দেশে স্টারলিংকের যাত্রা শুরু, অর্ডার আজ থেকেই
Published: 20th, May 2025 GMT
বিশ্বখ্যাত স্যাটেলাইট ভিত্তিক ইন্টারনেট সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান স্টারলিংক আজ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশে যাত্রা শুরু করেছে।
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত) ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মঙ্গলবার (২০ মে) সকালে এক ফেসবুক পোস্টে তিনি এ তথ্য জানান।
ফয়েজ আহমদ বলেন, “স্টারলিংক অফিশিয়ালি বাংলাদেশে যাত্রা শুরু করেছে। সোমবার (১৯ মে) বিকালে তারা ফোন কলে আমাকে বিষয়টি জানিয়েছে এবং আজ (২০ মে) সকালে তাদের এক্স হ্যান্ডেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।”
শুরুতে স্টারলিংক দুটি প্যাকেজ দিয়ে শুরু করছে জানিয়ে তিনি বলেন, “স্টারলিংক রেসিডেন্স ও রেসিডেন্স লাইট। মাসিক খরচ একটিতে ৬০০০ টাকা, অপরটিতে ৪২০০।” তবে সেটাপ যন্ত্রপাতির জন্য ৪৭ হাজার টাকা এককালীন খরচ হবে বলেও জানান ফয়েজ আহমদ।
তিনি বলেন, “এখানে কোনো স্পিড ও ডাটা লিমিট নেই। ব্যক্তি ৩০০ এমবিপিএস পর্যন্ত গতির আনলিমিটেড ডেটা ব্যবহার করতে পারবেন।”
বাংলাদেশের গ্রাহকরা আজ থেকেই অর্ডার করতে পারবেন জানিয়ে তিনি বলেন, “এর মাধ্যমে ৯০ দিনের মধ্যে যাত্রা শুরুতে প্রধান উপদেষ্টার প্রত্যাশাটি বাস্তবায়িত হলো। প্রধান উপদেষ্টা সংশ্লিষ্ট সবাইকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।”
ফয়েজ আহমদ বলেন, “খরুচে হলেও এর মাধ্যমে প্রিমিয়াম গ্রাহকদের জন্য উচ্চমান এবং উচ্চগতির ইন্টারনেট সেবা প্রাপ্তির টেকসই বিকল্প তৈরি হয়েছে।”
পাশাপাশি যেসব এলাকায় এখনো ফাইবার কিংবা দ্রুতগতির ইন্টারনেট সেবা পৌঁছেনি, সেখানে কোম্পানিগুলো ব্যবসা সম্প্রসারণের সুযোগ পাবেন বলেও আশা প্রকাশ করেন ফয়েজ আহমদ।
তিনি বলেন, “এনজিও ফ্রিল্যান্সার ও উদ্যোক্তারা বছরব্যাপী নিরবচ্ছিন্ন উচ্চগতির ইন্টারনেটের নিশ্চয়তা পাবেন।”
বিনিয়োগ সম্মেলনের মধ্যে গত ৯ এপ্রিল পরীক্ষামূলকভাবে স্টারলিংক সেবা চালু করা হয়।
ইলন মাস্কের স্পেসএক্সের অধীনস্থ প্রতিষ্ঠান স্টারলিংক ইতিমধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ইন্টারনেট সেবা দিচ্ছে। কৃত্রিম উপগ্রহের মাধ্যমে এই সেবা দিয়ে থাকে প্রতিষ্ঠানটি।
২০২৪ সালের অক্টোবরে স্টারলিংকের একটি প্রতিনিধি দল বিডার চেয়ারম্যানের সঙ্গে বৈঠক করে। চলতি বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ভিডিও কলে ইলন মাস্কের সঙ্গে স্টারলিংকের প্রসঙ্গে আলোচনা করেন।
গত মাসে ঢাকায় স্টারলিংকের মাধ্যমে আবারও পরীক্ষামূলক ইন্টারনেট চালানো হয়, যেখানে ডাউনলোড গতি পাওয়া যায় ২৩০ এমবিপিএস।
বিটিআরসি সম্প্রতি এনজিএসও নীতিমালা অনুমোদন দিয়েছে, যাতে সাইবার নিরাপত্তা ও রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণের সুযোগ রাখা হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ করার ক্ষমতাও সরকারের হাতে থাকবে।
দক্ষিণ এশিয়ায় স্টারলিংকের প্রথম বাণিজ্যিক সেবা চালু হয়েছে ভুটানে। বাংলাদেশ ছাড়াও ভারতেও প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম এগিয়ে চলেছে। বাংলাদেশে স্টারলিংক চালুর ফলে প্রত্যন্ত অঞ্চলে উচ্চগতির ইন্টারনেট সহজলভ্য হবে বলে মনে করছেন প্রযুক্তি বিশ্লেষকরা। এতে শহর ও গ্রামের মধ্যে ডিজিটাল বৈষম্য কমে যাবে এবং তরুণেরা গ্রাম থেকেই ফ্রিল্যান্সিংসহ ইন্টারনেটভিত্তিক পেশায় যুক্ত হতে পারবেন।
দুর্যোগের সময় জরুরি যোগাযোগ স্থাপনেও স্টারলিংক কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ঢাকা/হাসান
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
আবুল মনসুর আহমদ স্মরণে বক্তৃতা প্রতিযোগিতা
সাহিত্যিক, সাংবাদিক ও রাজনীতিবিদ আবুল মনসুর আহমদের স্মরণে দ্বিতীয়বারের মতো বক্তৃতা প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে। যৌথভাবে এই আয়োজন করেছে আবুল মনসুর আহমদ স্মৃতি পরিষদ ও তর্কজাল।
এবারের প্রতিযোগিতার বিষয়: গণ-অভ্যুত্থান-পরবর্তী ‘বাংলাদেশের কালচার’।
আয়োজকেরা জানিয়েছেন, এতে অংশ নিতে হলে প্রতিযোগীর বয়স ৩০ বছরের নিচে হতে হবে। আগে যাঁরা প্রবন্ধ ও বক্তৃতা প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হয়েছেন, তাঁরা এবার অংশ নিতে পারবেন না।
দুই পর্বে অনুষ্ঠিত হবে এই প্রতিযোগিতা। প্রথম পর্বে অংশগ্রহণকারীকে গুগল ড্রাইভ লিংক করে ই-মেইলে ৪-৫ মিনিটের একটি ভিডিও বক্তব্য পাঠাতে হবে। ৩০ জুলাইয়ের মধ্যে প্রতিযোগীদের [email protected] ও [email protected] ই-মেইল ঠিকানায় নিজের নাম, পরিচয়, বয়স, ফোন নম্বরসহ বক্তব্যের বিষয় উল্লেখ করে ড্রাইভ লিংক দিতে হবে। সেখান থেকে শীর্ষ ২০ জনকে নিয়ে ঢাকায় চূড়ান্ত পর্বের আয়োজন করা হবে। চূড়ান্ত পর্বে ১০ জন নির্বাচিত হবেন।
প্রতিযোগিতায় প্রথম বিজয়ী পুরস্কার হিসেবে ১৫ হাজার, দ্বিতীয় ১২ হাজার, তৃতীয় ১০ হাজার, চতুর্থ ৫ হাজার, পঞ্চম ৩ হাজার টাকা পুরস্কার পাবেন। এ ছাড়া বিজয়ী প্রত্যেককে সনদ ও ক্রেস্ট দেওয়া হবে। বাকি ৫ জন উপহার হিসেবে পাবেন এক হাজার টাকা, সনদ ও বই।
আগামী সেপ্টেম্বরে আবুল মনসুর আহমদের জন্মদিন উপলক্ষে পুরস্কার হস্তান্তরের বিষয়টি ফেসবুক পেজে ও ফোনে জানিয়ে দেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, আবুল মনসুর আহমদের রচনার মধ্যে আছে ‘আয়না’, ‘আসমানী পর্দা’, ‘গালিভারের সফরনামা’ ও ‘ফুড কনফারেন্স’। বাংলাদেশের সংস্কৃতিসহ সামাজিক ও রাজনৈতিক ইতিহাসের ওপর তাঁর লেখা রয়েছে। তাঁর আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ হচ্ছে ‘আত্মকথা’ ও ‘আমার দেখা রাজনীতির পঞ্চাশ বছর’। আবুল মনসুর আহমদ রচিত বিভিন্ন বই বাংলা একাডেমি, প্রথমা প্রকাশন ও রকমারিতে পাওয়া যায়।