পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ইমরান খানের ওপর হামলার প্রধান অভিযুক্ত ব্যক্তিকে দুটি পৃথক যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ১৫ লাখ রুপি জরিমানা করা হয়েছে। গুজরানওয়ালার একটি সন্ত্রাসবিরোধী আদালত গত শনিবার এ সাজা ঘোষণা করেছেন।

পাঞ্জাবের ওয়াজিরাবাদে ২০২২ সালের ৩ নভেম্বর পিটিআইয়ের বিক্ষোভের সময় এ হামলার ঘটনা ঘটে। নাভিদ বশীর নামের এক বন্দুকধারীর গুলিতে ইমরান খান, সিনেটর ফয়সাল জাভেদসহ কয়েকজন আহত হন। এ ঘটনায় পিটিআইয়ের একজন কর্মী নিহত হন। পুলিশ ঘটনাস্থলেই প্রধান হামলাকারীকে গ্রেপ্তার করে।

ইমরান খান তখনকার ফেডারেল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ জোট সরকারকে ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকার অভিযোগ করেন। ঘটনাটির প্রথম এফআইআর ৭ নভেম্বর ওয়াজিরাবাদের সিটি থানায় দায়ের করা হয় এবং ১৯৯৭ সালের সন্ত্রাসবিরোধী আইনের আওতায় একটি যৌথ তদন্ত দল (জেআইটি) গঠন করা হয়।

সন্ত্রাসবিরোধী আদালতের বিচারক মোহাম্মদ নাঈম সেলিম গত শনিবার শুনানি শেষে মামলার রায় ঘোষণা করেন। আদালত প্রধান অভিযুক্ত নাভিদকে হত্যা ও সন্ত্রাসবাদের অভিযোগে দুটি পৃথক যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। অপর দুই অভিযুক্ত তৈয়ব জাহাঙ্গীর বাট ও ওয়াকাস খালাস পান।

গুজরানওয়ালা কেন্দ্রীয় কারাগারের সুপারিনটেনডেন্টের উদ্দেশে জারি করা সাজা কার্যকরের ওয়ারেন্ট অনুযায়ী, নাভিদকে পাকিস্তান দণ্ডবিধির (পিপিসি) ৩০২বি ধারা (পরিকল্পিত হত্যা) এবং সন্ত্রাসবিরোধী আইনের (এটিএ) ৭এ ধারা (সন্ত্রাসমূলক কর্মকাণ্ডের জন্য শাস্তি) অনুযায়ী পৃথকভাবে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইমর ন খ ন

এছাড়াও পড়ুন:

‘আমরার এইতা দিবস-টিবস দিয়া কী অইব’

ঘড়ির কাঁটায় তখন দুপুর ২টা ২০ মিনিট। মাথার ওপর প্রখর রোদের উত্তাপ। প্রচণ্ড গরমে ত্রাহি অবস্থায় একটু বিশ্রাম নিতে গাছের ছায়ার খোঁজে ক্লান্ত পথিক। এমন সময় ঘর্মাক্ত শরীরে একটি ভবন নির্মাণের কাজ করতে দেখা গেল কয়েকজন শ্রমিককে। তাদের একজন তোঁতা মিয়া, অপরজন হাবিবুল।

হাবিবুল পাথর ভরেই যাচ্ছেন, তোঁতা মিয়া সেগুলো মাথায় করে একের পর এক টুড়ি ছাদ ঢালাইয়ের জন্য পৌঁছে দিচ্ছেন নির্দিষ্ট স্থানে। সেখানেও বালু-পাথরের মিশ্রণ করছেন আরও কয়েকজন। তাদের কর্মযজ্ঞের এক ফাঁকে কথা হয় তোঁতা মিয়ার সঙ্গে।

আলাপকালে তোঁতা মিয়া বলেন, ‘সারাদিন কাম (কাজ) কইরা ৫০০ ট্যাহা (টাকা) হাজিরা পাই। এইডি দিয়া কোনোমতে বউ-পুলাপান নিয়া দিন পার করতাছি। মে দিবস-টিবস কী কইতারতাম না। আমরার মতো গরিব মানুষ কাম না করলে পেডে ভাত জুটতো না এইডাই কইতারবাম।’

গতকাল বুধবার ঈশ্বরগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণকাজ করার সময় এসব কথা বলেন তোঁতা মিয়া (৪৫)। তাঁর বাড়ি ময়মনসিংহ সদর উপজেলার আকুয়া এলাকায়। এ সময় কথা হয় আরেক নির্মাণ শ্রমিক একাদুল মিয়ার সঙ্গে। একাদুলও জানেন না মে দিবস কী। তিনি বলেন, ‘এই কাম কইরা খাইয়া-না খাইয়া বউ-পুলাপান লইয়া কোনোরহমে দিন পার করতাছি। বর্তমান বাজারো জিনিসপাতির দাম বাড়লেও আমরার মজুরি বাড়ে না। পাঁচ বছর আগেও যা পাইতাম, অহনও তাই পাই।’ তিনি বলেন, ‘কয়েক ট্যাহা সঞ্চয় করবাম এই বাও (উপায়) নাই। অসুখ অইয়া চার দিন ঘরে পইড়া থাকলে না খাইয়া থাহন লাগব। আমরার এইতা দিবস-টিবস দিয়া কী অইব?’

আজ বৃহস্পতিবার মহান মে দিবস। শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের এই দিনটি সারাবিশ্বের শ্রমিক শ্রেণির কাছে গুরুত্বপূর্ণ। বহির্বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও দিবসটি পালিত হয় নানা আয়োজনে। কিন্তু যাদের অধিকার আদায়ের জন্য এ দিনটি পালন করা হয়– তারাই জানেন না দিবসটি সম্পর্কে। তাদের আরেকজন দিনমজুর রাজন মিয়া। রাজন জানান, এসব দিবসে তাদের মতো গরিব মানুষের কোনো লাভ-লোকসান নেই। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ