চাঁপাইনবাবগঞ্জে বীর মুক্তিযোদ্ধার বক্তব্যে বাধার ঘটনায় মুক্তিযোদ্ধা সংসদের প্রতিবাদ
Published: 3rd, May 2025 GMT
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা পুলিশ আয়োজিত সুধীসমাবেশে বীর মুক্তিযোদ্ধার বক্তব্যে বাধা দেওয়ার ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা ইউনিট কমান্ড। আজ শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শহরের নিউমার্কেট এলাকায় জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনে এক সংবাদ সম্মেলন থেকে এই প্রতিবাদ জানানো হয়। এরপর প্রতিবাদ সভা করেন তাঁরা।
মুক্তিযোদ্ধা সংসদের জেলা ইউনিটের সাবেক কমান্ডার মো.
লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করা হয়, ‘গত ২৬ এপ্রিল চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের শহীদ সাটু অডিটরিয়ামে জেলায় সার্বিক আইনশৃঙ্খলা বিষয়ে সুধীসমাবেশের আয়োজন করে জেলা পুলিশ। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন রাজশাহী রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মোহাম্মদ শাহজাহান। আমন্ত্রিত ছিলেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষজন। অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত হয়ে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা ইউনিটের সাবেক সহকারী কমান্ডার মো. তরিকুল আলম বক্তব্য দিতে গিয়ে শুরুতেই বলেন, “আমার অনুরোধ, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে ৫ আগস্টকে মেলাবেন না।” এ কথা বলার সঙ্গে সঙ্গে সামনের সারিতে বসা জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির ও সাবেক সংসদ সদস্য লতিফুর রহমান উত্তেজিত হয়ে আঙুল উঁচিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা তরিকুল আলমের দিকে তেড়ে আসেন এবং চিৎকার করে এর প্রতিবাদ জানিয়ে বক্তব্য থামাতে বলেন। এ সময় আরও কেউ কেউ চেঁচামেচি শুরু করেন। একজন তাঁকে মাইক্রোফোন দিয়ে দিতে বলেন। এ সময় একজন পুলিশকে তাঁর হাত থেকে মাইক্রোফোন নিয়ে নিতে দেখা যায়। তরিকুল ইসলাম তাঁর বক্তব্য শেষ করার জন্য অনুরোধ জানালেও তাঁকে বক্তব্য দিতে দেওয়া হয়নি। পুলিশও নীরব ভূমিকা পালন করে। বিষয়টি আমাদের জন্য লজ্জাজনক ও হতাশাজনক। আমরা আপনাদের জানাতে চাই, মুক্তিযুদ্ধ ও অভ্যুত্থান এক নয়।’
সংবাদ সম্মেলনে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি বিরূপ আচরণ ও কটাক্ষের তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে তাঁরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানান।
আরও পড়ুনপুলিশের সুধীসমাবেশে বীর মুক্তিযোদ্ধার বক্তব্যে জামায়াত নেতার বাধা২৭ এপ্রিল ২০২৫উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প ইনব বগঞ জ কম ন ড
এছাড়াও পড়ুন:
কখন ক্ষেপণাস্ত্র এসে পড়ে, সেই আতঙ্কে দিন কাটছে তেহরানের মানুষের
ইরানের চলমান পরিস্থিতি বোঝাতে বিবিসির সঙ্গে কথা বলা বেশির ভাগ মানুষ একটাই কথা বলেছেন, ‘আটকে গেছি।’
বিবিসি নিউজ পার্সিয়ানকে তেহরানের এক বাসিন্দা বলেন, ইসরায়েলের টানা তিন দিনের হামলার পর পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে সবাই কোনো না কোনোভাবে শহর ছাড়ার চেষ্টা করছে।
গতকাল রোববার সকাল থেকে শহরের বিভিন্ন পেট্রোলপাম্পে লম্বা লাইন দেখা যায়। নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে অনেকে শহর ছেড়ে দূরে নিরাপদ এলাকায় যেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তীব্র যানজটে তারা প্রদেশের সীমানাই পার হতে পারেননি।
তেহরানের এক বাসিন্দা বিবিসিকে বলেন, ‘তেহরান এখন একদম নিরাপদ নয়। ইসরায়েলি হামলার আগে আমরা কোনো সাইরেন বা সরকারি সতর্কতা পাই না। শুধু বিস্ফোরণের শব্দ শুনি আর প্রার্থনা করি, এবার যেন আমাদের বাসায় বোমা আঘাত না হানে। আর যাবই বা কোথায়? এখন আর কোনো জায়গাকে নিরাপদ মনে হয় না।’
তেহরান থেকে অন্য একটি প্রদেশে চলে যেতে পেরেছেন এমন একজন বলেন, ‘আমি এখনো ঠিক বুঝে উঠতে পারছি না, সত্যিই কি এক যুদ্ধক্ষেত্রে বাস করছি? কখন যে এই বাস্তবতা মেনে নিতে পারব, সেটাও জানি না।’
ওই ইরানি নাগরিক আরও বলেন, ‘এটা আমার যুদ্ধ নয়। যুদ্ধে কে জিতল, তা নিয়ে আমার মাথাব্যথা নেই। আমি শুধু আমার পরিবারকে নিয়ে টিকে থাকতে চাই।’
ইসরায়েল শুক্রবার থেকে ইরানে টানা কয়েকটি বিমান হামলা চালিয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে এটা সবচেয়ে বড় ধরনের হামলা। জবাবে ইরানও ইসরায়েলে পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে।
ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ বলছে, শুক্রবার থেকে এ পর্যন্ত অন্তত ২৪ জন নিহত হয়েছেন। অন্যদিকে ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের রোববার জানায়, ইসরায়েলের হামলায় সারা দেশে ২২৪ জন নিহত হয়েছেন।
একজন ইরানি নারী বিবিসিকে বলেন, ‘গত দুই রাত আমি ঘুমাতে পারিনি। খুব কঠিন সময় পার করছি।’
ওই নারী বলেন, এখনকার পরিস্থিতি তাঁকে ৮০–এর দশকের ইরান-ইরাক যুদ্ধের সময়কার দিনগুলোর কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে। তখন তিনি শিশু ছিলেন। বোমা পড়লেই দৌড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে ছুটে যেতেন।
ইসরায়েলি হামলার পর ইরানের কেরমানশাহ শহর থেকে ধোঁয়া উড়তে দেখা যায়