যুবলীগ নেতাকে মদসহ আটক করে মারধর, পরে পুলিশে সোপর্দ
Published: 17th, April 2025 GMT
নোয়াখালী সদর উপজেলায় যুবলীগের এক নেতাকে মদসহ আটকের পর মারধর করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছেন স্থানীয় লোকজন। তাঁর নাম নাছির উদ্দিন (৪৩)।
গতকাল বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে উপজেলার অশ্বদিয়া ইউনিয়নের আইয়ুবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকা থেকে তাঁকে আটক করা হয়। নাছির উদ্দিন উপজেলার অশ্বদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য। আওয়ামী লীগের পতনের পর আত্মগোপনে চলে যান যুবলীগ নেতা ও ইউপি সদস্য নাছির উদ্দিন।
স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কয়েক দিন আগে এলাকায় আসেন নাছির উদ্দিন। গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে আইয়ুবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকা থেকে নাছির উদ্দিনকে আটক করেন স্থানীয় একদল তরুণ। তাঁরা নাছিরের কাছ থেকে প্রায় চার লিটার চোলাই মদ উদ্ধারের দাবি করে তাঁকে মারধর করেন। পরে থানায় খবর দেওয়া হলে পুলিশ তাঁকে থানায় নিয়ে যায়।
নাছির উদ্দিনের বিরুদ্ধে এলাকায় ইয়াবা ব্যবসা, কিশোর গ্যাংসহ নানাভাবে ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ ছিল। কিন্তু ক্ষমতাসীন দলের সহযোগী সংগঠনের নেতা ও ইউপি সদস্য হওয়ার কারণে তাঁর বিরুদ্ধে এলাকার লোকজন প্রতিবাদ করার সাহস পেতেন না। একই কারণে পুলিশ প্রশাসনও তাঁর বিষয়ে নীরব ছিল বলে জানান এলাকাবাসী।
জানতে চাইলে সুধারাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, নাছির উদ্দিন আগে থেকে মাদকের সঙ্গে জড়িত। এলাকার লোকজন তাঁকে চোলাই মদসহ আটক করেছেন। মারধরের বিষয়টি তাঁর জানা নেই। মদ উদ্ধারের ঘটনায় মাদক আইনে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। ওই মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হবে। নাছির উদ্দিনের বিরুদ্ধে পূর্বের কয়টি মামলা রয়েছে, সেটি যাচাই করে দেখা হচ্ছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
প্রেম ছিল না তবু কেন মধুবালাকে বিয়ে করেছিলেন কিশোর কুমার
দিলীপ কুমারের সঙ্গে বিচ্ছেদের কিছুদিন পরই কিশোর কুমারকে বিয়ে করেন অভিনেত্রী মধুবালা। তবে তখন তিনি ছিলেন অসুস্থ। কিশোর কুমার জানিয়েছিলেন, ভালোবাসা থেকে নয়, বরং কথা রাখতেই তিনি এ বিয়ে করেছিলেন।
মধুবালা ও দিলীপ কুমারের প্রেম নিয়ে একসময় মুখর ছিল মুম্বাই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি। কিন্তু অভিনেত্রীর বাবার বাধার কারণে সে সম্পর্কে ফাটল ধরে এবং দুজনের বিচ্ছেদ ঘটে। কিছুদিন পরেই কিশোর কুমারকে বিয়ে করেন মধুবালা। তাঁদের এই বিয়ে অনেককে চমকে দিয়েছিল। কারণ, তাঁদের প্রেমের কথা তখনো গোপন ছিল। তবে মধুবালার শরীর তখন ভালো যাচ্ছিল না। বলা হয়, দীর্ঘ রোগভোগের সময় কিশোর কুমার তাঁকে মায়ের বাড়িতে রেখেই চলে যান।
দ্য ইলাস্ট্রেটেড উইকলি অব ইন্ডিয়াকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কিশোর কুমার বলেছিলেন, ‘বিয়ের আগেই জানতাম, ও খুব অসুস্থ। কিন্তু কথা তো দিয়েছিলাম। তাই সে কথা রেখেই ওকে ঘরে এনেছিলাম স্ত্রী হিসেবে। জানতাম, ওর জন্মগত হৃদ্রোগ আছে। তবু ৯ বছর ধরে সেবা করেছি। চোখের সামনেই ওকে মরতে দেখেছি। কেউ বুঝবে না এর যন্ত্রণা, না ভুগলে। ও অসম্ভব সুন্দরী ছিল। আর কত যন্ত্রণায় মারা গেছে, সেটা চোখে না দেখলে বিশ্বাস হবে না। হতাশায় চিৎকার করত, কান্নাকাটি করত। এত প্রাণোচ্ছল মানুষ নয়টা বছর বিছানায় শুয়ে থাকবে—এ কল্পনাই করা যায় না। ডাক্তার বলেছিল, ওকে হাসিখুশি রাখতে হবে। আমি তা–ই করেছি—ওর শেষনিশ্বাস পর্যন্ত। কখনো হেসেছি, কখনো কেঁদেছি ওর সঙ্গে।’
তবে কিশোর কুমারের এই বক্তব্য নিয়ে সংশয় তৈরি হয়। কারণ, পরে ফিল্মফেয়ার সাময়িকীতে দেওয়া সাক্ষাৎকারে একেবারে ভিন্ন কথা বলেন তিনি। সেই সাক্ষাৎকারে কিশোর কুমার বলেন, ‘মধুবালার সঙ্গে আমি প্রেমে পড়িনি কখনো। বরং ওর প্রেমিক ছিল আমার বন্ধু দিলীপ কুমার। আমি তো শুধু ওদের বার্তা পৌঁছে দিতাম। বিয়ের প্রস্তাবটা দিয়েছিল মধুবালাই। এমনকি, যখন আমার প্রথম স্ত্রী রুমা তখনো আমার সঙ্গে ছিল, তখনো মধু বলত, “ওকে কখনো ছেড়ো না, না হলে আমি তোমার হয়ে যাব।”’
আরও পড়ুনকিশোর কুমার কি সত্যিই ঘরে কঙ্কাল আর মাথার খুলি নিয়ে ঘুমাতেন২৭ মে ২০২৫মধুবালার পরিবারের ভাষ্য অনুযায়ী, চিকিৎসকেরা তখন বলেছিলেন, অভিনেত্রীর পক্ষে শারীরিক সম্পর্ক কিংবা সন্তানধারণ কোনো কিছুই সম্ভব নয়। সেই বাস্তবতা হয়তো প্রভাব ফেলেছিল কিশোরের সিদ্ধান্তে। এক ঘনিষ্ঠজন বলেন, ‘আমরা বলছি না কিশোরদা ভুল করেছিলেন। ডাক্তার তো স্পষ্ট বলেছিল—শারীরিক সম্পর্ক বা সন্তান কোনোটাই সম্ভব নয়। তবে একজন নারীর তো মানসিক সঙ্গীও দরকার হয়।’
ওই ঘনিষ্ঠজন আরও জানান, কিশোর কুমার তিন মাসে একবার আসতেন মাত্র। বলতেন, ‘আমি এলে তুমি কাঁদবে, আর এতে তোমার হৃদ্যন্ত্রের ক্ষতি হবে। তুমি বিষণ্ন হয়ে পড়বে।’ সে সময় মধু অনেক ছোট ছিলেন, ঈর্ষাও ছিল স্বাভাবিক। হয়তো এ দূরত্বই ধীরে ধীরে তাঁকে শেষ করে দিয়েছিল।
১৯৬৯ সালে মাত্র ৩৬ বছর বয়সে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান বলিউড অভিনেত্রী মধুবালা