ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলায় ‘চোট পার্টি’র এক সদস্যকে হাতেনাতে আটকের ভিডিও ফেসবুকে পোস্ট করায় আরাফাত মোল্যা মনি (৪০) নামে এক যুবককে কুপিয়ে জখম করেছে দুর্বৃত্তরা। হামলার তিন সপ্তাহ পার হলেও থানা এখনো মামলা নেয়নি বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীর পরিবার। 

মঙ্গলবার দুপুরে ফরিদপুর শহরের আলীপুরে একটি সংবাদমাধ্যমের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানায় ভুক্তভোগীর পরিবার।

সংবাদ সম্মেলনে আরাফাতের বাবা, মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল আজিজ টুকু মোল্যা বলেন, গত ৩১ মার্চ সন্ধ্যায় বাড়ির বাইরে হাঁটতে গেলে সাখাওয়াত মোল্যা, রুবেল ও ইমরানসহ আরও কয়েকজন অতর্কিতে আরাফাতের উপর হামলা চালায়। তারা টেটা ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাকে গুরুতর জখম করে। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন।

আরাফাতের মা হোসনে আরা বলেন, হামলাকারীরা এখনও বাড়ির আশেপাশে ঘোরাফেরা করছে ও তাদের হুমকি দিচ্ছে, ফলে পরিবারটি নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে।

আরাফাত মনি অভিযোগ করে বলেন, ‘চোট পার্টি’ নামে পরিচিত একটি চক্র সহজসরল মানুষের কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে এবং মাদক কারবারেও জড়িত। ঢাকায় এদের একজনকে সৌদি দিরহামের লোভ দেখিয়ে প্রতারণার সময় হাতেনাতে ধরা হয়। সেই ভিডিও তিনি ১৮ মার্চ ফেসবুকে শেয়ার করেন। এরপরই ঈদের দিনে তার উপর হামলা হয়।

তবে ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হামলার ঘটনা ও মামলা গ্রহণে গড়িমসির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়েছে এবং অভিযোগ দিতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু পরিবার থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ দেয়নি।

তবে পরিবার দাবি করছে, তারা ওসিকে অবহিত করার পাশাপাশি পুলিশ সুপারকেও বিষয়টি জানিয়েছেন। তিনি মামলা গ্রহণের নির্দেশ দিলেও এখনও মামলা নেয়া হয়নি। এতে বিচার না পাওয়ার আশঙ্কায় রয়েছে আহত যুবকের পরিবার।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ক প য় জখম পর ব র আর ফ ত

এছাড়াও পড়ুন:

লাকসামে অস্ত্রের মুখে এতিমখানার ৫ গরু লুট, আহত ৮

কুমিল্লার লাকসামে একটি এতিমখানার খামার থেকে গত শুক্রবার পাঁচটি গরু লুট করে নিয়ে গেছে ডাকাত দল। এ সময় তাদের হামলায় মাদরাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ আটজন আহত হন। মাদরাসা কর্তৃপক্ষ থানায় মামলা করেছে।

গত শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) ভোরে উপজেলার আজগরা ইউনিয়নের বড়বাম আল-জামিয়াতুল ইসলামিয়া দারুল উলুম মাদরাসা ও এর সংলগ্ন এতিমখানার খামারে ঘটনাটি ঘটে। তিন মাস আগেও এই খামারের সাতটি গরু লুট করেছিল ডাকাতরা।

আরো পড়ুন:

খুলনায় বিএনপি নেতার অফিসে বোমা-গুলি, শিক্ষক নিহত

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রতিপক্ষের হামলা: গুলিবিদ্ধ যুবকের মৃত্যু

সোমবার (৩ নভেম্বর) সকালে ঘটনাটি জানাজানি হয়।

এলাকাবাসী জানান, মাদরাসার আয় এই খামারের মাধ্যমে হয়। তিন মাসের ব্যবধানে দুই দফা ডাকাতি হওয়ায় শিক্ষক ও ছাত্রদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। খামারের বড় গরুগুলো লুট হয়ে যাওয়ায় এক পাশ ফাঁকা পড়ে আছে। বর্তমানে খামারে ১১টি গরু অবশিষ্ট রয়েছে।

খামারের সামনে পড়ে আছে ডাকাত দলের ব্যবহৃত তুষের বস্তা, যা দিয়ে গরুগুলো পিকআপ ভ্যানে তোলে তারা। গরু উদ্ধার এবং ডাকাত দলের সদস্যদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

মামলার বাদী এবং মাদরাসার শিক্ষক ইমরান হোসাইন জানান, গত শুক্রবার ভোরে একদল ডাকাত দুটি পিকআপ ভ্যান নিয়ে এসে অস্ত্রের মুখে মাদরাসার শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে। শিক্ষকদের মারধর করে তাদের মোবাইল ফোন নিয়ে যায় ডাকাতরা। তারা খামারে ঢুকে কেয়ারটেকার উৎসব হোসেনকে বেঁধে একে একে পাঁচটি গরু পিকআপ ভ্যানে তুলে নেয়। শিক্ষক ও ছাত্রদের চিৎকারে স্থানীয়রা ছুটে আসলে ডাকাতরা পালিয়ে যায়।

মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা শরীফুল আলম খন্দকার জানান, খামারের আয়ের ওপর ভিত্তি করে মাদরাসার কার্যক্রম চলে। তিন মাস আগেও এই খামারের সাতটি গরু নিয়ে যায় ডাকাতরা।

লাকসাম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নাজনীন সুলতানা বলেন, “লুট হওয়া গরু উদ্ধার এবং ডাকাতদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে। মাদরাসার শিক্ষক ইমরান হোসাইন বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছেন।”

ঢাকা/রুবেল/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ