স্টারলিংক সেটআপে এককালীন খরচ কত, দুটি প্যাকেজে খরচ কত
Published: 20th, May 2025 GMT
স্যাটেলাইটভিত্তিক ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান স্টারলিংকের যাত্রা শুরু হয়েছে বাংলাদেশে। শুরুতে স্টারলিংক দুটি প্যাকেজ দিয়ে যাত্রা শুরু করছে। একটিতে খরচ বেশি। আরেকটিতে কম। বাংলাদেশের গ্রাহকেরা আজ মঙ্গলবার থেকেই স্টারলিংক প্যাকেজের জন্য অর্ডার করতে পারবেন।
এ ছাড়া স্টারলিংকের সেটআপ যন্ত্রপাতির জন্য এককালীন খরচ হবে ৪৭ হাজার টাকা। প্যাকেজ দুটি হলো স্টারলিংক রেসিডেন্স এবং রেসিডেন্স লাইট। মাসিক খরচ একটিতে ৬ হাজার টাকা, অপরটিতে ৪ হাজার ২০০ টাকা।
প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব স্টারলিংক চালুর বিষয়টি জানিয়েছেন। আজ মঙ্গলবার ফয়েজ আহমদ নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এ-সংক্রান্ত এক পোস্টে লিখেছেন, বাংলাদেশে যাত্রা শুরু নিয়ে গতকাল সোমবার বিকেলে স্টারলিংক তাঁকে ফোন করে জানিয়েছে। স্টারলিংক নিজেদের এক্সে এই তথ্য জানিয়েছে।
ফয়েজ আহমদ তাঁর ফেসবুক পেজে আরও জানান, স্টারলিংকে কোনো স্পিড ও ডেটা লিমিট নেই। সর্বোচ্চ ৩০০ এমবিপিএস পর্যন্ত গতির আনলিমিটেড ডেটা ব্যবহার করা যাবে। বাংলাদেশের গ্রাহকেরা আজ থেকেই অর্ডার করতে পারবেন।
ব্যয়বহুল হলেও স্টারলিংকের মাধ্যমে প্রিমিয়াম গ্রাহকদের জন্য উচ্চমান ও উচ্চগতির ইন্টারনেট সেবাপ্রাপ্তির টেকসই বিকল্প তৈরি হয়েছে বলে জানান ফয়েজ আহমদ। পাশাপাশি যেসব এলাকায় এখনো ফাইবার কিংবা দ্রুতগতির ইন্টারনেট সেবা পৌঁছেনি, সেখানে কোম্পানিগুলো ব্যবসা সম্প্রসারণের সুযোগ পাবে বলেন তিনি। এ ছাড়া এনজিও, ফ্রিল্যান্সার ও উদ্যোক্তারা বছরব্যাপী নিরবচ্ছিন্ন উচ্চগতির ইন্টারনেটের নিশ্চয়তা পাবেন বলেও জানান।
আরও পড়ুনদেশে স্টারলিংক চালু, মাসে সর্বোচ্চ খরচ ৬ হাজার টাকা১ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বর্ণিল আয়োজনে ঢাবির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন
বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা, আলোচনা সভা, দৃষ্টিনন্দন আলোকসজ্জাসহ বর্ণিল আয়োজনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সব হল, হোস্টেল ও প্রশাসনিক ভবন থেকে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মচারীদের নিয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খানের নেতৃত্বে ক্যাম্পাসে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়।
সকাল ১০টায় ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) সম্মুখের পায়রা চত্বরে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জাতীয় পতাকা, বিশ্ববিদ্যালয় ও হলগুলোর পতাকা উত্তোলন এবং কেক কাটা হয়। টিএসসি মিলনায়তনে ‘বৈষম্যহীন ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ বিনির্মাণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়’ শিরোনামে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজ। অনুষ্ঠানে একটি স্মরণিকার মোড়ক উন্মোচন করা হয়।
১৯২১ সালের ১ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম শুরু হয়। দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে উপাচার্য ভবন, কার্জন হল, কলা ভবন, টিএসসিসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও সড়কে আলোকসজ্জা করা হয়।
সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজ বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শুধু একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নয়, এটি জাতির আত্মপরিচয়ের প্রতীক, সভ্যতা গঠনের শিকড় ও স্বাধীনতার জাগরণ গাথা।
অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজ বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শ্রেষ্ঠ অর্জন হচ্ছে এটির অন্তর্ভুক্তিমূলক বৈশিষ্ট্য। এখানে ধনী-গরিব, শহর-গ্রাম, নারী-পুরুষ ও সংখ্যাগরিষ্ঠ-সংখ্যালঘু– সবাই পেয়েছেন সমান মর্যাদা। এখানে প্রতিটি কণ্ঠের রয়েছে মূল্য, প্রতিটি স্বপ্নের রয়েছে ছুঁয়ে দেখার অধিকার। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্মই হয়েছিল বৈষম্য দূরীকরণের তাগিদে।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু হয় মাত্র ৬০ জন শিক্ষক ও ৮৭৭ শিক্ষার্থী নিয়ে। আজ সেই প্রতিষ্ঠান পরিণত হয়েছে দেশের সর্ববৃহৎ উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৪০ হাজার এবং শিক্ষক আছেন প্রায় দুই হাজার। এর বাইরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছে ২০০টি প্রতিষ্ঠান। এতে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় দেড় লাখ। এটি আমাদের জন্য গর্বের বিষয়।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক ভূমিকা পালনের পাশাপাশি শিক্ষার মানোন্নয়নেও আমরা দায়বদ্ধ। যারা গণঅভ্যুত্থানে রক্ত দিয়েছে, প্রাণ দিয়েছে, তারা আমাদের কাঁধে কিছু দায়িত্ব রেখে গেছেন। সেই দায়িত্ব হচ্ছে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার পরিবেশ নিশ্চিত করা, শিক্ষক-শিক্ষার্থীর মধ্যে বিশ্বাস ও সহযোগিতার বন্ধন অটুট রাখা।
উপাচার্য বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পথচলা কখনও শুধু একাডেমিক পরিসরে সীমাবদ্ধ ছিল না। ১৯৫২, ১৯৬৯, ১৯৭১ এবং ১৯৯০-এর প্রতিটি আন্দোলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবদান ইতিহাসে গর্বের সঙ্গে উচ্চারিত হয়। ২০২৪-এর গণঅভ্যুত্থান আমাদের সংগ্রামের নতুন অধ্যায়। দেশের মানুষ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর ভরসা রেখেছে বলেই প্রতিটি ক্রান্তিকালে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকে সাড়া দিয়েছে।
অনুষ্ঠানে সংগীত বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে জাতীয় সংগীত ও উদ্দীপনামূলক দেশাত্মবোধক গান পরিবেশিত হয়। এ ছাড়া বিদেশি শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে সংগীত পরিবেশিত হয়। আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ।