নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলার পিপরুল ইউনিয়নের ছান্দাবাড়ী গ্রামে শনিবার (৩ মে) গভীর রাতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে এক পরিবারের বসতঘর। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে এই আগুনের সূত্রপাত হয়েছে।
বরিবার (৪ এপ্রিল) সকালে ঘটনা সত্যতা নিশ্চিত করেছেন নলডাঙ্গা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ইনচার্জ হাবিবুর রহমান।
ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের কর্তা মৃত মেছের আলীর ছেলে বাবু (৪০) এবং তার স্ত্রী পারভিন আগুনে দগ্ধ হয়েছেন। বর্তমানে তারা নাটোর সদর হাসপাতালে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
নলডাঙ্গা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ইনচার্জ হাবিবুর রহমান জানান, আগুনে বাবুর ঘরের ৯টি ছাগল, নগদ ৩ লাখ টাকা, ফ্রিজ, চাল, গম, ভুট্টাসহ ঘরের সমস্ত আসবাবপত্র ও মালামাল পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। পরিবারটির সদস্যরা বর্তমানে শুধুমাত্র পরনের পোশাক নিয়ে বেঁচে আছেন।
এদিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন নলডাঙ্গা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো.
এলাকাবাসীর অভিযোগ, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারটি বর্তমানে চরম মানবেতর অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে। তারা দ্রুত সরকারি সহায়তা ও মানবিক সহযোগিতার জোর দাবি জানিয়েছেন।
ঢাকা/আরিফুল/এস
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর নলড ঙ গ পর ব র
এছাড়াও পড়ুন:
‘আমরা গরিব, তাই এইভাবে ছেলেডারে পঙ্গু কইরা দিল’
শাকিল ও হাসিবুল বারইকান্দি উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী। বন্ধুরা বসে গল্প করার সময় একজন অন্যজনকে গালি দেয়। এ নিয়ে প্রথমে তর্কাতর্কি, পরে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। লোকজন গিয়ে বুঝিয়ে ঝামেলা মিটমাট করে দেন। কিন্তু হাসিবুল এতে সন্তুষ্ট হয়নি। কারণ, সে সামাজিক ও রাজনৈতিক দিক থেকে
প্রভাবশালী। শাকিল দরিদ্র। প্রতিশোধ নেওয়ার পরিকল্পনা করে হাসিবুল।
ঘটনার দু’দিন পর শাকিলের বাড়িতে যায় হাসিবুল। এ সময় বাড়ির বাইরে বসে মোবাইল ফোনে গেম খেলছিল শাকিল। তাকে বেড়াতে নিয়ে যেতে চায়। কিন্তু শরীর ভালো না থাকায় রাজি হয়নি শাকিল। সঙ্গে সঙ্গে ধারালো রামদা দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপাতে শুরু করে। চিৎকার করে তার মাকে ডাকতে শুরু করে শাকিল। কিন্তু মা আসার আগেই কোপানো শেষ করে চলে যায় হাসিবুল। দায়ের কোপে শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম হয়। মাটিতে পড়ে কাতরাতে থাকে সে। এ ঘটনায় বাঁ পা কেটে ফেলতে হয়েছে শাকিলের। পঙ্গু শাকিল এখন হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে কাতরাচ্ছে।
শেরপুরের নকলা উপজেলার বারইকান্দি দক্ষিণপাড়া গ্রামে এ হামলার ঘটনা ঘটে গত ১৫ জুন বিকেলে। ওই গ্রামের ভ্যানচালক আমির মিয়ার ছেলে শাকিল (১৬)। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার চিকিৎসা চলছে। অভিযুক্ত হাসিবুল হাসান পাশের আদমপুর গ্রামের লালু বাদশার ছেলে।
প্রতিপক্ষ প্রভাবশালী হওয়ায় আতঙ্কে দিন কাটছে ভুক্তভোগী পরিবারের। দরিদ্র ভ্যানচালক বিচার চেয়ে ছেলের কাটা পা ব্যাগে ভর্তি করে নিয়ে গত বুধবার উপজেলা ও জেলার বিভিন্ন দপ্তরে যান। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনার ঝড়। অবশেষে পুলিশ সুপার আমিনুল ইসলাম আশ্বস্থ করলে গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে কাটা পা বাড়ির পাশে পুঁতে রাখা হয়।
কথা হয় ভুক্তভোগীর ফুফু ময়না বেগমের সঙ্গে। তিনি জানান, গত ১৫ জুন বিকেলে তাঁর ভাতিজা শাকিল বাড়ির বাইরে বসে মোবাইল ফোনে গেম খেলছিল। এ সময় হাসিবুল এসে তাকে বেড়াতে নিয়ে যেতে চায়। শাকিল রাজি হয়নি। এ সময় রামদা দিয়ে তাকে কোপাতে থাকে। তিনটি কোপ বাম পায়ের হাঁটুর ওপরে এমনভাবে লাগে যে, সব রগ কেটে যায়। পা ঝুলে পড়ে। তিনি বলেন, ‘ভাতিজা আমার মাটিতে পইরা গেলে পাষণ্ড হাতে ও শরীরে আরও বেশ কয়েকটা কোপ দিয়া চইলা যায়। এই সময় শাকিল চিৎকার কইরা কইতে থাকে, আম্মা আইলা না, আমারে মাইরা ফেলাইলো। এই শুইনা সবাই দৌড়াদৌড়ি করে বাইরে আইসা দেহি মাটিতে পইরা আছে। রক্তে ভাইসা গেছে।’ তাঁর ভাষ্য, দ্রুত শাকিলকে স্থানীয় হাসপাতাল নেওয়া হয়। অবস্থা খারাপ হওয়ায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে
ভর্তি করা হয়। সেখানে গত মঙ্গলবার পা কেটে ফেলেন চিকিৎসক।
ভুক্তভোগীর বাবা আমির আলী বলেন, ‘আমি বিচার চাই। আমার ছেলের কোনো অপরাধ নাই। আমরা গরিব, তাই এইভাবে ছেলেডারে পঙ্গু কইরা দিল।’ তিনি বলেন, ‘পা নিয়া এসপি স্যারের কাছে গেছিলাম। তিনি আশ্বাস দিছেন বিচার করব।’
মামলার পর থেকে গা ঢাকা দিয়েছে আসামি পক্ষের লোকজন। অভিযোগের ব্যাপারে বক্তব্য জানতে তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও কাউকে পাওয়া যায়নি।
নকলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিবুর রহমানের ভাষ্য, দু’জনের মধ্যে কথাকাটি হয়। পরে কুপিয়ে জখম করলে পা কেটে ফেলতে
হয়। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। আসামি ধরতে অভিযান চলছে।