রাজধানীর উত্তরার আজমপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থীদের পরিবহনকারী ক্ষণিকা বাসে ভাঙচুর চালিয়েছে একদল শিক্ষার্থী। এ ঘটনায় বাসের ড্রাইভারসহ পাঁচজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। গাড়ির জানালাগুলো ভেঙে দেওয়া হয়েছে। 

মঙ্গলবার দুপুর ১টা ১৫ মিনিটে উত্তরায় বিএনএস সেন্টারের সামনে এ ঘটনা ঘটে। আহতরা বর্তমানে ক্রিসেন্ট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ ঢাবি শাখার এক বিজ্ঞপ্তিতে এ ঘটনায় নিন্দা জানানো হয়েছে। 

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা বলেন, রোববার দুপুরে উত্তরা বিএনএস সেন্টারের সামনে রাস্তা পারাপারের সময় একজন এসএসসি পরীক্ষার্থী বিআরটিসি ট্রাকের ধাক্কায় নিহত হয়। সে ঘটনার প্রতিবাদে আশপাশের এলাকার স্কুল শিক্ষার্থীরা রাস্তা অবরোধ করেছিল। এসময় ক্ষণিকা বাসে হামলা চালায় তাদের একদল শিক্ষার্থী। 

ঘটনার কয়েকটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়েছে। এতে দেখা যায়, স্কুলের ড্রেস পরিহিত একদল শিক্ষার্থী বাসে ইটপাটকেল ছুঁড়ছে। অনেকে লাঠি দিয়ে বাসের জানালায় পেটাচ্ছে। ভেতরে শিক্ষার্থীরা অবরুদ্ধ হয়ে চিৎকার করছে। তাদের হামলায় বাসের জানালাগুলো ভেঙে পড়ে। এ সময় হামলাকারীদের অনেকে বাঁশ-লাঠি বাসের ভেতরে ছুঁড়ে মারেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দিন আহমদ বলেন, এ ঘটনায় ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট থানায় জানানো হয়েছে। থানায় একটি জিডি করার কথা বলা হয়েছে।

প্রক্টর জানান, শুধু ঢাবির বাস নয়, হামলাকারী শিক্ষার্থীরা আরও অনেক বাসে হামলা চালিয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, হামলাকারীরা উত্তরার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: এ ঘটন

এছাড়াও পড়ুন:

ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব

রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে সীতা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে বিগত এক মাস ধরে অবস্থান করছেন একদল বন্যহাতি। ১৭ (সতের) দলের এই বন্যহাতির তাণ্ডবে এরইমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগান শ্রমিকদের ঘরবাড়ি, গাছপালা এবং বাগানের অভ্যন্তরে অবস্থিত কাঁচা সড়ক। 

 এদের তাণ্ডবে বাগানের ২নং সেকশনে বসবাসকারী চা শ্রমিকরা এরইমধ্যে নিজ নিজ বসতবাড়ি ছেড়ে কর্ণফুলি নদীর উত্তর পাড়ে অবস্থান নিয়েছে। এই সেকশনে থাকা বহু ঘর হাতির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ওয়াগ্গা টি লিমিটেডের পরিচালক খোরশেদুল আলম কাদেরী বলেন, “হাতির তাণ্ডবে মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩টায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগানের নিজস্ব বোট চালক সানাউল্লাহর বসতবাড়ি। এসময় তিনিসহ তার স্ত্রী-সন্তানেরা ঘর হতে বের হয়ে কোনরকমে প্রাণে রক্ষা পেয়েছে।”

বোট চালক সানাউল্লাহ বলেন, “সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে আমি হাতির গর্জন শুনতে পাই। এসময় একটি বড় হাতি আমার ঘর ভাঙার চেষ্টা চালায়। আমি হতবিহ্বল হয়ে যাই। সেসময় স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে ঘরের পেছন দিয়ে কোন রকমে পালিয়ে বোটে করে এপারে চলে আসি।” 

চা বাগানের টিলা বাবু চাথোয়াই অং মারমা বলেন, “বিগত এক মাস ধরে ১৭টি হাতির একটি দল বাগানে অবস্থান করছে। মাঝে মাঝে দলটি সীতা পাহাড়ে চলে গেলেও হঠাৎ বাগানে চলে এসে আসে এবং বাগানের গাছপালা, বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করে। আমাদের চা শ্রমিকরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।”

ওয়াগ্গা চা বাগানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক আমিনুর রশীদ কাদেরী বলেন, “বিগত এক মাস ধরে হাতির একটি দল ওয়াগ্গা চা বাগানে অবস্থান নিয়েছে। তাদের দলে সদস্য সংখ্যা সতেরো ১৭টি। সম্প্রতি দুটি নতুন শিশু জন্ম নিয়েছে। শিশু হস্তী শাবককে আশীর্বাদ করার জন্য সীতা পাহাড়ের গভীর অরণ্য থেকে আরো একদল হাতি যোগদান করেছে।” 

হাতি খুবই শান্তিপ্রিয় জীব। নিরিবিলি পরিবেশ পছন্দ করে। অনেকে বলে থাকেন, মামারা বেরসিক বাদ্য বাজনা, বাঁশির সুর, গলাফাটা গান, গোলা বারুদ, ড্রামের শব্দ পছন্দ করে না। তারা কোলাহল এড়িয়ে চলে। 

গতকাল সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) স্বচক্ষে দেখা হলো। আমাদের টিলা বাবু চাই থোয়াই অং মারমা শ্রমিকদের নিয়ে পাহাড়ের উপর বাঁশির সুর তুলেছে। সুর ও বাদ্য বাজনা এড়িয়ে মামারা (হাতি) চা বাগান পেরিয়ে সদলবলে বাঁশবনের গভীর থেকে গভীরে হারিয়ে গেলো। হয়তো আবার ফিরে আসবে।

কাপ্তাই বন বিভাগের কাপ্তাই রেঞ্জ অফিসার ওমর ফারুক স্বাধীন বলেন, “দিন দিন হাতির আবাসস্থল ধ্বংস হওয়ার ফলে হাতি খাবারের সন্ধানে প্রায়ই লোকালয়ে এসে হানা দিচ্ছে। আমাদের উচিত হাতির আবাসস্থল ধ্বংস না করা।”

ঢাকা/রাঙামাটি/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • প্রধান শিক্ষকের অপসারণের দাবিতে নোয়াখালীতে শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ
  • ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব