বিদেশে বাংলাদেশিদের ক্রেডিট কার্ডে খরচ কমেছে
Published: 17th, April 2025 GMT
বিদেশে বাংলাদেশিদের ক্রেডিট কার্ডে খরচ কমেছে। একসময় পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে ক্রেডিট কার্ডে বেশি খরচ করতেন বাংলাদেশিরা। এ বছর বাংলাদেশিদের ক্রেডিট কার্ডে খরচের দিক দিয়ে শীর্ষ পাঁচ দেশের মধ্যে নেই ভারত। এবার যুক্তরাষ্ট্রের পর থাইল্যান্ডে ক্রেডিট কার্ডে বেশি খরচ করেছেন বাংলাদেশিরা। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে দেশের বাইরে গিয়ে বাংলাদেশিরা ক্রেডিট কার্ডে বিভিন্ন সেবা ও পণ্য কিনে ৩৮৩ কোটি ৮০ লাখ টাকা খরচ করেছেন। তা জানুয়ারি মাসের চেয়ে ৬১ কোটি ৮০ লাখ টাকা কম। জানুয়ারি মাসে বিদেশে ক্রেডিট কার্ডে ৪৪৫ কোটি ৬০ লাখ টাকা খরচ করেছিলেন বাংলাদেশিরা।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, বেশ কয়েকটি দেশে বাংলাদেশিরা ক্রেডিট কার্ডে বেশি খরচ করেন। এর মধ্যে ফেব্রুয়ারি মাসে শীর্ষে আছে যুক্তরাষ্ট্র, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া ও যুক্তরাজ্য। বিদেশে বাংলাদেশিদের ক্রেডিট কার্ডে খরচের ৫০ শতাংশের বেশি এই পাঁচ দেশে হয়েছে। তবে, জানুয়ারির তুলনায় ফ্রেব্রুয়ারি মাসে যুক্তরাষ্ট্র, থাইল্যান্ডসহ সব দেশেই বাংলাদেশিরা খরচ কমিয়েছেন।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, একসময় বাংলাদেশিরা পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে বেশি খরচ করতেন। কারণ, অনেক বাংলাদেশি প্রতি মাসে ভারতে ভ্রমণ ও চিকিৎসার জন্য যেতেন। সাম্প্রতিক সময়ে দেশটিতে বাংলাদেশিদের ভ্রমণ উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। এ কারণে বাংলাদেশিদের ক্রেডিট কার্ডের খরচ ভারতে কমেছে। অন্যদিকে, থাইল্যান্ড ও সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশিদের ভ্রমণ বেড়েছে। সে হিসেবে দেশগুলোতে ক্রেডিট কার্ডে খরচও ভারতের চেয়ে বেড়েছে।
পর্যালোচনায় দেখা গেছে, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে যুক্তরাষ্ট্রে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে বাংলাদেশিরা ৫২ কোটি ৩০ লাখ টাকা খরচ করেছেন, যা মোট খরচের ১৩ দশমিক ৬২ শতাংশ, যা জানুয়ারিতে ছিল ৬৮ কোটি ৮০ লাখ টাকা। একইভাবে ফেব্রুয়ারিতে থাইল্যান্ডে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে বাংলাদেশিরা ৪৬ কোটি ৮০ লাখ টাকা খরচ করেছেন, জানুয়ারিতে খরচ ছিল ৬৮ কোটি ১০ লাখ টাকা। বাংলাদেশিরা ফেব্রুয়ারিতে সিঙ্গাপুরে গিয়ে খরচ করেছেন ৩৯ কোটি ৫০ লাখ টাকা। ফেব্রুয়ারিতে মালয়েশিয়ায় ৩০ কোটি ৪০ লাখ টাকা এবং যুক্তরাজ্যে ৩০ কেটি টাকা কার্ডে খরচ করেছেন বাংলাদেশিরা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এক জন বাংলাদেশি বিদেশে গিয়ে প্রতি বছর ১২ হাজার ডলারের সমপরিমাণ অর্থ খরচ করতে পারেন। এই অর্থ ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে খরচ করতে পারেন, আবার বিদেশে যাওয়ার সময় নগদ ডলারও সঙ্গে করে নিয়ে যেতে পারেন। কার্ডের মাধ্যমে ডলার পেমেন্ট করতে গেলে একবারে সর্বোচ্চ ৩০০ ডলার পর্যন্ত খরচ করার সুযোগ আছে।
ঢাকা/এনএফ/রফিক
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ৮০ ল খ ট ক খরচ করত
এছাড়াও পড়ুন:
ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা কমাতে গুরুত্ব আরোপ
কাশ্মীরের পেহেলগামে হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা কার্যত সামরিক সংঘাতে রূপ নেওয়ার আশঙ্কা ক্রমেই বাড়ছে। এ পরস্থিতিতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে ফোন করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। বুধবার দুজনকে করা এ ফোন কলে তিনি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সৃষ্টি হওয়া উত্তেজনা কমানোর ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। এছাড়া দুই
ফোনালাপের বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে দেওয়া পৃথক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে ফোনে কথা বলার সময় মার্কো রুবিও বলেন, তিনি পেহেলগাম হামলায় নিহতদের জন্য দুঃখ প্রকাশ করছেন এবং যুক্তরাষ্ট্র সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের সঙ্গে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
তবে তিনি আরও বলেন, ভারত যেন পাকিস্তানকে অভিযুক্ত করার আগে সতর্ক থাকে, কারণ এখনও পর্যন্ত ভারত এই হামলায় পাকিস্তানের সম্পৃক্ততার কোনও প্রমাণ প্রকাশ করেনি।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস এক বিবৃতিতে বলেছেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় প্রাণহানির জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের সঙ্গে সহযোগিতার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি দক্ষিণ এশিয়ায় উত্তেজনা কমাতে এবং শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে ভারতকে পাকিস্তানের সঙ্গে কাজ করার জন্য বলেছেন।
পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস বলেন, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের সঙ্গে ফোনালাপে রুবিও- ২২ এপ্রিল ভারত-শাসিত কাশ্মীরের পর্যটন কেন্দ্র পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা করার প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন।
তিনি এক বিবৃতিতে বলেছেন, রুবিও এই অযৌক্তিক হামলার তদন্তে পাকিস্তানি কর্মকর্তাদের সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন।
জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ বলেন, ভারতের উস্কানিমূলক আচরণ শুধু উত্তেজনাই বাড়াচ্ছে এবং পাকিস্তানের সন্ত্রাসবিরোধী প্রচেষ্টাকে বিভ্রান্ত করছে। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানান, যেন তারা ভারতের ওপর দায়িত্বশীল আচরণ ও ভাষার ব্যবহার নিশ্চিত করতে চাপ প্রয়োগ করে।
এর আগে গত ২২ এপ্রিল মঙ্গলবার বিকেলে কাশ্মীরের পেহেলগাম জেলার বৈসরণ তৃণভূমিতে বন্দুকধারীদের হামলায় অন্তত ২৬ জন নিহত হন, যাদের প্রায় সবাই পর্যটক। হামলার দায় স্বীকার করে রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট নামে একটি সংগঠন। এটিকে পাকিস্তানভিত্তিক লস্কর-ই-তৈয়্যেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বলে মনে করা হয়।
এ ঘটনায় আরও বেশ কয়েকজনকে আহত হন। যাদের গুলি করে হত্যা করা হয়েছে, তারা সবাই পুরুষ। বস্তুত, ২২ এপ্রিলের হামলা ছিল ২০১৯ সালের পুলোয়ামা হামলার পর জম্মু ও কাশ্মীরে সবচেয়ে বড় প্রাণঘাতী হামলা। বর্তমানে এ ঘটনায় দুই দেশের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
পেহেলগামের ভয়াবহ ওই হামলার জেরে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে। দুই দেশের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত করেছে ভারত। জবাবে সিমলা চুক্তি স্থগিত ও ভারতীয় বিমানের জন্য নিজেদের আকাশসীমা বন্ধের ঘোষণা দেয় পাকিস্তান।
তাছাড়া, হামলার পরে দুই দেশই ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিবেশী দেশের নাগরিকদের ভিসা বাতিল করে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। সূত্র-এএফপি