রাজধানীর বনানীতে প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলামকে (২২) হত্যার ঘটনায় কাঁদছে তাঁর গ্রাম। হাসাহাসির মতো তুচ্ছ বিষয় নিয়ে ছুরিকাঘাতে জাহিদুলের মৃত্যু মানতে পারছেন না তাঁর স্বজন ও এলাকাবাসী। তাঁরা হত্যাকারীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও ফাঁসির দাবি জানিয়েছেন।

জাহিদুল ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার ৫ নম্বর বিরুনীয়া ইউনিয়নের কাইচান গ্রামের কুয়েতপ্রবাসী জসিম উদ্দিনের ছেলে। তিনি প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে দুই নারীকে নিয়ে ইঙ্গিতপূর্ণ হাসাহাসির জেরে গতকাল বিকেলে একদল যুবক তাঁকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করেন।

জাহিদুল হত্যার বিচার চেয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করেছেন তাঁর সহপাঠী ও বন্ধুরা। আজ বেলা দেড়টার দিকে ভালুকার বিরুনীয়া ইউনিয়নের বিরুনীয়া বাজারে যেতেই জাহিদুলের জানাজার সময় জানিয়ে মাইকিং শোনা যায়। বাজার থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরের কাইচান গ্রামের পাঠক বাড়িতেও মানুষ ছুটছেন সন্তানহারা বাবা-মাকে সান্ত্বনা দিতে। আজ এশার নামাজের পর তাঁর জানাজা হওয়ার কথা আছে।

আরও পড়ুনহাসাহাসিকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রকে হত্যা২০ ঘণ্টা আগে

প্রায় ৯ বছর ধরে কুয়েতে থাকেন জাহিদুলের বাবা জসিম উদ্দিন। দুই সন্তানের সুন্দর ভবিষ্যতের আশায় প্রবাসী বাবা বাড়িতে একটি একতলা নতুন বাড়িও করেছেন। বাবা প্রবাসে থাকায় নতুন বাড়িটির সব কাজ একাই করিয়েছেন জাহিদুল। গতকাল রাতে ছেলের মৃত্যুর খবর পেয়ে উড়োজাহাজে ওঠেন বাবা জসিম উদ্দিন। আজ সকাল সাতটার দিকে তিনি গ্রামের বাড়িতে এসে পৌঁছান।

জাহিদুল ইসলাম.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

প্রেমিকার বিয়ের দিনে প্রেমিকের লাশ উদ্ধার, হত্যার অভিযোগ পরিবারের

নড়াইলের লোহাগড়ায় প্রেমিকার বিয়ের দিনে প্রেমিক সৈয়দ মাসুম বিল্লাহর (২০) মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মাসুমের বাম হাতের একটি আঙুলের নখ উপড়ে ফেলার আলামত থাকায় তার পরিবার অভিযোগ করছে, এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। 

শুক্রবার (১ আগস্ট) দুপুরে কালনা মধুমতি সেতুর পশ্চিম পাশে রাস্তার ওপর মাসুমকে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে ইজিবাইকের চালক সুজন শেখ তাকে উদ্ধার করে লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। বিকেলে অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।

মাসুম বিল্লাহ লোহাগড়া উপজেলার শালনগর ইউনিয়নের মাকড়াইল গ্রামের মৃত সৈয়দ রকিবুল ইসলামের ছেলে। 

আরো পড়ুন:

জুলাই হত্যাকাণ্ডের মামলায় চট্টগ্রামে প্রথম অভিযোগপত্র দাখিল

সিলেটে স্কুলছাত্র সুমেল হত্যা: ৮ জনের মৃত্যুদণ্ড, ৭ জনের যাবজ্জীবন

মাসুমের স্বজনরা জানিয়েছেন, শালনগর ইউনিয়নের এক কিশোরীর সঙ্গে মাসুমের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। মেয়েটির বিয়ের খবর পেয়ে শুক্রবার (১ আগস্ট) সকালে তিনি ঢাকা থেকে লোহাগড়ায় আসেন। সকালে পরিবারের সঙ্গে তার শেষবার কথা হয়, এরপর থেকে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল।

মাসুম বিল্লাহর চাচা শরিফুল ইসলাম বলেছেন, “আমরা শুনেছি, সকালে লোহাগড়া বাজারের একটি পার্লারে মেয়েটির সঙ্গে মাসুমের কথা হয়। এর পর মেয়েটির বাবার কাছ থেকে হুমকি পায় সে। পরে হাসপাতাল থেকে ফোন পেয়ে মাসুমের মৃত্যুর খবর জানি। তার বাম হাতের  নখ উপড়ানো ছিল। সব মিলিয়ে মনে হচ্ছে, তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।”

মাসুমকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া ইজিবাইক চালক সুজন বলেছেন, “ঘটনাস্থলে কোনো দুর্ঘটনার চিহ্ন ছিল না। তবে মনে হয়েছে, কেউ মাসুমকে গাড়ি থেকে ফেলে দিয়েছে।”

লোহাগড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শরিফুল ইসলাম শনিবার (২ আগস্ট) সকালে সাংবাদিকদের বলেছেন, “আমরা মাসুম বিল্লাহকে মৃত অবস্থায় লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে থানায় নিয়ে আসি। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নড়াইল আধুনিক সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে।” 

ঢাকা/শরিফুল/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ