দুই দিনেও সচল হয়নি বাংলাদেশ-সিঙ্গাপুর ম্যাচের টিকিট বিক্রির ওয়েবসাইট টিকিফাই। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) কম্পিটিশন কমিটির চেয়ারম্যান গোলাম গাউস জানিয়েছেন, আজকের মধ্যেই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।

তবে দর্শকেরা কখন থেকে টিকিট কিনতে পারবেন, সেটা পরিষ্কার করে বলতে পারেননি গাউস, ‘তারা (টিকিফাই) আমাদের বলেছে আজকের মধ্যে সিস্টেম চালু হয়ে যাবে। কাজও চলছে। আশা করি, আজই সবাই আবার টিকিট কিনতে পারবেন।’

অবশ্য কম্পিটিশন কমিটির সদস্য তাজওয়ার আউয়াল প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, সন্ধ্যার মধ্যে টিকিট বিক্রি শুরু হবে, ‘আজ সন্ধ্যার মধ্যে লাইভে চলে যাব। এরপরই দর্শকেরা টিকিট কিনতে পারবেন।’

এখন পর্যন্ত সাড়ে তিন হাজার টিকিট বিক্রি হয়েছে। এর মধ্যে কিছু টিকিট মিস ম্যাচ হয়েছে ই-মেইলের সঙ্গে। সেগুলো পর্যবেক্ষণ করেছে কম্পিটিশন কমিটি।

আরও পড়ুনঢাকায় হামজা-শমিতদের খেলা দেখতে কত টাকা লাগবে২১ মে ২০২৫

যেমনটা বলেছেন তাজওয়ার, ‘এখন পর্যন্ত সাড়ে তিন হাজার টিকিট বিক্রি হয়েছে। কিছু টিকিট মিস ম্যাচের অভিযোগ পেয়েছি। আমরা সেগুলো পর্যবেক্ষণ করছি। যদি ভুলত্রুটি পাওয়া যায়, তাহলে সংশোধন করা হবে।’

এর আগে গত শনিবার রাত ১১টা ২০ মিনিটে বাংলাদেশ-সিঙ্গাপুর ম্যাচের টিকিট বিক্রির ওয়েবসাইট টিকিফাই সাইবার আক্রমণের শিকারের কথা জানায় বাফুফে। এ জন্য দুঃখ প্রকাশ করে ফেডারেশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, টিকিট বিক্রির ওয়েবসাইটটি ‘সাইবার হামলার’ শিকার হয়েছে।

সাময়িক অসুবিধার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, শিগগিরই এ বিষয়ে সর্বশেষ অবস্থা জানানো হবে। কিন্তু সেই সংবাদ বিজ্ঞপ্তির প্রায় ৪৮ ঘণ্টা পার হলেও আজ বেলা সাড়ে ১১টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত টিকিট বিক্রি শুরু হয়নি।

আরও পড়ুনসাবিনার সময় শেষ হয়ে আসছে, মনে করেন বাটলার১৪ ঘণ্টা আগে

বাংলাদেশ-সিঙ্গাপুর এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের ম্যাচ ঘিরে দর্শকদের আগ্রহ তুঙ্গে। চার বছর পর নতুনভাবে সেজে ওঠা জাতীয় স্টেডিয়ামে বহুল আলোচিত আন্তর্জাতিক ম্যাচ, সঙ্গে হামজা চৌধুরী ও শমিত সোমের সঙ্গে ফাহামিদুল ইসলামের মতো ফুটবলারদের খেলা দেখার সুযোগ।

স্বাভাবিকভাবেই ১০ জুন জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠেয় এই ম্যাচের টিকিটের চাহিদা আকাশচুম্বী। ফুটবলপ্রেমীদের মুখে এটকটাই প্রশ্ন—টিকিটি কীভাবে পাওয়া যাবে?

দেশের মাটিতে হামজার অভিষেক দেখতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন ফুটবলপ্রেমীরা.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে মারাত্মক সংকটে তিস্তা নদী

আন্তর্জাতিক নিয়ম না মেনে উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ফলে তিস্তা নদী মারাত্মক সংকটে পড়েছে। আর প্রস্তাবিত তিস্তা প্রকল্প নিয়েও কেউ খোলামেলা কথা বলতে চাইছেন না।

রোববার রাজধানীর প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশে (পিআইবি) ‘সংকটে তিস্তা নদী: সমাধানের পথ কী?’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এ কথা বলেন। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও বাংলাদেশ পরিবেশ নেটওয়ার্ক (বেন) যৌথভাবে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।

মতবিনিময় সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাপার সহসভাপতি অধ্যাপক মো. খালেকুজ্জমান। প্রবন্ধে তিনি উল্লেখ করেন, ভারতের সঙ্গে কোনো পানিবণ্টন চুক্তি না থাকায় এবং আন্তর্জাতিক নিয়ম না মেনে উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ফলে তিস্তা নদী মারাত্মক সংকটে পড়েছে। শুষ্ক মৌসুমে পানির অভাবে আর বর্ষাকালে নিয়ন্ত্রণহীন পানিনির্গমনের ফলে বাংলাদেশ অংশে বন্যা ও ভাঙনের ঝুঁকি বাড়ছে।

মতবিনিময় সভায় বিশেষজ্ঞরা তিস্তা সমস্যার সমাধানে ভারতের সঙ্গে গঠনমূলক সম্পৃক্ততা, আন্তর্জাতিক আইনের প্রয়োগ এবং প্রকল্পে স্থানীয় জনগণের মতামত গ্রহণের ওপর জোর দেন। তাঁরা তিস্তা মহাপরিকল্পনা সম্পর্কে স্বচ্ছতা ও পুনর্মূল্যায়নের দাবি জানান।

অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘সরকারের কাছে তিস্তা মহাপরিকল্পনার কোনো তথ্য নেই। বিগত বছরগুলোতে উন্নয়নের নামে দেশের নদীগুলোকে সংকুচিত করা হয়েছে। আমরা আর সংকুচিত করার উন্নয়ন চাই না। নদীকে নদীর মতোই রাখতে হবে।’

আনু মুহাম্মদ আরও বলেন, দেশের উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে ব্যক্তিস্বার্থকে উপেক্ষা করে দেশের স্বার্থকে বড় করে দেখতে হবে। যেসব প্রকল্প দীর্ঘমেয়াদি, সেসব প্রকল্প গ্রহণের আগে অবশ্যই জনগণের মতামত নিতে হবে।

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন বলেন, ‘আমাদের নিজস্ব সামর্থ্য অনুযায়ী প্রকল্প নেওয়া উচিত। নদীকে রক্ষা করতে হবে কিন্তু তাকে খালে পরিণত করে নয়। এই প্রকল্প পুনর্মূল্যায়ন করা প্রয়োজন।

বাপার প্রতিষ্ঠাতা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বাপা কখনো উন্নয়নবিরোধী নয়। আমরাও চাই দেশের উন্নয়ন হোক। কিন্তু সেই উন্নয়ন হতে হবে দেশের প্রাণপ্রকৃতি, পরিবেশ ও নদীকে ঠিক রেখে। তিস্তা প্রকল্প নিয়ে কেউ খোলামেলা কথা বলতে চাইছেন না। সরকার ও বিরোধী দল উভয়ই চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ক নিয়ে সংবেদনশীল হওয়ায় এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি উপেক্ষিত থেকে যাচ্ছে।’

বাপার সভাপতি অধ্যাপক নুর মোহাম্মদ তালুকদারের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবিরের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, পরিবেশবিদ, গবেষক ও তিস্তাপাড়ের বাসিন্দারা অংশ নেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ