টিকটকে বিরোধের জেরে যশোর থেকে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে গিয়ে দুই কিশোরকে ছুরিকাঘাতে জখম করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায়  রিয়াজ হোসেন ও জিহাদ নামে দুইজনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন এলাকাবাসী। 

বুধবার (২৩ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬টার দিকে শহরের মোবারকগঞ্জ চিনিকল স্কুল মাঠে ঘটনাটি ঘটে। কালীগঞ্জ থানার ওসি শহিদুল ইসলাম হাওলাদার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

আহতরা হলেন- কালীগঞ্জ পৌরসভার বলিদাপাড়া এলাকার আনোয়ার হোসেনের ছেলে ইফতেখার আনোয়ার প্রেম (১৫) ও তার বন্ধু মোবারকগঞ্জ চিনিকলের সাবেক ব্যবস্থাপক (অর্থ ও প্রশাসন) মাসুদুর রহমানের ছেলে নাজমুস সাকিব হিমেল (১৫)। তারা এবার এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন। 

আরো পড়ুন:

সালিশে দাওয়াত না দেওয়ায় হামলার অভিযোগ যুবদল নেতার বিরুদ্ধে

নড়াইলে প্রতিপক্ষের হামলায় বিএনপি নেতার হাত বিচ্ছিন্ন

আটক রিয়াজ ওরফে ট্যাটু রিয়াজ যশোর পুলিশ লাইন এলাকার নান্নু মিয়ার ছেলে। অপর জনের নাম জিহাদ। ঘটনার সঙ্গে সম্পক্ত না থাকায় তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানায় পুলিশ।   

এলাকাবাসী জানান, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টিকটকে কালীগঞ্জের হিমেল ও যশোরের রিয়াজ একে অপরকে হুমকি দিতেন। এরই জেরে যশোর থেকে রিয়াজ ও তার এক বন্ধু কালীগঞ্জের মোবারকগঞ্জ চিনিকল কলোনীতে যান। তারা এক আত্মীয়ের বাড়িতে ওঠেন। পরে তারা মোবারকগঞ্জ চিনিকল স্কুল মাঠে যান।

সেখানে রিয়াজ ও হিমেলের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এরই একপর্যায়ে পকেট থেকে ছুরি বের করে হিমেলকে জখম করেন রিয়াজ। ইফতেখার আনোয়ার প্রেম ঠেকাতে গেলে তাকেও ছুরিকাঘাত করা হয়। তাদের চিৎকারে এলাকার লোকজন রিয়াজকে ছুরিসহ আটক করে পুলিশকে খবর দেন। পরে পুলিশ গিয়ে তাকে নিজেদের হেফাজতে নেয়। 

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী হৃদয় হোসেন বলেন, ‍“আজ বিকেলে ছোটভাইদের সঙ্গে স্কুল মাঠে বসে ছিলাম। এসময় হিমেল সেখানে আসে। যশোর থেকে আসা দুই যুবক এসে হিমেলের সঙ্গে কথা বলতে শুরু করেন। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয়। ঠেকিয়ে দিলে যশোর থেকে আসা যুবকরা মিলের মধ্যে এক আত্মীয়ের বাসায় যায়। এরপর আবার ফিরে এসে হিমেলকে বিভিন্নভাবে হুমকি দেন রিয়াজ। তখন তাদের মধ্যে মারামারি শুরু হয়। একপর্যায়ে রিয়াজ পকেট থেকে ছুরি বের করে চালাতে থাকেন। দেখি, হিমেল ও প্রেমের পায়ে ছুরির আঘাত লেগেছে। তাদের পা দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে। পরে তাদের কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান স্থানীয়রা।”

কালীগঞ্জ থানার ওসি শহিদুল ইসলাম হাওলাদার বলেন, “আটক রিয়াজের কাছ থেকে একটি চায়না ছুরি জব্দ করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত না থাকায় আটক অপর যুবককে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।”

ঢাকা/শাহরিয়ার/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আহত আটক ঘটন র

এছাড়াও পড়ুন:

মোহাম্মদপুরে বাসে বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া তরুণীকে হেনস্তার ভিডিও ভাইরাল, হেনস্তাকারী গ্রেপ্তার

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে বাসে বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া তরুণীর পোশাক নিয়ে কটূক্তি ও হেনস্তার ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার তিন দিন পর হেনস্তাকারীকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। গ্রেপ্তার নাজিম উদ্দিন (৪৫) ওই বাসের কন্ডাক্টর ও চালকের সহকারী বলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জানিয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মোহাম্মদপুরের বছিলা এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব।

ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, একটি বাসে এক তরুণী তাঁর পোশাক নিয়ে কটূক্তির প্রতিবাদ করছেন। বাসে ওঠার পর সামনের আসনে বসা ওই ব্যক্তি তাঁর পোশাক নিয়ে অশোভন মন্তব্য করেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে তরুণী প্রতিবাদ জানাতে সামনে এগিয়ে যান এবং প্রশ্ন করেন, ‘আমার পোশাক নিয়ে আপনার সমস্যা কী?’ পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে ওই ব্যক্তি উঠে দাঁড়িয়ে তরুণীকে চড় মারেন। মুহূর্তেই তরুণী জুতা খুলে পাল্টা আঘাত করেন। ভিডিওতে আরও দেখা যায়, ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে দুজনই বাসের সামনের দিকে পড়ে যান। তরুণী নিজেকে সামলে নিয়ে আবারও প্রতিরোধ করেন।

ঘটনার ভিডিওটি ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ার পর নানামুখী প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। অনেকেই তরুণীর সাহসী অবস্থানের প্রশংসা করেছেন, অন্যদিকে কেউ কেউ ঘটনাটিতে উভয় পক্ষের আচরণ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

নাজিম উদ্দিনকে আটক করার সঙ্গে যুক্ত র‍্যাব-৪–এর মেজর আবরার ফয়সাল সাদী প্রথম আলোকে বলেন, তরুণীকে কটূক্তি ও হেনস্তা করার ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ার পর হেনস্তকারী ব্যক্তিকে আটক করতে র‍্যাব-৪–এর একটি দল অভিযান শুরু করে। গতকাল সন্ধ্যায় নাজিম উদ্দিনকে শনাক্ত করে আটক করা হয়। পরে তাঁকে মোহাম্মদপুর থানায় সোপর্দ করা হয়।

যোগাযোগ করা হলে মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী রফিক প্রথম আলোকে বলেন, হেনস্তার শিকার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী শ্লীলতাহানির অভিযোগ এনে আজ শুক্রবার সকালে নাজিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। ওই মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। নাজিম উদ্দিন ধানমন্ডি ১৫ থকে মোহাম্মদপুরের বছিলায় চলাচলরত রমজান পরিবহনের কন্ডাক্টর। ভাড়া নিয়ে কথা–কাটাকাটির জের ধরে তাঁদের দুজনের মধ্যে মারামারি হয়। ছাত্রীটি মোহাম্মদপুরের একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েন।

আজ সন্ধ্যায় পাঠানো র‍্যাব-৪–এর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি রমজান পরিবহনের একটি বাস ধানমন্ডি ১৫ থেকে মোহাম্মদপুরের বছিলায় যাচ্ছিল। বাসটি বছিলার মেট্রো হাউজিংয়ের সামনে পৌঁছালে চালকের সহকারী মো. নিজাম উদ্দিন বাসটির যাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া তরুণীর দিকে তাকিয়ে তাঁর পোশাক নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেন। এতে ওই তরুণী প্রতিবাদ করায় নাজিম উদ্দিন তাঁর সঙ্গে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেন এবং তাঁকে চড় মারেন। একপর্যায়ে তরুণীও আত্মরক্ষার্থে নিজের পায়ের জুতা খুলে অভিযুক্ত নাজিম উদ্দিনকে আঘাত করেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দুই শিশুর ঝগড়ায় জড়ালেন বড়রা, বড় ভাইয়ের হাতে খুন ছোট ভাই
  • রাজশাহীতে ‘প্রেমিকার’ সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে মারধরের শিকার কিশোরের মৃত্যু
  • প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে মারধরের শিকার কিশোরের মৃত্যু
  • মোহাম্মদপুরে বাসে বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া তরুণীকে হেনস্তার ভিডিও ভাইরাল, হেনস্তাকারী গ্রেপ্তার