একাধিক ছেলেশিশু–কিশোরকে ধর্ষণের অভিযোগে গাজীপুরে এক মসজিদের ইমামকে গাছে বেঁধে পিটিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। আজ রোববার সকালে মহানগরীর হায়দরাবাদ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করেছে।

অভিযুক্ত ইমামের নাম রহিজ উদ্দিন (৩৫)। তিনি কুমিল্লার মতলব উপজেলার বাসিন্দা। রহিজ হায়দরাবাদ আখলাদুল জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব হিসেবে কাজ করতেন।

পুলিশ ও এলাকাবাসীর সূত্রে জানা গেছে, রহিজ উদ্দিন বেশির ভাগ সময় স্থানীয় স্কুল–কলেজপড়ুয়া ছেলেদের সঙ্গে এলাকায় চলাফেরা করতেন। তাঁর থাকার ঘরে কম্পিউটার ও মুঠোফোনে গেমস খেলার কথা বলে ছেলেদের ডেকে নিয়ে যেতেন। এ সময় দোকান থেকে কিনে বোতলজাত কোমল পানীয় কিনে দিতেন, যা পান করার পর শিশুরা অচেতন হয়ে যেত। এরপর রহিজ উদ্দিন তাদের ধর্ষণ করতেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা আরও বলেন, সম্প্রতি কলেজপড়ুয়া এক ছাত্রকে রহিজ উদ্দিন তাঁর সঙ্গে ঘুমানোর জন্য ডেকে নিয়ে যান। পরে ওই ছাত্রকে একটি কোমল পানীয় পান করতে দেন, যা পান করার পর ওই শিক্ষার্থীর মাথা ঘুরতে থাকে। সে কৌশলে প্রস্রাব করার কথা বলে ঘর থেকে বের হয়ে তার পরিবারকে ফোনে বিষয়টি জানায়। বিষয়টি জানাজানি হলে রোববার এলাকার লোকজন রহিজ উদ্দিনকে আটক করে মারধর করে পুলিশের সোপর্দ করেন। এ ঘটনায় রোববার থানায় একটি মামলা করা হলে ওই মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

গাজীপুর মহানগরের পুবাইল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রফিকুল ইসলাম বলেন, ঘটনাস্থল থেকে অভিযুক্ত ইমামকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি একাধিক শিশুকে ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছেন।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

দেশের জন্য যা যা করা দরকার, সব করেছেন আহমদ ছফা

আহমদ ছফাকে বুদ্ধিজীবীদের অনেকেই সহ্য করতে পারতেন না। কিন্তু তাঁর বেশির ভাগ কথা এখন সত্যে পরিণত হয়েছে। দেশের সঙ্গে তিনি প্রাণকে যুক্ত করেছিলেন। দেশকে ভালোবেসে যা যা করা দরকার, তার সবকিছু করেছেন।

শুক্রবার বিকেলে আহমদ ছফা স্মৃতি বক্তৃতায় সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান এসব কথা বলেন। এশীয় শিল্পী ও সংস্কৃতি সভা জাতীয় জাদুঘরের সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে ‘আহমদ ছফা স্মৃতি বক্তৃতা-২০২৫’ আয়োজন করে। ‘আহমদ ছফার রাষ্ট্র বাসনা এবং জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পরিচয়’ শীর্ষক স্মৃতি বক্তৃতা দেন বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের পরিচালক ফারুক ওয়াসিফ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন এশীয় শিল্পী ও সাংস্কৃতিক সভার সভাপতি জহিরুল ইসলাম। আহমদ ছফা (১৯৪৩–২০০১) ছিলেন লেখক, প্রগতিশীল সাহিত্যকর্মী ও রাজনৈতিক চিন্তক।

অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান বলেন, ‘আহমদ ছফা ছিলেন মূলত সাহিত্যিক। তবে তিনি সাহিত্যের গণ্ডি পেরিয়ে চিন্তাকে রাষ্ট্রভাবনা বিষয়ে প্রসারিত করেছিলেন। তিনি ছিলেন অনেক দূরদৃষ্টিসম্পন্ন। তিনি এমন বিষয় নিয়ে চিন্তা করেছিলেন, তা অনেক সময় আমরা বুঝতে পারি না।’ ছফা বলেছিলেন, ‘বিপ্লবের একটি নতুন ভাষা থাকতে হবে। মানুষের রাষ্ট্রের বাসনা বুঝতে হবে। দেশটা আমার নিজের বলে মনে করলে তার সমস্যার সমাধানও আমার নিজের মতো করেই ভাবতে হবে।’

স্মৃতি বক্তৃতায় ফারুক ওয়াসিফ বলেন, আহমদ ছফা রাষ্ট্র নিয়ে গভীরভাবে ভেবেছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ যে ধরনের দেশ সেই বৈশিষ্ট্যকে ধারণ করার মতো কোনো তাত্ত্বিক রাজনৈতিক রূপরেখা নেই। কোনো রাজনৈতিক দলও নেই।

ফারুক ওয়াসিফ বলেন, ‘আমাদের মুক্তিযুদ্ধের পূর্বপরিকল্পনা ছিল না। একাত্তর ছিল অপরিকল্পিত। একইভাবে জুলাই অভ্যুত্থানও হয়েছে অপ্রস্তুতভাবে। এখন জুলাইয়ের নেতারা প্রান্তিক শক্তিতে পরিণত হয়েছেন। বড় দলের যে সামর্থ্য আছে, সেই শক্তি–সামর্থ্য তাদের নেই। তারা মিত্রহীন হয়ে পড়েছে।’

আহমদ ছফার বন্ধু ব্যবসায়ী আবদুল হক বলেন, জনগণ রাষ্ট্রের পরিবর্তন চেয়েছিল। বাংলাদেশের নবীন প্রজন্ম সেই পরিবর্তন ঘটিয়েছে। সারা বিশ্ব দেখেছে বাংলাদেশের মানুষ প্রতিবাদ করতে জানে। এখন একটি নতুন রাজনীতি দরকার।

সম্পর্কিত নিবন্ধ