্যটন স্পট ‘আলী বান্দা’
  • কক্সবাজার সৈকতে ঘোড়া, কুকুর ও গরু, স্বাস্থ্যঝুঁকি কতটুকু
  • সেন্টমার্টিনের দ্বার খুলছে শনিবার, জাহাজ চালাবেন না মালিকরা