আটঘরিয়ায় জামায়াতের কেউ নামাজ পড়াতে পারবেন না, হুঁশিয়ারি বিএনপি নেতার
Published: 18th, May 2025 GMT
পাবনার আটঘরিয়ায় কোনো মসজিদে জামায়াতের কোনো মুয়াজ্জিন আজান দিতে পারবে না এবং জামায়াতের কোনো ইমাম নামাজ পড়াতে পারবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও পাবনা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান হাবিব।
শনিবার বিকেলে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আটঘরিয়ায় জামায়াত-বিএনপির সংঘর্ষে আহত নেতাকর্মীদের দেখতে গিয়ে এ কথা বলেন তিনি। তার বক্তব্যের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
ভিডিওতে হাবিবুর রহমান বলেন, ‘দল যেটা সিদ্ধান্ত নেবে, সেটা তো নেবেই। তার সঙ্গে আমার কোনো দ্বিমত নেই। কিন্তু আমি আজ বলবো, ভবিষ্যৎ তো পরে। আটঘরিয়ায় কোনো মসজিদে জামায়াতের কোনো মুয়াজ্জিন আজান দিতে পারবে না, জামায়াতের কোনো ইমাম ইমামতি করতে পারবে না। গত শুক্রবার দেবোত্তর বাজার জামে মসজিদে জুম্মার নামাজ পড়তে পারেনি মানুষ। তালা দিয়ে পালিয়েছে। কতটা ন্যক্কারজনক ঘটনা।’
তিনি আরও বলেন, ‘তারা মিথ্যা কথা বলে। এদের পেছনে নামাজ হয় না। এরা স্বাধীনতাবিরোধী রগ কাটা গ্রুপ। এরা বাংলাদেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না। পাকিস্তানের দোসর ছিল। তাই আটঘরিয়াবাসীকে আহ্বান জানাবো এদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান।’
জামায়াতের অফিসে কোরআন ও হাদিসের বই পোড়ানোর বিষয়ে বিএনপির এ নেতা বলেন, আমাদের নেতাকর্মীরা কোরআন পোড়ায়নি। তারা (জামায়াত) নিজেরাই কোরআন পুড়িয়েছে। বিএনপির কোনো নেতাকর্মী কোরআন পোড়াতে পারে না- এটা আমি দায়িত্ব নিয়ে বলতে পারি। যদি বিএনপির নেতাকর্মীদের কোরআন পোড়ানোর ভিডিও ফুটেজ দেখাতে পারেন তাহলে সব দায়দায়িত্ব আমি নেব। আর আমাদের যে একশটি মোটরসাইকেল ভাঙছে তার ক্ষতিপূরণ দিতে হবে তাদের।
এ বিষয়ে আটঘরিয়া উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা নকীবুল্লাহ সমকালকে বলেন, ‘হাবিব সাহেব বিএনপির একজন দায়িত্বশীল হয়ে আজান ও ইমামতি নিয়ে এত বড় একটি ন্যক্কারজনক বক্তব্য দিয়েছেন এটার জন্য তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। ওনার এই বক্তব্য মানুষ ভালোভাবে নেয়নি। সবাই ধিক্কার জানিয়েছে। মিথ্যা কথা বলে তিনি নাটক রচনা করছেন।’
তিনি অভিযোগ করেন, ‘৫ আগস্টের পর আটঘরিয়ার সব অফিস, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আওয়ামী স্টাইলে দখল করেছে বিএনপি। এছাড়াও প্রতিটি জায়গায় ব্যাপক চাঁদাবাজি করে বেড়াচ্ছে। এসবের বিরোধিতা করাই আমাদের কাল হয়েছে। নামাজরত অবস্থায় বিএনপির এসব সন্ত্রাসীরা আমাদের ওপর গুলি করেছে। ঈশ্বরদী থেকে সন্ত্রাসী বাহিনী এনে আমাদের ওপর সশস্ত্র হামলা করেছে। আমাদের অফিস পুড়িয়েই ক্ষান্ত হয়নি। কোরআন শরিফও পুড়িয়েছে। আমাদের লোকজনের দোকান ও বাড়িঘর ভাঙচুর এবং লুটপাট করেছে। গত জুমার নামাজ পড়তে দেয়নি বিএনপির লোকজন। মসজিদ তালা দিয়ে চাবি নিয়ে ইমামকে হুমকি দিয়ে চলে যায়।’
বৃহস্পতিবার আটঘরিয়ার দেবোত্তর ডিগ্রি কলেজের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনে ফরম তোলা নিয়ে বিএনপি-জামায়াত সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় দুই দলের পাল্টাপাল্টি বিক্ষোভ ও সংঘর্ষের পর উপজেলা বিএনপির নেতা আলমের অফিস ও মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেন জামায়াতের নেতাকর্মীরা। অন্যদিকে বিএনপির নেতাকর্মীরা উপজেলা জামায়াতের অফিসে ভাঙচুর ও আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেন। অফিস লক্ষ্য করে রাত ৯টার দিকে গুলি করে বিএনপি নেতাকর্মীরা। এসব ঘটনায় একে অপরের ওপর দোষারোপ করেছেন দল দুটির নেতারা।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: প বন ব এনপ র ন ত কর ম ন ত কর ম র ক রআন প ব এনপ র আটঘর য় আম দ র র অফ স মসজ দ
এছাড়াও পড়ুন:
পাবনায় জামায়াতের অফিসে আগুন, পোড়া কোরআন নিয়ে বিক্ষোভ
পাবনার আটঘরিয়া উপজেলা জামায়াতের কার্যালয়ে আগুন দেওয়ার ঘটনায় পোড়া কোরআন হাতে নিয়ে বিক্ষোভ করেছেন দলটির নেতাকর্মীরা। তারা অবলিম্বে ওই ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার এবং থানার ওসিকে প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন।
শুক্রবার (১৬ মে) সকাল ১০টার দিকে আটঘরিয়ার দেবোত্তর বাজারে উপজেলা জামায়াতের কার্যালয়ের সামনে জড়ো হতে শুরু করেন দলটির নেতাকর্মীরা। পরে তারা পাবনা-আটঘরিয়া সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। এসময় তাদের হাতে আগুনে পুড়ে যাওয়া কোরআন শরীফ ছিল।
সমাবেশে জেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক আবু তালেব মন্ডল বলেন, “উপজেলা বিএনপির চাঁদাবাজ ও দখলবাজ সন্ত্রাসীরা শুধু জামায়াতের কার্যালয় আগুনে পোড়ায়নি, তারা ইসরায়েলি কায়দায় বর্বর হামলা চালিয়ে পবিত্র কোরআন ও হাদিসসহ বিভিন্ন ইসলামী বইপত্র পুড়িয়েছে। অবিলম্বে এই সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করতে হবে। আটঘরিয়া থানার ওসি সন্ত্রাসীদের পক্ষ নিয়ে নিরপক্ষতা হারিয়েছেন, অবিলম্বে ওসিকেও প্রত্যাহার করতে হবে।”
আরো পড়ুন:
সাম্য হত্যার প্রতিবাদে বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের বিক্ষোভ
জবি শিক্ষার্থীদের স্লোগানে উত্তাল কাকরাইল
সমাবেশে পাবনা জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি এস এম সোহেল ও উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা নকিবুল্লাহসহ দলটির জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
দেবোত্তর ডিগ্রি কলেজের নির্বাচনে জামায়াত নেতাদের ফরম তুলতে বাধা এবং মারধর করে বের করে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (১৫ মে) দুপুরে বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা পাল্টাপাল্টি বিক্ষোভ করে। পরে তাদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এসময় উপজেলা বিএনপির নেতা আলমের অফিস ও মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেন জামায়াতের নেতাকর্মীরা।
অপরদিকে, বিএনপির নেতাকর্মীরা উপজেলা জামায়াতের অফিসে ভাঙচুর চালিয়ে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেন। এসব ঘটনায় একে অপরকে দোষারোপ করেছেন বিএনপি ও জামায়াতের নেতারা।
বৃহস্পতিবার আটঘরিয়া থানার ওসি মো. শফিকুজ্জামান বলেন, “উভয়পক্ষ উভয়পক্ষের অফিস ভাঙচুর করেছে। কিছুটা সংঘর্ষ হয়েছে। কয়েকজন আহত হয়েছেন। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। অভিযোগ দিলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
ঢাকা/শাহীন/মাসুদ