রাষ্ট্র সংস্কারের উদ্যোগ সব স্তরের মানুষের কাছ থেকে এসেছে: আলী রীয়াজ
Published: 26th, April 2025 GMT
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, রাষ্ট্র সংস্কারের যে উদ্যোগ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে, তা কেবল সরকারের উদ্যোগ নয়, এটি বাংলাদেশের জনগণের দীর্ঘদিনের আকাঙ্ক্ষার ফল। রাষ্ট্র সংস্কারের তাগিদ রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে এসেছে, ছাত্রসমাজের কাছ থেকে এসেছে, সর্বোপরি দেশের সব স্তরের মানুষের কাছ থেকে এসেছে।
শনিবার (২৬ এপ্রিল) রাজধানীর সংসদ ভবনের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আলোচনার শুরুতে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় কমিশনের সদস্য হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিচারপতি মো.
অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে বীর শহীদদের আত্মত্যাগে আমরা একটি ঐতিহাসিক মুহূর্তে উপস্থিত হওয়ার সুযোগ পেয়েছি। এই বীর শহীদদের কাছে আমাদের ঋণ আছে। যে সুযোগ ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগে তৈরি হয়েছে, তা যেন লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত না হয়৷
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে একটি জাতীয় সনদ তৈরি করার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে একটি জাতীয় সনদে উপনীত হতে চাই৷ আমরা এমন একটি বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে চাই, যেখানে মানুষ তার অধিকার থেকে বঞ্চিত না হয়, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বা কোনো নিপীড়নের শিকার না হন৷
আলোচনায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহেরের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের প্রতিনিধিদলে ছিলেন—দলটির সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, হামিদুর রহমান আজাদ, রফিকুল ইসলাম খান, এহসান মাহবুব যোবায়ের, সাইফুল আলম খান মিলন, মতিউর রহমান আকন্দ, নুরুল ইসলাম বুলবুল, শিশির মোহাম্মদ মনির এবং সরকার মোহাম্মদ মহিউদ্দিন।
প্রথম পর্যায়ে গঠিত সংস্কার কমিশনগুলোর মধ্যে সংবিধান সংস্কার কমিশন, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন এবং দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশগুলোর ওপর সুনির্দিষ্ট মতামত জানাতে অনুরোধ করে সুপারিশগুলো স্প্রেডশিট আকারে ৩৯টি রাজনৈতিক দলের কাছে পাঠানো হয়। ইতোমধ্যে সংস্কার বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ৩৫টি দলের কাছ থেকে মতামত পেয়েছে। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীসহ এ পর্যন্ত ১৭টি দল কমিশনের সঙ্গে আলোচনায় অংশ নিয়েছে।
ঢাকা/এএএম/রফিক
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে ঐকমত্য না হলে গণভোট ছাড়া উপায় নেই: এবি পার্টি
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে অংশ নিয়ে আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেছেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো ঐকমত্যে পৌঁছাতে না পারলে গণভোট ছাড়া উপায় নেই।
জুলাই সনদ বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া নিয়ে আজ বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক হয়। বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এবি পার্টির চেয়ারম্যান এ কথা বলেন।
ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে মজিবুর রহমান বলেছেন, ‘সংবিধান পরিবর্তন, সংস্কার, সংশোধন, নতুন করে লেখা বা বাতিলের চূড়ান্ত ক্ষমতা জনগণের। আমরা ঐক্যবদ্ধ মতামতের ভিত্তিতে জুলাই সনদ তৈরি করেছি, হয়তো কয়েকটি বিষয়ে কারও কারও “নোট অব ডিসেন্ট” (দ্বিমত) আছে। কিন্তু চূড়ান্ত কোনটা হবে, তা নির্ধারণের মূল ক্ষমতা জনগণের।’
কমিশনের আজকের প্রস্তাবে জুলাই ঘোষণাপত্রের ২২ নম্বর অনুচ্ছেদকে রেফারেন্স আকারে উল্লেখ করায় কোনো কোনো রাজনৈতিক দল ও নেতা জুলাই ঘোষণাপত্রের বৈধতা নিয়ে মন্তব্য করেন। এ বিষয়ে এবি পার্টির চেয়ারম্যান সাংবাদিকদের বলেন, জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে যাঁরা আজ প্রশ্ন তুলছেন, কাল তাঁরা সংসদে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করবেন এবং এই সনদকে প্রশ্নবিদ্ধ করবেন না, তার নিশ্চয়তা কী?
এবি পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সানী আবদুল হক বলেন, সংবিধানে এটা নেই, ওটা নেই বলে সংবিধান সংস্কার করা যাবে না—এই ধারণা অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষাপরিপন্থী। রাজনৈতিক দলগুলো যদি জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতির প্রশ্নে নিজেদের অবস্থান থেকে নমনীয় না হয়, তবে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পুরো প্রচেষ্টা মুখ থুবড়ে পড়বে।
আশঙ্কা প্রকাশ করে এবি পার্টির এই নেতা বলেন, এমন পরিস্থিতি জাতিকে এক গভীর সংকটের দিকে ঠেলে দেবে। সুতরাং জাতীয় স্বার্থে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা জরুরি; অন্যথায় গণভোট ছাড়া কোনো বিকল্প নেই।
আরও পড়ুনবর্ধিত মেয়াদের আগেই জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি চূড়ান্ত করতে চায় কমিশন: আলী রীয়াজ৪ ঘণ্টা আগে