দিনাজপুরে সদ্য শেষ হওয়া আমন মৌসুমে সরকারি খাদ্যগুদামে চাল সরবরাহে চুক্তিবদ্ধ না হওয়ায় ৩১৬টি মিলের নিবন্ধন বাতিল করা হয়েছে। জেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রক সুবীর নাথ চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে গত মঙ্গলবার এ তথ্য জানানো হয়েছে। তবে কয়েকজন মিলমালিক বলছেন, মৌসুমের শুরু থেকে বাজারে ধান-চালের দাম বেশি থাকায় লোকসানের ভয়ে সরকারের সঙ্গে চাল সরবরাহে চুক্তি করেননি অনেকেই।

জেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রক কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, আপত্কালীন মজুত গড়তে গত বছরের ১৭ নভেম্বর শুরু হয় আমন সংগ্রহ অভিযান। সেদ্ধ চাল ও ধান সংগ্রহের সময়সীমা ছিল গত ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এবং আতপ চাল সংগ্রহের সময় ধরা হয়েছিল ১৫ মার্চ পর্যন্ত। যেখানে ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ১৭ হাজার ৭৯১ মেট্রিক টন। আর সেদ্ধ চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫২ হাজার ৮৭২ দশমিক ৮১০ মেট্রিক টন এবং আতপ চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৩ হাজার ৮০৫ দশমিক ৯৪০ মেট্রিক টন। মৌসুমে ধান-চাল সরবরাহে চুক্তিবদ্ধ হয়েছিল ৯১১টি সেদ্ধ চালকল এবং ৮৩টি আতপ চালকল। মৌসুম শেষে এসব চুক্তিবদ্ধ মিল থেকে সংগ্রহ সম্পন্ন হয়েছে ৪৮ হাজার ৭২৪ দশমিক ০৪০ মেট্রিক টন; যা লক্ষ্যমাত্রার ৯৮ শতাংশ। আতপ চাল সংগ্রহ হয়েছে ১১ হাজার ৩০৬ দশমিক ৪৬০ মেট্রিক টন; যা লক্ষ্যমাত্রার ৯৬ শতাংশ এবং ধান সংগ্রহ হয়েছে ২ হাজার ২৫৮ মেট্রিক টন; যা লক্ষ্যমাত্রার ১৩ শতাংশ।

কয়েকজন মিলমালিক বলেন, বাজারে ধানের দাম বেশি ছিল। অন্যদিকে চাল উৎপাদনেও খরচ বেশি পড়েছে। কয়েক বছর থেকে মিলাররা লোকসান দিয়ে চাল সরবরাহ করে আসছেন। সরকার যে দর দিয়েছে, তাতে প্রতি কেজিতে তাঁদের লোকসান গুনতে হয় ৫ থেকে ৬ টাকা। লোকসান গুনতে গুনতে অনেক মিলমালিকেরই পথে বসার উপক্রম হয়েছে।

মিলমালিকের নিবন্ধন বাতিলের বিষয়ে বাংলাদেশ মেজর ও অটো মেজর হাসকিং মিল মালিক সমিতির সহসভাপতি সহিদুর রহমান পাটোয়ারী বলেন, ধান এবং চালের দর নির্ধারণের ক্ষেত্রে সরকারের অসামঞ্জস্যতা রয়েছে। মিলমালিকেরা তো লোকসান গুনেই আসছেন। সরকারের উচিত ধান-চালের দামে সামঞ্জস্য রেখে সরবরাহের ক্ষেত্রে কৃষক ও সব মিলমালিককে বাধ্য করা। নিবন্ধন বাতিল করে যদি পরবর্তী সময়ে আবার বিদ্যুতের সংযোগ বিচ্ছিন্নসহ নানা হয়রানি করা হয়, সেটি সমীচীন হবে না।

জেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রক সুবীর নাথ চৌধুরী বলেন, জেলায় চুক্তিযোগ্য সেদ্ধ চালকলের সংখ্যা ১ হাজার ২১০ এবং আতপ চালকল মিলের সংখ্যা ১০। এবার চুক্তিকৃত সেদ্ধ চালকল মিলের সংখ্যা ৯১১ এবং আতপ চালকল ৮৩। একাধিকবার তাগাদা দিয়েও অনেকে চুক্তিবদ্ধ হননি। এসব মিলের বিরুদ্ধে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত খাদ্য বিভাগের এই সিদ্ধান্ত বলবৎ থাকবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: চ ল সরবর হ ম ট র ক টন আতপ চ ল দশম ক চ লকল সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

বিদ্যুৎ না থাকায় ডিইপিজেডে উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ

ঢাকার সাভার উপজেলার আশুলিয়ায় ঢাকা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে (ডিইপিজেড) আজ সোমবার দুপুর থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এ কারণে দুপুরের পর ডিইপিজেডের সব কারখানায় শ্রমিকদের ছুটি দেওয়া হয়েছে। ডিইপিজেডের জন্য নিরবচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড পাওয়ারের বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাস–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করায় এ সংকট তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

ডিইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক মো. শরীফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ ইউনাইটেড পাওয়ারের ডিইপিজেডে বিদ্যুৎ সরবরাহের প্রকল্পটিতে গ্যাস–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। এতে তারা উৎপাদন করতে না পারায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারছে না। ফলে ডিইপিজেডে প্রায় ৯০টি কারখানার এক লাখের মতো শ্রমিককে ছুটি দেওয়া হয়।

বিদ্যুতের সংযোগ না থাকায় বড় ধরনের বিপর্যয়ের মুখে পড়তে হয়েছে উল্লেখ করে মো. শরীফুল ইসলাম বলেন, মঙ্গলবার যদি এটি অব্যাহত থাকে, তবে সংকট আরও বাড়বে। শ্রমিকেরা কাজ না করতে পেরে বিক্ষুব্ধ হলে বিষয়টি আরও জটিল হয়ে উঠবে। কোনো ধরনের নোটিশ ছাড়া এ ধরনের ঘটনায় বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

ডিইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘তিতাস বলছে, ইউনাইটেড পাওয়ারের কাছে বিল বকেয়া রয়েছে। তারা বকেয়া পরিশোধ করেনি। এ ব্যাপারে আদালতে দীর্ঘদিন ধরে মামলা চলছে। কিন্তু আমাদের কথা হচ্ছে, বেপজাকে কোনো ধরনের পূর্ব নোটিশ না দিয়ে হঠাৎ করে এ ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছেন। এ ধরনের পদক্ষেপের আগে ডিইপিজেডের গুরুত্ব বিবেচনা করে আলোচনার মধ্য দিয়ে বিষয়টির সমাধান করা উচিত ছিল।’

এ বিষয়ে ইউনাইটেড পাওয়ার প্ল্যান্টের ব্যবস্থাপক মো. মমতাজ হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘গ্যাসের কোনো প্রেশার নেই। প্রেশার শূন্য। কিন্তু কেন তিতাস কর্তৃপক্ষ এমনটি করল, সে ব্যাপারে এখানকার (আশুলিয়া অঞ্চলের) তিতাসের লোকজন কিছু বলতে পারেননি। আমরা নিজেরাও বিষয়টি নিয়ে জানি না। এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘আমার জানামতে, বকেয়া নিয়ে কোনো ধরনের মামলা নেই। তিতাস কেন গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দিল, সেটি জানা নেই।’

জানতে চাইলে তিতাসের আশুলিয়া আঞ্চলিক কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী আবু ছালেহ মুহাম্মদ খাদেমুদ্দীন প্রথম আলোকে বলেন, গ্যাসের বিল বকেয়া থাকায় গ্যাস–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। এটি সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলের সিদ্ধান্ত। দুপুরের দিকে গ্যাস–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আদানির সঙ্গে চুক্তি ক‌রে শুল্ক ফাঁকি
  • শিল্প খাতের উৎপাদন যেন ব্যাহত না হয়
  • কারাগারে গাঁজা সরবরাহ করতে গিয়ে নিজেই কারাগারে
  • ‘মানবিক করিডোর’ নিয়ে বৈশ্বিক অভিজ্ঞতা কী
  • ডিইপিজেডে বিদ্যুৎ নেই, ৯০ কারখানায় ছুটি
  • মঙ্গলবার ৭ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না যেসব জায়গায়
  • পাকিস্তানের সঙ্গে উত্তেজনার মধ্যে আরও ২৬টি রাফাল যুদ্ধবিমান কিনছে ভারত
  • পর্তুগাল ও স্পেনে নজিরবিহীন বিদ্যুৎ বিপর্যয়, পর্যুদস্তু জনজীবন
  • হাসপাতালে ডায়রিয়ার প্রকোপ শয্যা ও স্যালাইন সংকট
  • বিদ্যুৎ না থাকায় ডিইপিজেডে উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ