চার দাবিতে কেন্দ্রীয়ভাবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলন আজ আরও বেগবান হয়েছে। আন্দোলন বেগবান করতে ক্যাম্পাস থেকে বাসে করে কাকরাইল মোড়ে আসছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এখন পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৫টি বাসে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা এসেছেন। ক্যাম্পাস থেকে কিছুক্ষণ পরপর বাস ছাড়ছে কাকরাইলের উদ্দেশ্যে। 

বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা ৩০ মিনিট থেকে একে একে ২৫টি বাস, যার মধ্যে ৩টি ছিল দোতলা, কাকরাইল মোড়ে এসে পৌঁছায়। এসব বাসে প্রায় কয়েক হাজার শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারী অংশ নেন। আন্দোলনের মূল কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠে প্রধান বিচারপতির বাসভবনের সামনের সড়ক ও কাকরাইল মসজিদ সংলগ্ন এলাকা।

এ সময় শিক্ষার্থীরা ‌‘আবাসন চাই, বঞ্চনা নয়’, ‘বাজেট কাটছাঁট চলবে না’, ‘হামলার বিচার চাই’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন। প্রায় ২৪ ঘণ্টা ধরে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কাকরাইলে অবস্থান করছে। এতে অনেক শিক্ষার্থী ক্লান্ত হলেও আন্দোলন থেকে সরেনি কেউ। কেউ কেউ রাতভর রাস্তায় ঘুমিয়ে আজ সকালেও অবস্থান করছেন।

রসায়ন বিভাগের ২০২০-২১ সেশনের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম বলেন, আমরা বুধবার থেকে একবিন্দু না নড়ে রাস্তায় আছি। কেউ বাসায় ফিরে যায়নি। চারটি ন্যায্য দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা এখানেই থাকব।

মার্কেটিং বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের সাবেক শিক্ষার্থী এবং জবি বিএনসিসির সাবেক ইনচার্জ সোহেল রানা বলেন, ‘আমরা শুধু নিজেদের না, পরবর্তী প্রজন্মের জবিয়ানদের ভবিষ্যতের জন্য লড়ছি। দয়া করে আমাদের আন্দোলনকে রাজনীতি বলে চালিয়ে দেবেন না। এটা ন্যায্য অধিকারের জন্য লড়াই।’

শিক্ষার্থীদের চার দফা দাবি হলো- বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর জন্য ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে আবাসন বৃত্তি চালু করা, জবির প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ বাজেট কাটছাঁট না করে অনুমোদন, দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ একনেক সভায় পাশ ও বাস্তবায়ন, ১৪ মে শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের অতর্কিত হামলার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো.

রইস উদ্দিন বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত প্রশাসন থেকে দাবি পূরণের নিশ্চয়তা না আসবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা রাজপথ ছাড়ব না।

বুধবার বেলা ১১ টায় তিন দফা দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন অভিমুখে লং মার্চ শুরু করে শিক্ষক শিক্ষার্থী। লং মার্চটি গুলিস্থান, মৎস্য ভবন পার হয়ে কাকরাইল মসজিদের সামনে পৌঁছলে পৌনে ১টার সময় পুলিশ শিক্ষার্থীদের ওপর টিয়ারগ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। এ সময় ছত্রভঙ্গ করতে গরম পানি ছোড়ে। শিক্ষার্থীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে গেলে শিক্ষার্থীদের ওপর লাঠিচার্জ করে পুলিশ। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকসহ শতাধিক আহত হয়েছেন।

পরে রাতে উপদেষ্টা মাহফুজ আলম সামনে শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে বিফ্রিং করতে আসেন। তাঁর বিফ্রিংয়ে অসন্তুষ্ট হন শিক্ষার্থীরা। এ সময় উপদেষ্টাকে উদ্দেশ করে ভুয়া ভুয়া স্লোগান দিতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। বক্তৃতার একপর্যায়ে তাঁকে লক্ষ্য করে আন্দোলনকারীদের মধ্য থেকে বোতল ছুড়ে মারেন একজন। উপদেষ্টা বিফ্রিং বন্ধ করে চলে যান। 

এদিকে উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের বক্তব্যে অসন্তুষ্ট জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার জন্য সিদ্ধান্ত নেয়। কাকরাইল মসজিদের সামনে অবস্থান নিয়ে করছেন শিক্ষার্থীরা।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: উপদ ষ ট র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

দুপুরে সংবাদ সম্মেলন ডে‌কে‌ছে সরকার

অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে সোমবার (৩ নভেম্বর) দুপুরে সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়েছে।

আজ দুপুর ১২টায় প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের করবী হলে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।

রবিবার (২ নভেম্বর) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে এ তথ্য জানানো হয়। 

শুধু বৈধ নিরাপত্তা পাশধারী স্বীকৃত সাংবাদিকরা এতে অংশ নিতে পারবেন। 

প্রেস উইং থেকে  স্বীকৃত সাংবাদিকদের সোমবার দুপুর ১২টায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত থাকার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ