গণ-অভ্যুত্থান নিয়ে এখন এক ধরনের ব্যবসা শুরু হয়েছে
Published: 24th, April 2025 GMT
বৈষম্য বিলোপের স্লোগান তুলে হাজার হাজার মানুষ জীবন উৎসর্গ করেছেন নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের স্বপ্ন থেকে। কিন্তু সেই স্বপ্ন ক্রমেই অধরা হয়ে উঠছে। গণ-অভ্যুত্থান নিয়ে এখন একধরনের ব্যবসা শুরু হয়েছে, অসংখ্য নির্দোষ মানুষকে হয়রানি করা হচ্ছে। এটি গণ-অভ্যুত্থানের চেতনার সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
ছাত্র ইউনিয়নের ৪২তম জাতীয় সম্মেলনের উদ্বোধনী সমাবেশে এ কথা বলেছেন জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ সাংবাদিক তাহির জামান প্রিয়র মা সামসি আরা জামান। তিনি আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার সামনে রাগীব নাঈম ও রাকিবুল রনির নেতৃত্বাধীন ছাত্র ইউনিয়নের সম্মেলনের উদ্বোধন করেন।
উদ্বোধনী বক্তব্যে সামসি আরা জামান জুলাই অভ্যুত্থানে তাঁর সন্তানসহ সব হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবি করেন। তিনি বলেন, এসব হত্যাকাণ্ডের বিচার নিশ্চিত করতে অন্তর্বর্তী সরকার টালবাহানা করলে ছাত্র-জনতাকে সঙ্গে নিয়ে স্বজনহারা মানুষ আবারও রাজপথে নামবেন। বৈষম্য বিলোপের স্লোগান তুলে হাজার হাজার মানুষ নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছেন নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের স্বপ্ন থেকে। কিন্তু সেই স্বপ্ন ক্রমেই অধরা হয়ে উঠছে। গণ–অভ্যুত্থান নিয়ে এখন একধরনের ব্যবসা শুরু হয়েছে, অসংখ্য নির্দোষ মানুষকে হয়রানি করা হচ্ছে। এটি নিশ্চিতভাবেই গণ–অভ্যুত্থানের চেতনার সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
ছাত্র ইউনিয়নের সম্মেলন প্রস্তুতি পরিষদের আহ্বায়ক তামজীদ হায়দার বলেন, জুলাইয়ে শুরু হওয়া সংগ্রাম এখনো শেষ হয়নি। স্বাধীনতাবিরোধী ও ধর্মকে স্বার্থসিদ্ধির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহারকারীদের কাছে সরকার একরকম আত্মসমর্পণ করে বসে আছে। দেশি-বিদেশি স্বার্থান্বেষী মহলের আজ্ঞাবহতা বর্জন করে সরকারকে গণ–অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের পথে ফিরে আসতে বাধ্য করা হবে।
উদ্বোধনী সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ছাত্র ইউনিয়নের এই অংশের সভাপতি রাগীব নাঈম। তিনি বলেন, ‘ফ্যাসিবাদী সরকারকে হটাতে সক্ষম হলেও ফ্যাসিবাদী কাঠামোর সম্পূর্ণ বিলোপ এখনো সম্ভব হয়নি। জুলাই অভ্যুত্থানে আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসা নিশ্চিতে টালবাহানা, সব শহীদ পরিবারের কাছে সহায়তা পৌঁছাতে না পারা, শ্রমিকদের ওপর নির্বিচার গুলি চালানো, ছাত্র আন্দোলনে ন্যক্কারজনক পুলিশি হামলা অব্যাহত রাখাসহ নানা ঘটনা লক্ষ করছি। এসব ঘটনায় সরকারের ভূমিকা ও নিষ্ক্রিয়তা নিশ্চিতভাবেই শহীদদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি।’
সমাবেশ সঞ্চালনা করেন ছাত্র ইউনিয়নের এই অংশের সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল রনি। বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিল, ছাত্র ফেডারেশন, হরিজন ছাত্র পরিষদ, বিপ্লবী ছাত্র–যুব আন্দোলনসহ বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের নেতারা এতে উপস্থিত ছিলেন। সমাবেশের পর একটি শোভাযাত্রা অপরাজেয় বাংলার পাদদেশ থেকে শুরু হয়ে শাহবাগ মোড়, টিএসসি ও দোয়েল চত্বর হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্রে গিয়ে শেষ হয়।
পরে বৃহস্পতিবার রাতেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) সম্মেলনের কাউন্সিল অধিবেশন শুরু হয়। কাউন্সিল শেষে নতুন কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করা হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
সৌন্দর্য বাড়াতে বোটক্স করা কতটা ভালো
সৌন্দর্য ও তারুণ্য ধরে রাখতে এ দেশেও বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে বোটক্স। মুখে বয়সের ছাপ কমিয়ে, মসৃণ ও প্রাণবন্ত চেহারা ফিরিয়ে আনতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে এই চিকিত্সাপদ্ধতি। বোটক্স শব্দটি এসেছে বটুলিনাম টক্সিন থেকে। এটি একধরনের প্রোটিন, যা ক্লস্ট্রিডিয়াম বটুলিনাম নামক ব্যাকটেরিয়া থেকে তৈরি হয়।
বোটক্স প্রয়োগ করা হয় ইনজেকশনের মাধ্যমে। এটি বলিরেখা ছাড়াও অন্যান্য সূক্ষ্ম রেখা কমাতে সাহায্য করে। যে কারণে ত্বক দেখায় আরও তরুণ। এটি একটি নন-সার্জিক্যাল কসমেটিক পদ্ধতি, যা মুখের বিভিন্ন অংশে প্রয়োগ করা হয়। এর মধ্যে আছে কপাল, চোখের চারপাশ ও ঠোঁটের আশপাশ। যদিও এটি একটি বিষাক্ত পদার্থ, কিন্তু নিয়ন্ত্রিত ও সঠিক মাত্রায় ব্যবহার করা হলে এটি নিরাপদ ও উপকারী।
বোটক্স যেভাবে কাজ করেআমাদের মুখের বিভিন্ন অভিব্যক্তি, যেমন হাসি, রাগ বা চিন্তার ফলে মাসল সংকোচন হয়। বারবার এ সংকোচনের ফলে ত্বকে ভাঁজ বা বলিরেখা পড়ে। বোটক্স ইনজেকশন মাংসপেশির ওই সংকোচনপ্রক্রিয়াকে সাময়িকভাবে শিথিল করে দেয়। এটি স্নায়ু ও মাসলের সংযোগস্থলে অ্যাসিটাইলকোলিন নামে একধরনের রিসিপ্টরকে ব্লক করে, ফলে স্নায়ু থেকে মাসলে সংকোচনের সংকেত পৌঁছায় না। এ জন্য সংশ্লিষ্ট মাসল শিথিল থাকে আর ওই জায়গার বলিরেখা কমে যায় বা সম্পূর্ণ মিলিয়ে যায়। ত্বক দেখায় মসৃণ।
সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে বোটক্সকপালে বলিরেখা দূর করে।
চোখের পাশের কুঁচকে যাওয়া বা ক্রস ফিট কমায়।
ভ্রুর মাঝের ভাঁজ কমায়।
ঠোঁটের পাশের রেখা ও চোয়ালের অংশকে সুগঠিত করে।
কিছু ক্ষেত্রে ঘাম কমাতেও সাহায্য করে।
আরও পড়ুনঅ্যাস্থেটিক ডার্মাটোলজি কি খুব ব্যয়বহুল?২১ আগস্ট ২০২৪চিকিত্সায় ব্যবহারবোটক্স দীর্ঘস্থায়ী মাইগ্রেন কমাতে সাহায্য করে।
চোখের পাতা ঝুলে যাওয়া বা চোখের পাতার খিঁচুনি কমাতে বোটক্স ব্যবহার করা হয়।
এ ছাড়া প্রস্রাব ধরে রাখতে না পারা, অতিরিক্ত লালা ঝরার মতো অসুখেও বোটক্স ব্যবহার করা হয়।
প্রভাব ও স্থায়িত্ববোটক্স প্রয়োগের প্রভাব সাধারণত তিন থেকে পাঁচ দিনের মধ্যে দেখা যায়। এটি তিন থেকে ছয় মাস পর্যন্ত স্থায়ী হয়। এরপর আবার প্রয়োগ করার প্রয়োজন হতে পারে।
সতর্কতা ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াযদিও বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বোটক্স নিরাপদ, তবু এটি প্রয়োগের পর কিছু সাময়িক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে। যেমন হালকা ব্যথা, ফোলা ভাব, মাথাব্যথা বা ইনজেকশনের স্থানে অস্বস্তি। তাই অবশ্যই এটি প্রশিক্ষিত চিকিত্সকের পরামর্শ ও তত্ত্বাবধানে করা উচিত।
বয়সের ছাপ লুকিয়ে তারুণ্য ধরে রাখতে বা সৌন্দর্য বাড়াতে বিশ্বজুড়ে বোটক্স এখন একটি জনপ্রিয় ও কার্যকর উপায়। তবে মনে রাখা উচিত, সৌন্দর্য শুধু বাহ্যিক নয়, আত্মবিশ্বাস ও স্বাস্থ্যকর জীবনধারা সৌন্দর্যের অন্যতম উপাদান।
আরও পড়ুনডায়াবেটিস, কিডনির সমস্যা, ওজন ও ইউরিক অ্যাসিড কমানোসহ কত গুণ চিচিঙ্গার ২২ ঘণ্টা আগে