দূর থেকে বিশাল লোহার লাল বলের মতো দেখতে মঙ্গল গ্রহ আমাদের সৌরজগতের চতুর্থ গ্রহ। এরই মধ্যে বিভিন্ন দেশের মহাকাশ সংস্থা মঙ্গল গ্রহের পৃষ্ঠে বেশ কয়েকটি সফল অভিযান চালিয়েছে। এসব অভিযানের তথ্য কাজে লাগিয়ে মঙ্গল গ্রহকে প্রাণধারণের উপযোগী করতে দীর্ঘদিন ধরেই গবেষণা করছেন বিজ্ঞানীরা। শুধু তা–ই নয়, মঙ্গল গ্রহে মানুষের বসতি স্থাপনের জন্য কাজ করছেন স্পেসএক্সের মালিক ইলন মাস্কও। ২০৩০ সালের মধ্যেই মঙ্গল গ্রহে বসতি গড়ার জন্য ১০ লাখ মানুষকে নিয়ে যেতে চান তিনি। বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, মঙ্গল গ্রহের বিভিন্ন স্থানে নানা ধরনের চমক রয়েছে।

মঙ্গল গ্রহের বিষুবরেখার কাছেই রয়েছে বিশাল এক আগ্নেয়গিরি অঞ্চল ‘থরসিস বুলজ’। এই অঞ্চলে সৌরজগতের বৃহত্তম আগ্নেয়গিরি অলিম্পাস মন্স অবস্থিত। আগ্নেয়গিরিটি প্রায় ২২ কিলোমিটার উঁচু এবং প্রায় ৬০০ কিলোমিটার চওড়া। থরসিস বুলজ অঞ্চলে আস্ক্রিয়াস মন্স, পাভোনাস মন্স ও আরসিয়া মন্স নামের আরও তিনটি বিশাল ঢালু আগ্নেয়গিরি রয়েছে।

সৌরজগতের বৃহত্তম গিরিখাত ভ্যালেস মেরিনারিসও মঙ্গল গ্রহে অবস্থিত। এই গিরিখাত প্রায় ৪ হাজার কিলোমিটার দীর্ঘ ও ২০০ কিলোমিটার চওড়া। প্রায় ৭ কিলোমিটার গভীর এই গিরিখাত মঙ্গল গ্রহের প্রায় এক-পঞ্চমাংশ এলাকাজুড়ে বিস্তৃত। পৃথিবীর গ্র্যান্ড ক্যানিয়নের চেয়ে বড় এই গিরিখাত টেকটোনিক ফাটল ও গ্রহের প্রাকৃতিক ক্ষয়ের কারণে তৈরি হয়েছে বলে ধারণা করা হয়। মঙ্গল গ্রহের দক্ষিণ গোলার্ধে রয়েছে আরেকটি বিশাল গিরিখাদ। হেল্লাস প্ল্যানিশিয়া নামের গিরিখাদটির গভীরতা ৭ কিলোমিটারের বেশি।

মঙ্গল গ্রহের উত্তর গোলার্ধের বেশির ভাগ অংশজুড়ে মসৃণ ও অপেক্ষাকৃত নিচু এলাকা রয়েছে। বিজ্ঞানীদের ধারণা, কোনো এক সময় এখানে বিশাল সমুদ্র ছিল। মঙ্গলের দক্ষিণের উচ্চভূমিতে খাদ রয়েছে। উঁচু এই এলাকা উত্তরের নিম্নভূমির চেয়ে বেশ ভিন্ন।

সূত্র: নাসা ও ব্রিটানিকা

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আগ ন য গ র

এছাড়াও পড়ুন:

সৌরজগতের বাইরে থাকা গ্রহের প্রথম ত্রিমাত্রিক মানচিত্র তৈরি

বৃহস্পতি গ্রহের চেয়ে ১০ গুণ বড় ‘ওয়াস্প-১৮ বি’ নামের দৈত্যকার একটি দূরবর্তী গ্যাসীয় গ্রহের ত্রিমাত্রিক মানচিত্র তৈরি করেছেন বিজ্ঞানীরা। নাসার জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের তথ্য ব্যবহার করে এবারই প্রথম সৌরজগতের বাইরে থাকা কোনো গ্রহের ত্রিমাত্রিক মানচিত্র তৈরি করা সম্ভব হয়েছে বলে দাবি করেছেন তাঁরা।

বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, এই যুগান্তকারী মানচিত্র গ্রহ বিজ্ঞানের একটি বড় পদক্ষেপ। সূর্যের বাইরের অন্য কোনো নক্ষত্রকে প্রদক্ষিণ করা গ্রহের ত্রিমাত্রিক মানচিত্র এর আগে তৈরি করা হয়নি। মানচিত্র তৈরির এ কৌশল ব্যবহার করে মহাবিশ্বে আবিষ্কৃত ছয় হাজারের বেশি বহির্গ্রহকে আরও ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব হবে।

বহির্গ্রহ নিয়ে বিজ্ঞানীদের আগ্রহ অনেক দিনের। সৌরজগতের বাইরের নানা ধরনের গ্রহ দেখা যায়। কিছু গ্রহ আছে যাদের দুষ্টু গ্রহ বলা হয়। এসব গ্রহ কোনো নক্ষত্রকে প্রদক্ষিণ করে না। মহাবিশ্বে অনেকটা স্বাধীনভাবে বা বন্ধনহীনভাবে ভেসে বেড়ায়। নাসার এক্সোপ্ল্যানেট সায়েন্স ইনস্টিটিউটের তথ্যমতে, ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত মোট ৬ হাজার ২৮টি বহির্গ্রহ শনাক্ত করা হয়েছে। আরও প্রায় আট হাজার বহির্গ্রহ গ্রহের মর্যাদার পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছে।

বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, থ্রিডি ইক্লিপস ম্যাপিং কৌশল ব্যবহার করে ত্রিমাত্রিক মানচিত্রটি তৈরি করেছেন। এই প্রক্রিয়া স্পেকট্রোস্কোপিক ইক্লিপস ম্যাপিং নামেও পরিচিত। এর আগে বিজ্ঞানীরা ২০২৩ সালে জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের তথ্য ব্যবহার করে বহির্গ্রহের টুডি বা দ্বিমাত্রিক মডেল তৈরি করেছিলেন। বিভিন্ন বহির্গ্রহ পৃথিবী থেকে পর্যবেক্ষণ করা বিজ্ঞানীদের জন্য কঠিন বলে নতুন ত্রিমাত্রিক মানচিত্র বেশ উপকারী হবে।

বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ২০০৯ সালে আবিষ্কৃত ওয়াস্প-১৮ বি গ্রহের পৃষ্ঠের তাপমাত্রা ৫ হাজার ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত হতে পারে। গ্রহটির বায়ুমণ্ডলে জলীয়বাষ্পের উপস্থিত রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতির্বিজ্ঞানী রায়ান চ্যালেঞ্জার বলেন, ‘টেলিস্কোপ ও এই নতুন কৌশলটির মাধ্যমে আমরা আমাদের সৌরজগতের প্রতিবেশীদের মতোই বহির্গ্রহকে বোঝার সুযোগ পাব।’

সূত্র: স্পেস ডট কম

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সৌরজগতের বাইরে থাকা গ্রহের প্রথম ত্রিমাত্রিক মানচিত্র তৈরি