নাটোর সদর উপজেলার দত্তপাড়া সেতু এলাকায় নাটোর-ঢাকা মহাসড়কে আজ বুধবার রাতে মানুষের একটি খণ্ডিত হাত পাওয়া গেছে। হাতটি সবুজ রঙের একটি পলিথিনে মোড়ানো ছিল। পাশে একই রঙের আরও দুটি পলিথিন পড়ে থাকলেও তাতে কিছু ছিল না। পুলিশের ধারণা, চলন্ত কোনো গাড়ি থেকে হাতটি ফেলে দেওয়া হতে পারে।

সদর থানা ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, আজ রাত আটটার দিকে দত্তপাড়া সেতুর কাছে তিনটি সবুজ রঙের পলিথিন পড়ে থাকতে দেখা যায়। বাতাসে একটি পলিথিন খুলে গিয়ে মানুষের একটি খণ্ডিত হাত বেরিয়ে আসে। অন্য দুটি পলিথিন বাঁধা। বাইরে থেকে কিছু দেখা যাচ্ছে না। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর সেখানে লোকজন ভিড় করেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সেটি উদ্ধার করে।

প্রত্যক্ষদর্শী কাওসার আহমেদ বলেন, হাতটি কবজির নিচ থেকে কাটা। পাঁচটি আঙুল থাকলেও বৃদ্ধাঙ্গুলির পাশে আরও একটি ছোট আঙুল দেখা যায়। হাতটি দেখে বয়স্ক মানুষের বলে মনে হয়েছে। দত্তপাড়া বাজারের ব্যবসায়ী হাসান আলী বলেন, গাড়ির মধ্য থেকে কেউ হয়তো দত্তপাড়া সেতুর নিচে নারদ নদে খণ্ডিত অংশ ফেলে দিয়েছিল। কিন্তু হাত রাখা পলিথিনগুলো সেতুতে ওঠার আগেই পড়ে যায়।

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুর রহমান বলেন, স্থানীয় লোকজনের কাছে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। পুলিশ হাতটির ব্যাপারে খোঁজখবর নেওয়া চেষ্টা করছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পল থ ন

এছাড়াও পড়ুন:

রবীন্দ্র জয়ন্তী, শিলাইদহ কুঠিবাড়িতে তিনদিনের উৎসব উদ্বোধন

কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার শিলাইদহের কুঠিবাড়িতে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৪তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে তিনদিনব্যাপী জাতীয় আয়োজনের উদ্বোধন করা হয়েছে। 

বৃহস্পতিবার (৮ মে) দুপুর ১২টায় অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। 

এ সময় তিনি বলেন, “জমিদারি সূত্রে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শিলাইদহে আসতেন। সেখানকার মানুষের সাথে তার আলাদা একটি দেয়া-নেয়ার সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল। সেটা ছিল জাগতিক ও ইন্টেলেকচুয়াল। রবীন্দ্রনাথের অনেক চিঠিপত্রে তিনি বলেছেন বাংলাদেশের প্রকৃতির টানের পাশাপাশি এদেশের একদল ভাবুক মানুষের সাথে তার যোগাযোগ ছিল। বিশেষ করে গগন হরকরা।”  

মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, “আমাদের দেশের নিজস্ব সংস্কৃতির প্রাথমিক অভিব্যক্তি হলো গান। আমাদের দেশের মানুষ যখন আনন্দ পায়, দুঃখ পায় কিংবা অনুভূতি জানাতে চায় তখন তাদের প্রাথমিক অভিব্যক্তি হয় গান। আমি এইগুলোকে শুধু গান হিসেবে না দেখে কবিতা ও দর্শন হিসেবে দেখতে বলবো। তাহলেই আমরা বুঝতে পারবো আমাদের এ অঞ্চলের দর্শন ও ভাবের গভীরতা কতটুকু ছিল।”

তিনি বলেন, “আমার চোখে আপনাদের অঞ্চলের সবচেয়ে বড় দার্শনিক ও গানের মানুষ হলো লালন ও সিরাজ।  আমরা যেমন রবীন্দ্র জয়ন্তী পালন করছি, নজরুল জয়ন্তী পালন করছি- তেমনি আমাদের হীনমন্যতা থেকে বেরিয়ে এসে নতুন বাংলাদেশে লালন ফকির ও হাসন রাজার অনুষ্ঠান জাতীয়ভাবে পালন করা উচিৎ বলে আমি মনে করি।”  

সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মফিদুর রহমানের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. ফরহাদ সিদ্দিক, ভাষা বিজ্ঞানী অধ্যাপক মনসুর মুসা, কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক তৌফিকুর রহমান বক্তব্য রাখেন। 

আলোচনা শেষে মূলমঞ্চে রবীন্দ্র সংগীত, কবিতা আবৃত্তি, দলীয় নৃত্য ও রবীন্দ্রনাথের লেখা নাটক পরিবেশন করবেন কুষ্টিয়া জেলা ছাড়াও জাতীয় পর্যায়ের রবীন্দ্র শিল্পীরা। এর আগে জেলা শিল্পকলা একাডেমির শিল্পীদের কন্ঠে জাতীয় ও রবীন্দ্র সংগীতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সুচনা করা হয়।

সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসন এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। এবারের আয়োজনে কুঠিবাড়ির মুলমঞ্চে প্রতিদিনই আলোচনা সভার পাশাপাশি রবীন্দ্র সংঙ্গীত, কবিতা আবৃত্তি,দলীয় নৃত্য ও রবীন্দ্রনাথের লেখা নাটক পরিবেশন করা হবে। সাথে কুঠিবাড়ী চত্ত্বরে বসেছে বিশাল গ্রামীণ মেলা। নানা রকম পসরা সাজিয়ে বসেছেন দোকানীরা।

এদিকে তিনদিনব্যাপী এই অনুষ্ঠানকে ঘিরে শিলাইদহ কুঠিবাড়ি আঙিনা হাজারো দর্শনার্থীদের পদচারনায় মুখর হয়ে উঠেছে। দর্শনাথীদের সুযোগ সুবিধা সৃষ্টির পাশাপাশি কুঠিবাড়িকে পুর্ণাঙ্গ পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার দাবি এই অঞ্চলের মানুষের।

জমিদারী দেখাশোনার জন্য ১৮৯১ সালে প্রথম এই কুঠিবাড়িতে আসেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। নিরিবিলি পরিবেশ, জমিদারী আর ব্যবসার কারণে বার বার কুষ্টিয়ার এই কুঠিবাড়িতে ফিরে আসতেন তিনি। শিলাইদহে কবির জীবনের বেশকিছু মূল্যবান সময় কেটেছে। এখানে বসে রচিত গীতাঞ্জলী কাব্যই রবীন্দ্রনাথকে এনে দিয়েছে নোবেল পুরষ্কার আর বিশ্বকবির মর্যাদা। এছাড়াও তিনি এখানে বসেই আমাদের জাতীয় সঙ্গীতসহ অসংখ্য কালজয়ী সাহিত্য রচনা করেছেন। কুঠিবাড়িতে সংরক্ষণ আছে সেসব দিনের নানা স্মৃতি।

ঢাকা/কাঞ্চন/টিপু 

সম্পর্কিত নিবন্ধ