ফরিদপুরে যুবককে কুপিয়ে জখম, থানায় মামলা না নেওয়ার অভিযোগ পরিবারের
Published: 22nd, April 2025 GMT
ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলায় ‘চোট পার্টি’র এক সদস্যকে হাতেনাতে আটকের ভিডিও ফেসবুকে পোস্ট করায় আরাফাত মোল্যা মনি (৪০) নামে এক যুবককে কুপিয়ে জখম করেছে দুর্বৃত্তরা। হামলার তিন সপ্তাহ পার হলেও থানা এখনো মামলা নেয়নি বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীর পরিবার।
মঙ্গলবার দুপুরে ফরিদপুর শহরের আলীপুরে একটি সংবাদমাধ্যমের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানায় ভুক্তভোগীর পরিবার।
সংবাদ সম্মেলনে আরাফাতের বাবা, মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল আজিজ টুকু মোল্যা বলেন, গত ৩১ মার্চ সন্ধ্যায় বাড়ির বাইরে হাঁটতে গেলে সাখাওয়াত মোল্যা, রুবেল ও ইমরানসহ আরও কয়েকজন অতর্কিতে আরাফাতের উপর হামলা চালায়। তারা টেটা ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাকে গুরুতর জখম করে। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন।
আরাফাতের মা হোসনে আরা বলেন, হামলাকারীরা এখনও বাড়ির আশেপাশে ঘোরাফেরা করছে ও তাদের হুমকি দিচ্ছে, ফলে পরিবারটি নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে।
আরাফাত মনি অভিযোগ করে বলেন, ‘চোট পার্টি’ নামে পরিচিত একটি চক্র সহজসরল মানুষের কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে এবং মাদক কারবারেও জড়িত। ঢাকায় এদের একজনকে সৌদি দিরহামের লোভ দেখিয়ে প্রতারণার সময় হাতেনাতে ধরা হয়। সেই ভিডিও তিনি ১৮ মার্চ ফেসবুকে শেয়ার করেন। এরপরই ঈদের দিনে তার উপর হামলা হয়।
তবে ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হামলার ঘটনা ও মামলা গ্রহণে গড়িমসির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়েছে এবং অভিযোগ দিতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু পরিবার থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ দেয়নি।
তবে পরিবার দাবি করছে, তারা ওসিকে অবহিত করার পাশাপাশি পুলিশ সুপারকেও বিষয়টি জানিয়েছেন। তিনি মামলা গ্রহণের নির্দেশ দিলেও এখনও মামলা নেয়া হয়নি। এতে বিচার না পাওয়ার আশঙ্কায় রয়েছে আহত যুবকের পরিবার।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ক প য় জখম পর ব র আর ফ ত
এছাড়াও পড়ুন:
হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত
ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশ হাইতিতে গত সপ্তাহে একাধিক গ্যাং হামলায় ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্কের (আরএনডিডিএইচ) তথ্যানুসারে, সংকটে জর্জরিত দেশটিতে সর্বশেষ ভয়াবহ গণহত্যার ঘটনা এটি।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্যারন’স।
গতকাল সোমবার এএফপিকে পাঠানো এক প্রতিবেদনে আরএনডিডিএইচ জানায়, গত ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের উত্তর এলাকায় এই হামলাগুলো ঘটে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০২৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিহত হওয়া বহু মানুষের লাশ এখনও পাওয়া যায়নি। লাশগুলো এখনও ঝোপের মধ্যে পড়ে আছে এবং কুকুর লাশগুলো খেয়ে ফেলেছে।’
পশ্চিম গোলার্ধের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ হাইতি। দেশটির একটি অংশ ও রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের বেশিরভাগ এলাকা সশস্ত্র গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকায় সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
২০২৪ সালের শুরুর দিকে গ্যাংগুলোর একটি জোট লাগাতার হামলা শুরু করলে পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়। যার ফলে প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি পদত্যাগ করেন এবং প্রেসিডেন্টের অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।
হাইতির পুলিশকে সমর্থন করার জন্য কেনিয়ার নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনী মোতায়েন করার পরও সহিংসতা দমন করা সম্ভব হয়নি।
আরএনডিডিএইচ জানিয়েছে, ভিভ আনসানম গ্যাং জোট, যারা ২০২৪ সালের মার্চ মাস থেকে ক্যাবারেট শহরের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তারা গত সপ্তাহে নিকটবর্তী ল্যাবোডেরি শহরে বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে অত্যন্ত নিষ্ঠুর গণহত্যা চালিয়েছে। শহরটি রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত।
সংস্থাটি আরো জানায়, ‘তারা ৫০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে এবং বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।’
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘বেঁচে থাকা কয়েকজন পার্শ্ববর্তী এলাকায় পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। অন্যান্যরা আক্রমণকারীদের হাত থেকে বাঁচতে নৌকায় করে সমুদ্রে পালিয়ে যায়।’
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গত মাসে সতর্ক করে বলেছেন, হাইতিতে ‘রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব ভেঙে পড়ছে।’
তিনি নিরাপত্তা পরিষদকে সতর্ক করে বলেন, হাইতির রাজধানীর বাইরেও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে। সেখানকার ৯০ শতাংশ অঞ্চলের ওপর গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।
রবিবার, তিনি ক্যাবারে কমিউনে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় ‘সরবরাহ, কর্মী ও তহবিল দিয়ে বহুজাতিক নিরাপত্তা সহায়তা মিশনকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করার’ আহ্বান জানিয়েছেন।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের তথ্যানুসারে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে হাইতিতে কমপক্ষে ৩ হাজার ১৪১ জন নিহত হয়েছে।
ঢাকা/ফিরোজ