সন্তানের বিশাল ‘বাহিনী’ বানাতে চান ইলন মাস্ক, জাপানি নারীর কাছেও পাঠিয়েছেন শুক্রাণু
Published: 17th, April 2025 GMT
অনেক সন্তান জন্ম দিয়ে একটি বিশাল ‘বাহিনী’ গড়তে চান ইলন মাস্ক। সে লক্ষ্যে তিনি সক্রিয়ভাবে কাজ করছেন। এমনকি তাঁর মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স ব্যবহার করে সম্ভাব্য মায়েদের খুঁজছেন এবং প্রক্রিয়া দ্রুত করতে অন্য নারীর ‘গর্ভভাড়া’ (সারোগেট) ব্যবস্থার প্রস্তাব দিচ্ছেন। ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের এক প্রতিবেদনে এমনটা বলা হয়েছে।
মাস্কের এই উদ্যোগকে ‘হারেম নাটক’ বলে উল্লেখ করেছেন এক নারী। তিনি অভিযোগ করেছেন, মাস্ক অর্থনৈতিক সুবিধা ও কঠোর গোপনীয়তা চুক্তির মাধ্যমে তাঁর সন্তানের জন্মদাতা মায়েদের দেখভাল করেন।
২৬ বছর বয়সী রক্ষণশীল ইনফ্লুয়েন্সার অ্যাশলি সেন্ট ক্লেয়ার গত বছরের সেপ্টেম্বরে মাস্কের ১৩তম সন্তানের জন্ম দেন। অ্যাশলি বলেন, তিনি মাস্কের কাছ থেকে বহু বার্তা পেয়েছেন। সেখানে তিনি বড়সড় একটি পরিবার গড়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।
এক বার্তায় মাস্ক ইনফ্লুয়েন্সার অ্যাশলিকে প্রস্তাব দেন, ‘আমি আবারও তোমাকে গর্ভবতী করতে চাই।’ সারোগেশন ব্যবস্থার প্রস্তাব দিয়ে মহাবিপর্যয়ের আগেই বিপুলসংখ্যক সন্তান জন্ম দেওয়ার লক্ষ্য পূরণ করতে চান বলে তাঁকে জানান মাস্ক।
টেসলার সিইও ইলন মাস্ক এখন পর্যন্ত চার পরিচিত নারীর মাধ্যমে অন্তত ১৪ সন্তানের জনক হয়েছেন। এসব নারী হলেন সেন্ট ক্লেয়ার, গায়িকা গ্রাইমস, নিউরালিংক নির্বাহী শিভন জিলিস ও সাবেক স্ত্রী জাস্টিন মাস্ক।
মাস্কের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্রের বিশ্বাস, এই সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে। ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, মাস্ক জাপানি কর্মকর্তাদের অনুরোধে একজন উচ্চপর্যায়ের জাপানি নারীকেও শুক্রাণু সরবরাহ করেছিলেন।
মাস্কের চার সন্তানের মা শিভন জিলিস। তাঁকে মায়েদের মধ্যে ‘বিশেষ মর্যাদা’সম্পন্ন বলে বর্ণনা করা হয়েছে। মাস্কের সঙ্গে উচ্চপর্যায়ের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জিলিস। যেমন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠক এবং বিশ্বনেতা ও প্রযুক্তি ব্যবসায়ীদের উপস্থিতিতে এক অভিষেকপূর্ব নৈশভোজে তাঁকে দেখা যায়।
সেন্ট ক্লেয়ার বলেন, তাঁকে প্রথমে দেড় কোটি ডলার এবং মাসে এক লাখ ডলার দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। তবে শর্ত ছিল, সন্তানের জন্মসনদে মাস্কের নাম লেখা যাবে না এবং পিতৃত্ব গোপন রাখতে হবে। সন্তান প্রসবের সময় মাস্কের ঘনিষ্ঠ সহকারী জ্যারেড বারচালের মাধ্যমে তিনি এই প্রস্তাব পান।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের অনুসন্ধানে জানা গেছে, এই প্রস্তাবে রাজি হননি সেন্ট ক্লেয়ার। তবুও সরকারি নথিতে তিনি মাস্কের নাম দেননি। গত ফেব্রুয়ারিতে তিনি মাস্ক ও তাঁর সম্পর্কের বিষয়টি প্রকাশ্যে আনলে মাসিক সহায়তা কমে দাঁড়ায় ৪০ হাজার ডলারে। পরে তা আরও কমিয়ে ২০ হাজার ডলার করে দেওয়া হয়।
ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ক্রিপ্টো ইনফ্লুয়েন্সার টিফানি ফংসহ মাস্ক আরও কয়েকজন নারীকে সন্তান নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন। ফং মাস্কের পাঠানো বার্তাগুলো প্রকাশ্যে আনলে মাস্ক তাঁকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আনফলো করে দেন।
সেন্ট ক্লেয়ারসহ বেশ কয়েকজন নারী দাবি করেছেন, মাস্কের দল অর্থ এবং কঠোর গোপনতা চুক্তির মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখেন। তাঁর সহযোগী জ্যারেড বিরচাল এ বিষয়গুলোর দেখভাল করেন।
মাস্কের বহু সন্তান নেওয়ার আকাঙ্ক্ষা আসে তাঁর এই বিশ্বাস থেকে যে, বিশ্বে জন্মহার কমে যাওয়া মানবজাতিকে ঝুঁকিতে ফেলতে পারে। তিনি প্রায়ই বলেন, ‘জনসংখ্যা বৃদ্ধি না হলে সভ্যতা ধ্বংস হয়ে যাবে।’ তাঁর বিশ্বাস, ভবিষ্যৎ মানবসভ্যতাকে রক্ষায় বুদ্ধিমান মানুষদের আরও সন্তান নেওয়া উচিত।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র প রস ত ব দ কর ছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
ইসরায়েলে নতুন করে শুরু ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, ইরান থেকে নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু হয়েছে। একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত করেছে ইসরায়েল। বর্তমানে হামলা প্রতিহত করার কাজ চলছে বলে জানিয়েছে আইডিএফ।
আজ সোমবার সিএনএনের এক খবরে বলা হয়েছে, তেল আবিব ও জেরুজালেমসহ ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরে জরুরি সতর্ক সংকেত (সাইরেন) বাজতে শুরু করেছে। আইডিএফ সতর্ক করে বলেছে, তাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পুরোপুরি অভেদ্য নয়।
সিএনএনের একজন প্রযোজক জেরুজালেমে সাইরেন এবং একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন। তার তোলা ভিডিওতে আকাশে বহু ক্ষেপণাস্ত্র ছুটে যেতে দেখা গেছে।
ইসরায়েলের জরুরি পরিষেবা সংস্থা ম্যাগেন ডেভিড আদোম জানিয়েছে, তাদের দলগুলো আক্রান্ত এলাকার দিকে রওনা দিয়েছে।
সারা দেশের নাগরিকদের আশ্রয়কেন্দ্রে ঢুকতে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সেখানে থাকার আহ্বান জানিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এক্সে দেওয়া এক পোস্টে বলেছে, বর্তমানে বিমানবাহিনী হামলা প্রতিহত করার পাশাপাশি পাল্টা হামলা চালানোর কাজ করছে।
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ওয়াইনেট নিউজ জানিয়েছে, মধ্য ইসরায়েলের পেতাহ টিকভা শহরের একটি ভবনে একটি ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি আঘাত হেনেছে। হামলার ফলে ওই স্থানে আগুন ধরে যায়। তবে এ ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
এদিকে মধ্য ইরানে একাধিক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। দেশটির সেনাবাহিনী এ তথ্য জানিয়েছে। আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেনাবাহিনীর দাবি, বিভিন্ন ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপনা লক্ষ্য করে এসব হামলা চালানো হয়েছে।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ইসরায়েলি বিমানবাহিনী সফলভাবে মধ্য ইরানে অবস্থিত একাধিক স্থাপনায় আঘাত হেনেছে। আমাদের গোয়েন্দা তথ্য বলছে, এসব স্থাপনা থেকে ইসরায়েলের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হচ্ছিল।’
তবে ইসরায়েলের এই হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইরান এখনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি।
এদিকে ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি বিমান হামলায় রোববার পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২২৪ জনে পৌঁছেছে।
বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে ৯০ শতাংশেরও বেশি বেসামরিক নাগরিক। হামলায় ১ হাজার ২৭০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।
এপির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গত ১৩ জুন ইরানে বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ওই হামলায় ইরানের নাতাঞ্জ ও ইসফাহান অঞ্চলের পারমাণবিক স্থাপনা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা ও পারমাণবিক বিজ্ঞানী নিহত হন। ইরানে বর্তমানে মসজিদ ও মেট্রো স্টেশনগুলোকে অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।