নাসার লুসি মহাকাশযান বৃহস্পতি গ্রহের কাছাকাছি অচিহ্নিত গ্রহাণুদের ঝাঁকের দিকে যাত্রা করছে। যাত্রার সময় এই সপ্তাহে একটি ছোট গ্রহাণুর খুব কাছাকাছি দিয়ে উড়ে যাবে যানটি। ১১টি মহাজাগতিক পাথর পরিদর্শনের লক্ষ্যে ২০২১ সালে যাত্রা করে লুসি। এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো কোনো গ্রহাণুর কাছাকাছি যাচ্ছে লুসি। গ্রহাণুর কাছ থেকে যাওয়ার সময় বিজ্ঞানীরা প্রাথমিক সৌরজগৎকে জানতে গ্রহাণুর তথ্য সংগ্রহ করবেন। এসব গ্রহাণু সুদূর অতীতে সৌরজগতের বিভিন্ন গ্রহের অংশ ছিল বলে মনে করা হয়।

২০২৭ সালে লুসি বৃহস্পতি গ্রহের কাছে ট্রোজান গ্রহাণুর এলাকায় পৌঁছাবে। মহাকাশযানটি এবারের গ্রহাণু দর্শনে তিনটি সরঞ্জামের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করবে। ডোনাল্ড জোয়ানসন নামের গ্রহাণু থেকে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করতে আগ্রহী বিজ্ঞানীরা। লুসির সঙ্গে গ্রহাণুর দেখা–সাক্ষাৎ পৃথিবী থেকে ১৩ কোটি ৯০ লাখ মাইল দূরে মঙ্গল ও বৃহস্পতির মধ্যবর্তী প্রধান গ্রহাণু বেল্টে ঘটবে।

গ্রহাণুটির ৫৯৬ মাইল কাছে যাবে যানটি। গ্রহাণুটি দৈর্ঘ্যে প্রায় আট কিলোমিটারের মতো। যদিও প্রস্থে অনেক ছোট বলে অনুমান করা হচ্ছে। মহাকাশযানটি ঘণ্টায় ৩০ হাজার মাইলের বেশি গতিতে ছুটে যাচ্ছে।

গ্রহাণুটি ১৫ কোটি বছর আগে একটি বড় সংঘর্ষের ফলে সৃষ্ট অগণিত খণ্ডের মধ্যে একটি বলে মনে করা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের সাউথওয়েস্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের প্রধান বিজ্ঞানী হল লেভিসন বলেন, এই গ্রহাণু দেখতে সাধারণ কোনো আলুর মতো নয়। গ্রহাণুটি লম্বাটে হতে পারে।

গ্রহাণুর সঙ্গে লুসির সাক্ষাতের সময় লুসির সঙ্গে পৃথিবীর কোনো যোগাযোগ থাকবে না। গ্রহাণুটি ট্র্যাক করার জন্য মহাকাশযানটি তার অ্যানটেনা পৃথিবী থেকে দূরে সরিয়ে নেবে তখন। বিজ্ঞানীরা আশা করছেন, গ্রহাণুর সঙ্গে দেখা হওয়ার এক দিনের মধ্যে বেশির ভাগ বৈজ্ঞানিক ডেটা পাওয়া যাবে।

লুসির পরবর্তী গন্তব্য ট্রোজান গ্রহাণু। সূর্যের চারপাশে বৃহস্পতির কক্ষপথে অবস্থান করছে। ট্রোজানদের ঝাঁক সৌরজগতের বৃহত্তম গ্রহ বৃহস্পতিকে ঘিরে রেখেছে। লুসি ২০২৭ থেকে ২০৩৩ সালের মধ্যে আটটি গ্রহাণুকে পরিদর্শন করবে।

সূত্র: ইউএসনিউজ ডটকম

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

সুদ পরিশোধে ব্যয় বাড়ছে

সুদ পরিশোধে সরকারের ব্যয় বাড়ছে। এ ব্যয় বহন করতে রীতিমত হিমশিম খেতে হচ্ছে। বাজেটে সরকারের সুদ পরিশোধ সংক্রান্ত পূর্বাভাসে দেখা যাচ্ছে, আগামী বছরগুলোতে সুদ ব্যয় ক্রমাগত বৃদ্ধি পাবে।

পরিচালন ও উন্নয়ন বাজেটের প্রায় ১৫ ভাগ অর্থই সুদ খাতে খরচ করতে হচ্ছে এখন। এ পরিস্থিতিতে আগামী তিন অর্থবছরে সুদ খাতেই ব্যয় করতে হবে চার লাখ ১০ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। পাঁচ অর্থবছরের ব্যবধানে সুদ ব্যয় বাড়ছে ৩৩ শতাংশ। এর মধ্যে শতাংশের হিসাবে বৈদেশিক ঋণের সুদ ব্যয় সবচেয়ে বেশি বাড়বে।

অর্থ বিভাগের করা ‘মধ্যমেয়াদি সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি বিবৃতি-২০২৫-২০২৬ থেকে ২০২৭-২০২৮’ এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।

পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে সুদ খাতে ব্যয় হয়েছিল এক লাখ  ১৪ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে অভ্যন্তরীণ খাতে সুদ ব্যয় ছিল ৯৯ হাজার ৬০০ কোটি টাকা এবং বিদেশি ঋণের সুদ ব্যয় গেছে ১৫ হাজার ১০০ কোটি টাকা।

চলতি ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে (যা চলতি জুনের ৩০ তারিখে শেষ হয়ে যাবে) মূল বাজেটে সুদ খাতে ব্যয় বরাদ্দ ছিল এক লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু বছর শেষে এই সীমায় সুদ ব্যয় ধরে রাখা সম্ভব হয়নি। ফলে সংশোধিত বাজেটে এ খাতে ব্যয় বাড়িয়ে ধরা হয়েছে এক লাখ ২১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এ হিসাবের মধ্যে ছিল অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ ব্যয় ৯৯ হাজার ৫০০ কোটি টাকা এবং বিদেশী ঋণের ২২ হাজার কোটি টাকা।

একইভাবে আগামী তিন অর্থবছরে সুদ খাতে ব্যয়েরও একটি প্রক্ষেপণ করেছে অর্থ বিভাগ। এই হিসেবে দেখা যায় আগামী ১ জুলাই থেকে শুরু হওয়া ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরে সুদ খাতে ব্যয় হবে এক লাখ ২২ হাজার কোটি টাকা (অভ্যন্তরীণ এক লাখ কোটি টাকা , বিদেশি ঋণের সুদ ব্যয় ২২ হাজার কোটি টাকা)। একইভাবে এর পরের অর্থবছর ২০২৬-২০২৭ অর্থবছরে একলাখ ৩৬ হাজার ২০০ কোটি টাকা(অভ্যন্তরীণ এক লাখ ১২ হাজার কোটি টাকা এবং বিদেশি ঋণের ২৪ হাজার ২০০ কোটি টাকা) এবং ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে সুদ খাতে ব্যয়ের  প্রক্ষেপণ করা হয়েছে ১ লাখ ৫২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। 

অর্থ বিভাগ থেকে বলা হয়েছে,  মোট সুদ ব্যয়ের সিংহভাগই অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ পরিশোধ। অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ পরিশোধ ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে  ৯৯ হাজার ৬০০ কোটি টাকা থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে এক লাখ ২৫ হাজার ৫০০ কোটি টাকা গিয়ে পৌঁছাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কিন্তু মোট বাজেটের অনুপাতে অভ্যন্তরীণ সুদ পরিশোধের হার ২০২৩ -২০২৪ অর্থবছরে ১৬ দশমিক ২৯ শতাংশ থেকে কমে ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে ১২ দশমিক ৭৫ শতাংশে হ্রাস পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যদিও বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধ মোট সুদ ব্যয়ের তুলনায় কম, তবে এটি উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পাবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। ফলে এটি ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে ১৫ হাজার ১০০ কোটি টাকা থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে ২৭ হাজার ১০০ কোটি টাকায় উন্নীত হতে পারে। মোট বাজেটের অনুপাতে বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধ এ সময়কালে ২ দশমিক ৪৭ শতাংশ থেকে বেড়ে ২ দশমিক ৭৬ শতাংশে উন্নীত হতে পারে।

বিদেশি ঋণের সুদ ব্যয় নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে অর্থ বিভাগ থেকে বলা হয়েছে, বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধের কার্যকর ব্যবস্থাপনা শুধু আর্থিক শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্যই নয়, বরং এটি সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ রক্ষা, টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করা, আন্তর্জাতিক ঋণমান বজায় রাখা এবং ভবিষ্যতের উন্নয়ন সম্ভাবনা সুরক্ষিত রাখার জন্য অপরিহার্য।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ: এবার কাদের বিপক্ষে, কবে খেলবে বাংলাদেশ?
  • পাঁচ বছরে বাড়বে ৬৫ শতাংশ
  • টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের নতুন চক্রে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ কারা
  • টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের নতুন আসরে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ কারা, খেলা কবে-কোথায়
  • সুদ পরিশোধে ব্যয় বাড়ছে
  • সৌরজগতের নতুন বামন গ্রহ নিয়ে এত আলোচনা কেন