ষাটের দশকে এখনকার মতো ঘরে ঘরে ফ্রিজ, প্রেসার কুকার, ওভেন, ব্লেন্ডার ছিল না। রান্না ঘরের প্রয়োজনীয় তৈজস থেকে শুরু করে রান্নার উপকরণগুলোও ছিল সীমিত ও ধীরগতির। ব্যক্তি, পরিবার ভেদে আলাদা আলাদা আভিাজাত্য ছিল খাবার পরিবেশনায়। ষাটের দশকের রান্না নিয়ে পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স প্রকাশ করেছে আনোয়ারা তরফদারের বই ‘খাদ্যবিলাস’। 

বইটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল ১৯৮৯ সালে, শিল্পতরু প্রকাশনী থেকে। এই নিয়ে আনোয়ারা তরফদারের মেয়ে ও কবি শামীম  আজাদ তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেছেন, ‘‘১৯৮৯ সালে আমার বন্ধু কবি আবিদ আজাদ তার শিল্পতরু প্রকাশনী থেকে অতি যত্নে আম্মার এ বইটি প্রকাশ করেছিলেন। আজ তিন দশক পরে পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স এর চেয়ারম্যান কামরুল হাসান শায়কের আগ্রহে এর দ্বিতীয় সংস্করণ বের হল। সে জন্য তাঁকে ও পাঞ্জেরী প্রকাশণাকে ধন্যবাদ। কে জানে হয়তো এ কারনেই আরো কিছুদিন আনোয়ারা তরফদারের রান্নার লেগেসি রয়ে যাবে। আর নিশ্চিত রয়ে যাবে তরফদার পরিবারের বর্তমান প্রজন্ম, তারই পৌত্র লাবিব তরফদারের রেসিপিতে।’’


শামীম আজাদের ওই পোস্টে উল্লেখ করেছেন, মায়ের হাতের শুকনো মরিচ ও রসুনে ফোঁড়ন দেওয়া কচি লালশাক, সরিষা বাটা ও পটলের খোসা ভর্তার লাড্ডু, কড়কড়ে ভাজা ডিমভরা ইলিশ, পাঁচ ফোড়ন দেওয়া ঘন জলপাই ও ডালের কথা। 

আরো পড়ুন:

যে রং দেখা যায় না

ওজন কমাতে ‘ডাবল কার্বিং’ এড়িয়ে যাওয়া কেন জরুরি

তিনি লিখেছেন, ‘‘আমার মা কোন কিছুরই খোসা না ফেলে তা দিয়ে হয় ভর্তা, নয় স্টক করতেন। সে স্টক দিয়ে স্যুপ বা কারি রান্নার সময় গরম জলের বিকল্প করতেন। গ্রামে গেলে হাঁটতে হাঁটতেই ঝোপঝাড় থেকে তুলে নিতেন বতুয়া, থানকুনি, বুনো কচু, শেয়ালমূর্তি শাক। অমৃত রান্না হত সেসব দিয়ে।…কি খাইনি! শাপলার নরম ডাঁটা দিয়ে ইলিশের মাথা ভেঙে রেঁধে নামাবার আগেই আম্মা দিতেন তাজা ধনেপাতা।’’

বইটি নিয়ে অর্থনীতিবিদ সেলিম জাহান বলেন, ‘‘ খাদ্যবিলাস শুধু রন্ধন প্রক্রিয়ার একটি গ্রন্থ নয়, এটি নিছক ঘরকন্যা ভাষ্যও নয়, এটি একটি সময়ের সমাজচিত্রও বটে। একটি সময়ের মধ্যবিত্ত সংসারের খাদ্যসংস্কৃতি এ বইটিতে প্রতিফলিত।’’

উল্লেখ্য, আনোয়ারা তরফদার জন্ম গত শতকের ত্রিশের দশকে বৃহত্তর সিলেটে জন্ম গ্রহণ করেন। স্বামী ছিলেন সরকারি কর্মকর্তা। স্বামীর চাকরিসূত্রে তিনি অবিভক্ত ভারতের আসাম ও পরে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের বিভিন্ন স্থানে থেকেছেন। বাঙালির চিরায়ত রান্নায় আনোয়ারা তরফদারের ছিল বিশেষ পারদর্শিতা। 

ঢাকা/লিপি

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর তরফদ র র র দশক

এছাড়াও পড়ুন:

বাদী নাম দেননি, তবু হত্যা মামলায় আসামি দুই ইউপি চেয়ারম্যান

ছবি: সংগৃহীত

সম্পর্কিত নিবন্ধ