বিয়ের প্রস্তুতি চলছে। ঘরভরা মেহমান। দুপুর গড়িয়ে বিকেল হতেই নাতি মো. বুলবুল হোসেনের বিয়ে। বাড়ির সবাই যখন ব্যস্ত, তখন ঘরের মধ্যে ধারালো দা দিয়ে ‘আত্মহত্যা’ করেন দাদা মো. মহব্বত আলী। মুহূর্তেই বিয়ে বাড়ির আনন্দ রূপ নিল বিষাদে।

গতকাল বুধবার বিকেলে পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার কাকড়াবুনিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত মহব্বত আলী (৮০) ওই গ্রামের সিংবাড়ি বাজার মসজিদের সাবেক মুয়াজ্জিন। তিনি কয়েক মাস ধরে মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন বলে স্বজনেরা বলছেন।

নাতি মো.

বুলবুল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর দাদা মহব্বত আলী সিংবাড়ি বাজার মসজিদে ২৬ বছর ধরে মুয়াজ্জিন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। কয়েক মাস ধরে তিনি মানসিক রোগে ভুগছিলেন। চিকিৎসকেরা তাঁকে চোখে চোখে রাখতে বলেছিলেন। গতকাল বাড়িতে তাঁর বিয়ের প্রস্তুতি চলছিল। বাড়িতে ফুফু, খালাসহ অনেক মেহমান ছিলেন। সবার অগোচরে দাদা দা দিয়ে নিজের গলায় নিজেই কোপ দিয়ে ‘আত্মহত্যা’ করেন। এর আগেও তিনি কয়েকবার আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন।

বড় ছেলে স্থানীয় সোনাপুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ফারুক হোসেন বলেন, কয়েক মাস ধরে তাঁর বাবা মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন। চিকিৎসকের পরামর্শে তাঁর চিকিৎসা চলছিল। বাড়িতে তাঁর ভাইয়ের ছেলের বিয়ের প্রস্তুতি চলছিল। দুপুরের দিকে বাবা হঠাৎ এমন কাণ্ড ঘটিয়ে ফেলবেন, কেউ বুঝতে পারেননি। রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁরা দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে গেছেন। কিন্তু তাঁকে বাঁচাতে পারেননি।

মির্জাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শামীম হাওলাদার প্রথম আলোকে বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

রাজশাহীতে পুলিশ দেখে পালাতে গিয়ে সাবেক কাউন্সিলরের মৃত্যু

রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক এক কাউন্সিলরের মৃত্যু হয়েছে। পরিবার বলছে, পুলিশ দেখে পালাতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে তিনি মারা যান। তবে পুলিশ বলছে, তারা অন্য কাজে এলাকায় গিয়েছিল, ওই কাউন্সিলরকে ধরতে যায়নি। গতকাল বুধবার দিবাগত রাতে নগরের দাসপুকুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

মারা যাওয়া ওই কাউন্সিলরের নাম কামাল হোসেন (৫৫)। তিনি নগরের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর এবং দাসপুকুর এলাকার বাসিন্দা। একসময় বিএনপির রাজনীতি করতেন। পরে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন। তবে দলে তাঁর কোনো পদ–পদবি ছিল না।

গত ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর কামাল হোসেনের নামে চারটি মামলা হয়। তিনি এলাকায় থাকলেও গা ঢাকা দিয়ে থাকতেন। পরিবারের ধারণা, মামলা থাকায় পুলিশ দেখে ভয় পেয়ে কিংবা হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।

কামালের ছেলে সোহান শাকিল প্রথম আলোকে বলেন, ‘রাতে আমাদের এলাকায় পুলিশ এসেছিল। পুলিশ দেখে আমার বাবা তবজুল হক নামের এক ব্যক্তির বাড়িতে ঢুকে সিঁড়ি দিয়ে ছাদে উঠতে যান। তখন সিঁড়িতে অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং সেখানেই মারা যান।’

নগরের রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশরাফুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘কামাল হোসেনের বিরুদ্ধে চারটি মামলা আছে। তিনি আত্মগোপনে থাকতেন। শুনেছি রাতে তিনি মারা গেছেন।’

ওসি বলেন, রাতে দাসপুকুর এলাকায় পুলিশ গিয়েছিল। তবে কামালকে ধরতে যায়নি। পুলিশ গিয়েছিল অন্য কাজে। কিন্তু পুলিশ দেখে পালাচ্ছিলেন কামাল হোসেন। তখন হৃদ্‌রোগে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। লাশ পরিবারের কাছেই আছে। তারা দাফনের ব্যবস্থা করছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ