জ্বালানি খাতের রাষ্ট্রীয় কোম্পানি পদ্মা অয়েল ৩ মাসে ১৪৫ কোটি টাকা মুনাফা করেছে। চলতি বছরের প্রথম ৩ মাসে (জানুয়ারি-মার্চ) এই মুনাফা করেছে সরকারি মালিকানাধীন কোম্পানিটি। গত বছরের একই সময়ে কোম্পানিটি মুনাফা করেছিল ৮২ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে পদ্মা অয়েলের মুনাফা বেড়েছে ৬৩ কোটি টাকা বা ৭৭ শতাংশ।

শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি হিসেবে আজ রোববার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) মাধ্যমে কোম্পানিটির এই মুনাফার তথ্য বিনিয়োগকারীদের জানিয়েছে। এর আগে গতকাল শনিবার কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদের সভায় গত জানুয়ারি-মার্চ মাসের আর্থিক প্রতিবেদন অনুমোদন করা হয়। সেই সঙ্গে কোম্পানিটি তৃতীয় প্রান্তিকের (জুলাই-মার্চ) আর্থিক প্রতিবেদনও প্রকাশ করেছে।

আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই-মার্চ) পদ্মা অয়েল মুনাফা করেছে ৩৯৫ কোটি টাকা। আগের বছর অর্থাৎ ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে এই মুনাফার পরিমাণ ছিল ২৪৪ কোটি টাকা। সেই হিসাবে ৯ মাসের বিবেচনায় এক বছরের ব্যবধানে জ্বালানি তেল বিপণনকারী রাষ্ট্রীয় এই প্রতিষ্ঠানটির মুনাফা বেড়েছে ১৫১ কোটি টাকা বা ৬২ শতাংশ।

পদ্মা অয়েল–সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, মূলত ব্যাংক আমানতের সুদহার বৃদ্ধির কারণেই প্রতিষ্ঠানটির মুনাফায় বড় ধরনের প্রবৃদ্ধি হয়েছে। চলতি বছরের প্রথম ৩ মাসে ব্যাংকে আমানত জমা রেখে পদ্মা অয়েল সুদবাবদ আয় করেছে ১৭৭ কোটি টাকা। গত বছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ১০০ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির সুদবাবদ আয় বেড়েছে ৭৭ কোটি টাকা। ব্যাংকে আমানত রেখে যে সুদ আয় হয়, তার বিপরীতে খুব বেশি খরচ নেই। এ কারণে সুদ আয় সরাসরি কোম্পানির মুনাফায় যোগ হয়। তাই সুদ আয় বাড়লে কোম্পানির মুনাফাও উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বাড়ে, যদি না অন্যান্য খাতে খরচ খুব বেশি না বাড়ে।

আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে পদ্মা অয়েল ব্যাংকে জমা আমানতের বিপরীতে সুদ আয় করেছে ৪২৭ কোটি টাকা। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ২৭২ কোটি টাকা। সেই হিসাবে ৯ মাসের বিবেচনায় কোম্পানিটির সুদ বাবদ আয় এক বছরের ব্যবধানে ১৫৫ কোটি টাকা বেড়েছে।

পদ্মা অয়েল দেশের জ্বালানি তেল সরবরাহ ও বিপণনকারী একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন বা বিপিসির আমদানি করা জ্বালানি তেল সরকার নির্ধারিত দামে দেশজুড়ে ভোক্তা পর্যায়ে বিক্রি করে এই কোম্পানি। বিনিময়ে নির্ধারিত হারে কমিশন পায় কোম্পানিটি। এই কমিশনই পদ্মা অয়েলের মূল ব্যবসার আয়। পদ্মা অয়েলের পাশাপাশি একই ধরনের ব্যবসা করে সরকারি প্রতিষ্ঠান যমুনা ও মেঘনা অয়েল।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: বছর র প রথম পর ম ণ স দ আয় সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

দুই বছর ধরে ঝুলছে যুবলীগ নেতা জামাল হত্যা মামলার তদন্ত

কুমিল্লায় যুবলীগ নেতা জামাল হোসেন হত্যার তদন্ত দুই বছর ধরে ঝুলছে। ২০২৩ সালের ৩০ এপ্রিল রাতে দাউদকান্দি উপজেলার গৌরিপুর পশ্চিম বাজারে তাঁকে গুলি করে হত্যা করে বোরকা পরা ৩ সন্ত্রাসী।

তিতাস উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক জামাল হোসেন হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার সব আসামিই জামিনে মুক্ত। গত বছরের জুলাই মাসে জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) বোরকা পরা তিন শুটারসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দেয়। এতে আপত্তি জানিয়ে আদালতে আবেদন করেন জামালের স্ত্রী পপি আক্তার। পরে অধিকতর তদন্তের দায়িত্ব পায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

মামলার বাদী পপি আক্তারের অভিযোগ, জামাল পরিকল্পিত হত্যার শিকার। তাঁকে হত্যার আগে আসামিদের একাধিক বৈঠক হয়। কিন্তু ডিবির চার্জশিটে প্রভাবশালী আসামিদের নাম রাখা হয়নি। তাঁর দাবি, হত্যার নেপথ্যে থাকা ব্যক্তিরাও আওয়ামী লীগের রাজনীতি করত। আসামিদের রক্ষা করতে তদবিরও করেছে আওয়ামী লীগের নেতারা। তিনি বলেন, ‘আমি নারী হয়ে একাই ৪ নাবালক সন্তান নিয়ে স্বামী হত্যার বিচারের জন্য দুই বছর ধরে লড়ছি। মামলায় গ্রেপ্তার ভাইস চেয়ারম্যান সোহেল শিকদার, শুটার দেলুসহ সব আসামিই জামিনে বেরিয়ে গেছে। শুটার কালা মনির ও আরিফ ধরাছোঁয়ার বাইরে।’ পিবিআই সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে জড়িত সবার বিরুদ্ধে চার্জশিট দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে বলেও জানান তিনি।

ডিবির ওসি রাজেস বড়ুয়ার দেওয়া চার্জশিটে থাকা আসামিরা হলো– তিতাস উপজেলার জিয়ারকান্দি গ্রামের শুটার আকাশ প্রকাশ আরিফ, কালা মনির ও দাউদকান্দির চরচারুয়া গ্রামের দেলোয়ার হোসেন ওরফে দেলু, জিয়ারকান্দি গ্রামের সুজন মিয়া, ইসমাইল, মো. রবি, শাহপরান, আল-আমিন প্রকাশ শাহ আলী, তিতাসের লালপুর গ্রামের সুমন হোসেন ওরফে ড্রাইভার সুমন, ফরাজি বাড়ি গ্রামের সহিদুল ইসলাম ওরফে সাদ্দাম মাস্টার, দাউদকান্দির গোপচর গ্রামের পা কাটা শাহ আলম ও দেবিদ্বার উপজেলার রসুলপুর গ্রামের অলি উল্লাহ ওরফে অলি হাসান।

অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয় তিতাস উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান সোহেল শিকদার, জিয়ারকান্দি গ্রামের আওয়ামী লীগ নেতা বাদল রিয়াজ, একই গ্রামের আতিকুর রহমান শাকিল, দেবিদ্বারের নবীয়াবাদ গ্রামের যুবলীগ নেতা মো. মাসুদ ও ছাত্রলীগ নেতা মাজহারুল ইসলাম সৈকত।
বাদীর আইনজীবী মাসুদ সালাউদ্দিন বলেন, হত্যাকাণ্ডের পর গ্রেপ্তার অনেক আসামি রিমান্ডে ও আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে হত্যার পরিকল্পনা, অস্ত্র সরবরাহ ও হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে অনেক তথ্য দেয়। কিন্তু ডিবির চার্জশিটে তার প্রতিফলন ঘটেনি। মামলাটি এখন তদন্ত করছে পিবিআই। এখন যেহেতু রাজনৈতিক চাপ নেই, তাই পিবিআই নেপথ্যে থাকা সবাইকে আইনের আওতায় আনবে বলে আশা তাঁর।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই কুমিল্লার পরিদর্শক মফজল হোসেন খান জানান, মামলার অনেক আসামি এখন দেশের বাইরে। পরিকল্পনা করেই শুটার ভাড়া করে জামালকে গুলি করে হত্যা করে। তদন্ত শেষ পর্যায়ে। আগামি দুই মাসের মধ্যে আদালতে চার্জশিট দেওয়া হবে।

এর আগে ২০২৩ সালের ৩০ এপ্রিল রাতে দাউদকান্দি উপজেলার গৌরিপুর পশ্চিম বাজারে বোরকা পরা তিন সন্ত্রাসীর গুলিতে নিহত হন যুবলীগ নেতা জামাল হোসেন। এ ঘটনায় তাঁর স্ত্রী পপি আক্তার ৯ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত পরিচয় ৭-৮ জনের বিরুদ্ধে দাউদকান্দি থানায় মামলা করেন। হত্যাকাণ্ডের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই গাড়িচালক সুমন হোসেনকে গ্রেপ্তার করলে রহস্যের জট খুলতে থাকে। পরে র‍্যাব ও পুলিশের অভিযানে ৬ মে ঢাকার রায়েরবাগ থেকে মামলার ৪ নম্বর আসামি সোহেল শিকদার ও মিরপুর থেকে ৩ নম্বর আসামি মো. ইসমাইল, চট্টগ্রাম থেকে ৭ নম্বর আসামি শাহ আলম ওরফে পা কাটা আলম এবং ৯ মে ঢাকার যাত্রাবাড়ী থেকে দেলোয়ার হোসেন দেলু গ্রেপ্তার হয়। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিদেশি ঋণ পরিশোধ বেড়েছে ২৪ শতাংশ
  • চলতি অর্থবছরের ৯ মাসে বিদেশি ঋণ শোধ ৩০০ কোটি ডলার ছাড়াল
  • তৃতীয় প্রান্তিকে মুনাফা কমেছে স্কয়ার ফার্মার
  • কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষকের পদাবনতি, দুই শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার
  • ৯ মাসে ১৪ হাজার কোটি টাকার ব্যবসা
  • দুই বছর ধরে ঝুলছে যুবলীগ নেতা জামাল হত্যা মামলার তদন্ত
  • শিক্ষার মানোন্নয়নে জিডিপির ৪ শতাংশ বরাদ্দ প্রয়োজন
  • ২০২৭ সালের জুনের পর ‘করছাড়’ থাকবে না
  • ৯ মাসে ৪,৬০০ কোটি টাকার ব্যবসা ওয়ালটনের
  • যমুনা অয়েলের মুনাফা বেড়েছে ৩৮ শতাংশ