তিন দফা দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো সড়কে অবস্থান করছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা। তাদের সঙ্গে আছেন শিক্ষকেরাও। দাবি আদায়ে কাকরাইল মসজিদের সামনের রাস্তায়  রাত কাটিয়েছেন তারা। তিন দফা পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণাও দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। 

বৃহস্পতিবার (১৫ মে) সকাল সাড়ে ১০টায় সরজমিনে দেখা যায়, এখনও সড়কেই অবস্থান করছেন তারা। আন্দোলনকারীদের অবস্থানের কারণে কাকরাইল মোড় দিয়ে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। ওই এলাকায় তৈরি হয়েছে যানজট। 

এদিকে, পুলিশও সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। 

এর আগে বুধবার বেলা ১১টায় তিন দফা দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন অভিমুখে ‘লং মার্চ টু যমুনা’ শুরু করেন জবির শিক্ষক- শিক্ষার্থীরা। লং মার্চটি গুলিস্থান, মৎস্য ভবন পার হয়ে কাকরাইল মসজিদের সামনে আসলে ১২টা ৪০ মিনিটে পুলিশ লাঠিচার্জ, টিয়ারগ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশি কিছু শিক্ষক শিক্ষার্থী আহত হন। এরপর থেকে ওখানে অবস্থান নিয়ে কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। 

এরমধ্যে গতকাল রাত ১০টার দিকে ঘটনাস্থলে আসেন তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। তিনি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন।

এ সময় বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের একাংশ ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগান দেন এবং ভিড় থেকে কেউ একজন তাকে লক্ষ্য করে পানির বোতল ছুড়ে মারেন।

রাত ১২টার দিকে এই প্রসঙ্গ টেনে শিক্ষার্থীদের পক্ষে ব্রিফ করেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সদস্যসচিব সামসুল আরেফিন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ারও ঘোষণা দেন তিনি। 

তিনি বলেন, “উপদেষ্টা মহোদয় যখন ব্রিফ করছিলেন তখন একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে যায়। জবি শিক্ষার্থীরা মনে করে, এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার জন্য আমরা দায়ী নই। আমরা এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করছি, তবে এর দায় সরকারকে নিতে হবে। আমাদের দাবি যদি মেনে নেওয়া হতো, তাহলে আমরা এখানে আসতাম না, আর এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাও ঘটতো না।”

তিনি বলেন, “এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাকে কেন্দ্র করে যখন উপদেষ্টা চলে যান, তাতে মনে হয়, তিনি ব্যক্তিগত ক্ষোভকে প্রাধান্য দিয়েছেন। আমরা তার ব্যক্তিগত ক্ষোভকে প্রাধান্য দেওয়াকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করি।” 

শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবি হলো—আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর জন্য ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে আবাসন বৃত্তি কার্যকর করতে হবে।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ বাজেট কাটছাঁট না করেই অনুমোদন করতে হবে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ পরবর্তী একনেক সভায় অনুমোদন করে অগ্রাধিকার প্রকল্পের আওতায় বাস্তবায়ন করতে হবে।

ঢাকা/সুকান্ত/ইভা 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপদ ষ ট অবস থ ন

এছাড়াও পড়ুন:

রাইজিংবিডিতে সংবাদ প্রকাশ: ডেরা রিসোর্টের লাইসেন্স বাতিল

মানিকগঞ্জের ঘিওরের বালিয়াখোড়ায় অবস্থিত ডেরা রিসোর্ট এন্ড স্পা সেন্টারের নানা অনিয়ম নিয়ে রাইজিংবিডিতে ‘কবরস্থানে হরিণের খামারসহ নানা অনিয়মের আখড়া ডেরা রিসোর্ট’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পর প্রতিষ্ঠানটির লাইসেন্স বাতিল করেছে বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়। একইসঙ্গে ডেরা রিসোর্টে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করতে মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 

বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর)  বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সহকারী নিয়ন্ত্রক (সিনিয়র সহকারী সচিব) শেখ রাশেদুজ্জামান স্বাক্ষরিত এক নির্দেশনা পত্রে এ তথ্য জানানো হয়েছে। 

জানা গেছে, ডেরা রিসোর্ট এন্ড স্পা সেন্টার ২০২২ সালের ১৮ ডিসেম্বর লাইসেন্স প্রাপ্তির আবেদন করেন। নানা অনিয়মের কারণে তাদের লাইসেন্স নামঞ্জুর করা হয়েছে। রিসোর্টের লাইসেন্স না থাকায় প্রশাসনকে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 

২০২৫ সালের ১৪ জানুয়ারি ‘ফসলি জমি দখল করে ডেরা রিসোর্ট নির্মাণ, বিপাকে কৃষক’; ১৯ মার্চ ‘ছাড়পত্র ছাড়াই চলছে ডেরা রিসোর্ট, তদন্ত কমিটি গঠন’ শিরোনামে দুটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে রাইজিংবিডি। গত ১৩ সেপ্টেম্বর ‘কবরস্থানে হরিণের খামারসহ নানা অনিয়মের আখড়া ডেরা রিসোর্ট’ শিরোনামে প্রতিবেদনটি প্রকাশের পর বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয় ডেরার লাইসেন্স নামঞ্জুর করে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন। 

সুশাসনের জন্য নাগরিক মানিকগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ইন্তাজ উদ্দিন বলেন, “অনলাইন নিউজ পোর্টাল রাইজিংবিডিতে ডেরা রিসোর্ট নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলোতে সাধারণ মানুষের ক্ষোভ ও ভোগান্তি তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদক অনুসন্ধান করে ডেরা রিসোর্টের নানা অনিয়ম তুলে এনেছেন। প্রতিবেদন প্রকাশের পর প্রশাসন লাইসেন্স বাতিল করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে এটি ভালো উদ্যোগ। তবে এসব নির্দেশনা কাগজে কলমের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে বাস্তবায়ন করাটাই বড় কাজ। নির্দেশনা বাস্তবায়ন হলে সুশাসন নিশ্চিত হবে।” 

মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসক ড. মানোয়ার হোসেন মোল্লা বলেন, “মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার কপি পেয়েছি। সে অনুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

ডেরা রিসোর্ট এন্ড স্পা সেন্টারের ব্যবস্থাপক ওমর ফারুক বলেন, “লাইসেন্সের বিষয়ে কোন নোটিশ এখনও পাইনি আমরা। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার বিষয়েও জানা নেই। যদি লাইসেন্স বাতিল করে থাকে, তাহলে আমরা আইনিভাবে বিষয়টি সমাধান করব।”

এ বিষয়ে জানতে বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সকালে এশিউর গ্রুপের অঙ্গসংগঠন ডেরা রিসোর্ট এন্ড স্পা সেন্টারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শেখ সাদীর মোবাইলে ফোন করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

ঢাকা/চন্দন/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ