ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা ফ্যাসিবাদী সরকারকে পলাতে বাধ্য করেছে: আলী রীয়া
Published: 28th, April 2025 GMT
জনগণের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা ফ্যাসিবাদী সরকারকে পলাতে বাধ্য করেছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ।
তিনি বলেছেন, “এই ঐক্যের মূল চেতনাকে ধারণ করে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। এটি শুধু আমাদের অঙ্গীকার নয়, এটা আমাদের দায়।”
রবিবার (২৭ এপ্রিল) জাতীয় সংসদ ভবনে এল. ডি. হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে গণসংহতি আন্দোলনের আলোচনার শুরুতে তিনি এসব কথা বলেন।
ঐকমত্য কমিশন থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়।
এতে বলা হয়েছে, আলোচনার সময় সেখানে ছিলেন কমিশনের সদস্য ড.
অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, সংস্কার কমিশনগুলোর পক্ষ থেকে যে সমস্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে, সেগুলো প্রকৃতপক্ষে দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের পুঞ্জীভূত সংকট মোকাবিলার একটা প্রয়াস।”
“শুধু সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনের বাস্তবায়নই নয়; আমাদের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের কাঠামো তৈরি করতে হবে। সেজন্য গণতান্ত্রিক চর্চা এবং গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোকে একত্রিত করা দরকার,” যোগ করেন তিনি।
তিনি বলেন, “৫৩ বছর ধরে যারা একটি গণতান্ত্রিক, জবাবদিহিতামূলক এবং সকলের অংশগ্রহণমূলক রাষ্ট্র বিনির্মাণে সংগ্রাম করেছেন, তাদের কাছে আমাদের এই দায় রয়েছে।”
আলোচনায় গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকির নেতৃত্বে ১০ সদস্যের প্রতিনিধি দল অংশ নেয়।
তাদের মধ্যে ছিলেন দলটির নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল, দেওয়ান আবদুর রশিদ নীলু, হাসান মারুফ রুমি, মনির উদ্দিন পাপ্পু, বাচ্চু ভুইয়া, জুলহাসনাইন বাবু, ইমরাদ জুলকারনাইন, তরিকুল সুজন, মুরাদ মোর্শেদ এবং দীপক রায়।
সংস্কার বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য গঠনের উদ্দেশ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠিত হয়েছে। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি এই কমিশনের কার্যক্রম শুরু হয়।
প্রথম পর্যায়ে গঠিত সংস্কার কমিশনগুলোর মধ্যে সংবিধান সংস্কার কমিশন, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন এবং দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনের গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশমালার ওপর রাজনৈতিক দলের সুনির্দিষ্ট মতামত জানাতে অনুরোধ করে স্প্রেডশিট আকারে ৩৯টি রাজনৈতিক দলের কাছে পাঠানো হয়। এ পর্যন্ত ৩৫টি রাজনৈতিক দলের কাছ থেকে কমিশন মতামত পেয়েছে।
সংস্কার কমিশনগুলোর করা সুপারিশ চূড়ান্ত করতে গত ২০ মার্চ থেকে আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এরই মধ্যে ১৯টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে প্রাথমিক পর্যায়ের আলোচনা শেষ করেছে কমিশন।
ঢাকা/হাসান/রাসেল
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গণত ন ত র ক আম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
লন্ডন বৈঠকে বিচার ও সংস্কারের বিষয়টি নির্বাচনের মতো গুরুত্ব না পাওয়া অত্যন্ত হতাশাজনক: এনসিপি
লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠকে নির্বাচনের তারিখ সংক্রান্ত আলোচনা যতটুকু গুরুত্ব পেয়েছে, বিচার ও সংস্কার ততটুকু গুরুত্ব পায়নি বলে মনে করে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। বিষয়টিকে ‘অত্যন্ত হতাশাজনক’ বলেছে দলটি।
আজ শুক্রবার রাতে এনসিপির এক বিবৃতিতে এই প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে। এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব (দপ্তর) সালেহউদ্দিন সিফাত বিবৃতিটি পাঠিয়েছেন।
এনসিপির বিবৃতিতে বলা হয়, রাষ্ট্রকাঠামো সংস্কার প্রশ্নে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা হিসেবে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের আলোচনাকে ইতিবাচকভাবে দেখছে এনসিপি। এই প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে লন্ডনে অনুষ্ঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যকার বৈঠকটি ‘সংসদ নির্বাচন’ বিষয়ে দলটিকে আস্থায় আনতে সফল হয়েছে সরকার। জাতীয় ঐক্য, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব এবং রাষ্ট্র সংস্কারের প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা জরুরি। কিন্তু বৈঠকে নির্বাচনের তারিখ সংক্রান্ত আলোচনা যতটুকু গুরুত্ব পেয়েছে, অভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশে নাগরিকদের প্রধান দাবি তথা বিচার ও সংস্কার ততটুকু গুরুত্ব পায়নি। এটা অত্যন্ত হতাশাজনক বলে মনে করে এনসিপি।
নির্বাচন প্রশ্নে সরকার কেবল একটি রাজনৈতিক দলের অবস্থান ও দাবিকেই বেশি প্রাধান্য দিচ্ছে বলে বারবার প্রতীয়মান হচ্ছে—এ কথা উল্লেখ করে এনসিপি আরও বলেছে, জুলাই ঘোষণাপত্র প্রণয়ন, জুলাই সনদ কার্যকর করা এবং বিচারের সুস্পষ্ট রোডম্যাপ ছাড়া জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন গণ-অভ্যুত্থানকে স্রেফ একটি ক্ষমতা হস্তান্তরের মাধ্যমে পরিণত করবে এবং রাষ্ট্র বিনির্মাণের জন–আকাঙ্ক্ষাকে অবদমিত করবে।
জনগণের দাবি তথা জুলাই সনদ রচনা ও কার্যকর করার আগে নির্বাচনের কোনো তারিখ ঘোষিত হলে তা জনগণ মেনে নেবে না বলে উল্লেখ করেছে এনসিপি। তাদের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘কাজেই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সংস্কারের বিষয়গুলোর ব্যাপারে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা ও জুলাই সনদ রচনা এবং কার্যকর করেই আসন্ন জুলাইকে যথাযথ মর্যাদায় স্মরণ করার উদ্যোগ নিতে সরকারকে জোর দাবি জানাচ্ছে এনসিপি।’
জুলাই ঘোষণাপত্র প্রণয়ন, মৌলিক সংস্কার বাস্তবায়নে জুলাই সনদ কার্যকর করা ও বিচারের রোডম্যাপ ঘোষণার পরই নির্বাচন সংক্রান্ত আলোচনা চূড়ান্ত হওয়া উচিত বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে এনসিপি।