রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছুরিকাঘাতে নিহত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছাত্রদল নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্যকে সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে নিজ গ্রামের কবরস্থানে সমাধিস্থ করা হবে।

বুধবার (১৪ মে) মধ্য রাতে উপজেলার ধুকুরিয়া বেড়া ইউনিয়নের সড়াতৈল জান্নাতুল বাকী কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে বলে পরিবার সূত্রে জানা গেছে।

নিহত শাহরিয়ার আলম সাম্য উপজেলার সড়াতৈল গ্রামের বিসিসিআই’র অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফখরুল আলম ফরহাদের ছেলে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার এ এফ রহমান হলের শিক্ষার্থী ও ছাত্রদলের হল শাখার সাহিত্য ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন।

আরো পড়ুন:

লক্ষ্মীপুরে মাদ্রাসাছাত্রকে হত্যার অভিযোগে মামলা, শিক্ষক কারাগারে

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
সাম্য হত্যা: তথ্য চেয়ে অনুরোধ তদন্ত কমিটির 

মঙ্গলবার (১৩ মে) দিবাগত রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় সাম্যকে ছুরিকাঘাত করে একদল দুর্বৃত্ত। পরে রক্তাক্ত অবস্থায় রাত ১২টার দিকে সহপাঠীরা তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সাম্যকে মৃত ঘোষণা করেন।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, শিক্ষাজীবনের শুরুতে সাম্য উল্লাপাড়া মোমোনা আলী বিজ্ঞান স্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হন। সেখান থেকে এসএসসি পাস করে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। কয়েক বছর আগে তার মা মারা গেছেন। সাম্যের বাবা ফকরুল আলম ঢাকার মিরপুরে রূপনগর আবাসিক এলাকায় ১৮ নম্বর সড়কে বহুতল ভবনের সপ্তম তলায় নিজস্ব ফ্লাটে থাকেন। চার ভাইয়ের মধ্যে সাম্য সবার ছোট। তার বড় ভাই আমিরুল ইসলাম সাগর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। সাম্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার এ এফ রহমান হল শাখা ছাত্রদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক সাম্য হলের ২২২ নম্বর কক্ষে থাকতেন।

রাত ১০ টার দিকে স্থানীয় ইউপি সদস্য নজরুল ইসলাম জানান, শাহরিয়ার আলম সাম্যসহ ফখরুল আলম ফরহাদ ২০১২ সাল থেকে পরিবার ঢাকায় বসবাস করেন। ফরহাদের চার ছেলের মধ্যে সাম্য সবার ছোট। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে জানাজা শেষে সন্ধ্যার পরে সাম্যের মরদেহ সড়াতৈল গ্রামে আনা হয়েছে। সড়াতৈল জান্নাতুল বাকী কবরস্থান ঈদগাহ মাঠে নামাজে জানাজা শেষে সেখানে দাফন করা হবে।

সাম্যর চাচা কায়সার উল আলম বলেন, ‘‘যখন টেলিভিশনে ভাতিজা সাম্যর হত্যার সংবাদ পেয়ে গ্রামবাসী ও স্বজনদের ফোন আসতে থাকে। তারা বাড়িতে ভিড় করে। বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া এমন সম্ভাবনাময় টগবগে তরুণকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হবে আমরা ভাবতে পারিনি। ভাবতেই পারছি না, আমার ভাতিজার সঙ্গে আর কখনো কথা হবে না। বাড়ি আসল ঠিক কিন্তু লাশ হয়ে।’’

সাম্যর বন্ধু হিমেল বলেন, ‘‘সাম্য প্রতি বছর গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে আসত। গ্রামের মুরুব্বিদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করতো। এমন বিনয়ী নম্র-ভদ্র একটা ছেলেকে এভাবে খুন করা হবে এটা আমরা মেনে নিতে পারছি না। সাম্য আর বাড়িতে আসবে না, এটা ভাবতেই কষ্ট হচ্ছে।’’

সাম্যর চাচি তানিয়া খাতুন বলেন, ‘‘প্রতি বছর দুই-তিনবার সাম্য গ্রামের বাড়িতে আসত। তার সঙ্গে আমাদের অনেক স্মৃতি রয়েছে। আজ বাড়িতে এসেছে কিন্তু আর কথা বলছে না সাম্য।’’ স্বজন ও প্রতিবেশীরা সাম্য হত্যার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার ও শাস্তি দাবি জানিয়েছেন।

জেলা ছাত্রদলের সভাপতি জুনায়েদ হোসেন সবুজ বলেন, ‘‘দেশের যে কোনো আন্দোলনে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরাই বেশি ত্যাগ স্বীকার করেছে। অত্যাচার-নির্যাতনের শিকার আমরাই বেশি হয়েছি। অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেও আমাদের নেতাকর্মীদের হত্যা করা হচ্ছে। দ্রুত হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও শাস্তি দাবি করছি।’’
 

ঢাকা/রাসেল/বকুল 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর হত য ছ ত রদল র ল আলম

এছাড়াও পড়ুন:

সাম্যর গ্রামে শোকের ছায়া, মরদেহের অপেক্ষায় স্বজনেরা

রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছুরিকাঘাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছাত্রদল নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্যের (২৫) মৃত্যুর ঘটনায় গ্রামের বাড়ি সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার সড়াতৈল গ্রামে বেদনাবিধুর পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে। এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। এমন মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না আত্মীয়-স্বজনসহ এলাকাবাসী। সাম্যের মরদেহের অপেক্ষায় রয়েছেন তারা। 

নিহত শাহরিয়ার আলম সাম্য সড়াতৈল গ্রামের ফরহাদ সরদারের ছেলে। ঢাবির শিক্ষা ও গবেষণা বিভাগের মাস্টার্সের  শিক্ষার্থী। তিনি স্যার এ এফ রহমান হল শাখা ছাত্রদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক ছিলেন। 

বুধবার (১৪ মে) খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নিহত শাহরিয়ার আলম সাম্য উল্লাপাড়ার মোমেনা আলী বিজ্ঞান স্কুল থেকে এসএসসি পাস করেন। মেধাবী ছাত্র ছিলেন তিনি। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হন। তার মা কয়েক বছর আগে মারা গেছেন। চার ভাইয়ের মধ্যে তিনি সবার ছোট। পরিবারের সবাই ঢাকায় বসবাস করেন।

নিহত সাম্যের চাচা কাউসার আলম বলেন, ‘‘চার সন্তান নিয়ে তার ভাই ঢাকাতেই বাস করেন। সাম্যদের পরিবারের সবাই ঈদ ও বিশেষ কোনো আয়োজনে গ্রামে আসতো। গত মঙ্গলবার (১৩ মে) রাত ১টার দিকে জানতে পারি সাম্যকে খুন করা হয়েছে। জানি না কোন অপরাধে আমার ভাতিজাকে খুন করা হলো?’’

ভাতিজার মরদেহের অপেক্ষা করছেন জানিয়ে কাউসার আলম বলেন, ‘‘ঢাকায় জানাজা শেষে মরদেহ গ্রামের বাড়িতে এনে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে। আমরা সবাই শেষবারের মতো তাকে দেখার অপেক্ষায় আছি।’’

স্থানীয় ইউপি সদস্য নজরুল ইসলাম বলেন, ‘‘সাম্য অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল। সড়াতৈল জান্নাতুল বাকী কবরস্থানে সাম্যর জন্য কবর খোড়া হচ্ছে।’’

এদিকে, শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যার প্রতিবাদে সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজ ছাত্রদলের উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে। হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তারসহ ফাঁসির দাবি জানিয়েছেন নেতাকর্মীরা।

অদিত্য//

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নিজ গ্রামের কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন ঢাবি শিক্ষার্থী সাম্য
  • সাম্যর গ্রামে শোকের ছায়া, মরদেহের অপেক্ষায় স্বজনেরা