চট্টগ্রামে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের ওপর ‘শাহবাগবিরোধী ঐক্যের’ হামলা, আহত ১৫
Published: 28th, May 2025 GMT
চট্টগ্রামে বামপন্থি ছাত্র সংগঠনগুলোর মোর্চা গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ১৫ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট। আহতদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা গুরুতর। তাদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আজ বুধবার বিকেলে নগরের জামলাখান চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে ‘শাহবাগবিরোধী ঐক্য’ এ হামলা চালায় বলে অভিযোগ উঠেছে।
গুরুতর আহতরা হলেন- সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের চট্টগ্রাম মহানগর শাখার সভাপতি রিপা মজুমদার, গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক শ্রীকান্ত বিশ্বাস সিকু ও অর্থ সম্পাদক সুদীপ্ত গুহ।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামের মুক্তি ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বামপন্থি ছাত্র সংগঠনগুলোর মোর্চা গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের নেতাকর্মীদের ওপর ‘হামলার’ প্রতিবাদে প্রেস ক্লাবের সামনে সমাবেশ আহ্বান করা হয়। বিকেল তিনটার দিকে প্রেস ক্লাবের সামনে এ প্রতিবাদ কর্মসূচির ডাক দেয় গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট। সেই মোতাবেক প্রেস ক্লাবের সামনে জড়ো হতে থাকেন ছাত্র জোটের নেতাকর্মীরা। এর কিছুক্ষণ পর ‘শাহবাগবিরোধী ঐক্যের’ ব্যানারে একটি মিছিল প্রেস ক্লাবের সামনে আসে। আগে থেকে অবস্থান করা পুলিশ উভয়পক্ষকে শান্ত করা চেষ্টা করে। এ সময় উভয়পক্ষ পাল্টাপাল্টি স্লোগান দিতে থাকে। একপর্যায়ে দু’পক্ষের নেতাকর্মীদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, হাতাহাতি ও মারামারি শুরু হয়। গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের নেতাকর্মীরা প্রেস ক্লাব ছেড়ে চেরাগি মোড়ের দিকে যাওয়ার সময় ‘শাহবাগবিরোধী ঐক্যের’ নেতাকর্মীরা তাদের ওপর হামলায়। এতে রিপা ও শ্রীকান্তের মাথা ফেটে রক্ত ঝরতে দেখা যায়। পরে প্রেস ক্লাবের সামনে ফিরে এসে ‘শাহবাগবিরোধী ঐক্যের নেতাকর্মীরা অবস্থান নিয়ে স্লোগান দেন। গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের নেতাকর্মীদের কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া ব্যানারে আগুন ধরিয়ে দেন তারা।
সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের চট্টগ্রাম মহানগর শাখার সহ-সভাপতি পুষ্পিতা নাথ বলেন, ‘মঙ্গলবার সমাবেশের ঘোষণা দেওয়ার পর থেকে ফেসবুকের বিভিন্ন পেজ থেকে আমাদের কর্মসূচির বিরুদ্ধে উসকানিমূলক বিভিন্ন পোস্ট দেওয়া হয়। এরপর আজ প্রেস ক্লাবের সামনে গেলে আমাদের ওপর অতর্কিত হামলার ঘটনা ঘটে। কয়েকজন নারী নেত্রীসহ আমাদের ১৫ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।’
অন্যদিকে ঘটনাস্থলে থাকা জুলাই ঐক্যমঞ্চের চট্টগ্রামের প্রধান সমন্বয়কারী আবরার হাসান রিয়াদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘শাহবাগে গণজাগরণ মঞ্চ বানিয়ে তথাকথিত আন্দোলনের নামে এই বাম সংগঠনের নেতাকর্মীরা স্বৈরাচার শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠায় সহযোগিতা করেছিল। এর ফলে শেখ হাসিনা ১৬ বছর ধরে দেশের মানুষের ওপর গুম-খুন, অত্যাচার চালিয়ে ভোটাধিকার হরণ করতে পেরেছিল। হাসিনার পতনের পর ড.
নগরীর কোতোয়ালি থানার ওসি আবদুল করিম বলেন, ‘একটা সমাবেশ নিয়ে দুপক্ষে পাল্টাপাল্টি উত্তেজনা হয়েছিল। হালকা মারামারিও হয়েছে। দু’জন আহত হয়েছেন। আমরা অবশ্য ঘটনাস্থলে থেকে দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি।’
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আহত গণত ন ত র ক ছ ত র জ ট র ছ ত র জ ট র ন ত কর ম প র স ক ল ব র স মন র ন ত কর ম র শ হব গ র ওপর
এছাড়াও পড়ুন:
ঢাবিতে শিক্ষার্থীদের দুয়োধ্বনির শিকার বামপন্থীরা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) বামপন্থীদের মশাল মিছিলকে উদ্দেশ্য করে দুয়োধ্বনি দিয়েছেন একদল শিক্ষার্থী।
বুধবার (২৮ মে) সন্ধ্যা ৭টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের হল পাড়ায় বিজয় একাত্তর হলের সামনে এ ঘটনা ঘটেছে।
মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় মৃত্যুদণ্ড থেকে আদালতের রায়ে জামায়াত নেতা এটিএম আজহারকে নির্দোষী ঘোষণা, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ও চট্টগ্রামে ‘গণতান্ত্রিক ছাত্রজোট' এর মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় শিবিরকে অভিযুক্ত করে প্রতিবাদী মশাল মিছিল করেছে বামপন্থী ছাত্র সংগঠনগুলোর জোট ‘গণতান্ত্রিক ছাত্রজোট'।
আরো পড়ুন:
ঢাবিতে প্রকাশ্যে এল ইসলামী ছাত্রীসংস্থা
গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে বজ্রপাতে কলেজ শিক্ষার্থীর মৃত্যু
এ সময় তারা ‘মুক্তিযুদ্ধ হারেনি, হেরে গেছে হাসিনা’, ‘আমরা মাটি মহনা, শিবিরের হবে না’, ‘ছাত্রলীগ গেছে যেই পথে, শিবির যাবে সেই পথে’, ‘জালো রে জালো, আগুন জালো’, ‘শেখ হাসিনা আজহার, এই বাংলার গাদ্দার’, ‘রাজশাহীতে হামলা কেন, ইন্টারিম জবাব চাই’, ‘চট্টগ্রামে হামলা কেন, ইন্টারিম জবাব চাই’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে হলপাড়ায় প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গে বিজয় একাত্তর হল, জসিমউদ্দিন হল, জিয়া হল ও মুজিব হলের শিক্ষার্থীরা নেমে এসে বামপন্থীদের উদ্দেশ্যে ‘ভুয়া ভুয়া’ ও ‘শাহবাগী শাহবাগী’ স্লোগান দিতে থাকেন। তবে এই শিক্ষার্থীদের কোনো রাজনৈতিক পরিচয় বা শিবির সংশ্লিষ্টতা আছে কিনা- তা জানা যায়নি।
তবে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ বাম ছাত্র সংগঠনগুলো উস্কানীমূলক স্লোগান দেওয়ার কারণে এমনটা ঘটেছে।
পরবর্তীতে মশাল মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
সমাবেশে সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সভাপতি সালমান সিদ্দিকী বলেন, “গতকাল মঙ্গলবার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণতান্ত্রিক ছাত্রজোটের মিছিলে শিবির হামলা চালিয়েছে। আজ চট্টগ্রামে হামলা চালিয়েছে। পুলিশের উপস্থিততে তারা হামলা চালিয়েছে, পুলিশ ও রাষ্ট্রযন্ত্র জামায়াত শিবিরের পক্ষে কাজ করেছে।”
তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় ছিল, তখন আদালতের রায়কে প্রভাবিত করা হত। ৫ আগস্টের পরও রায় প্রভাবিত করে জামায়াত-শিবিরের পক্ষে নেওয়া হচ্ছে। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে জামায়াত গণহত্যা চালিয়েছে, নিজের দেশের মানুষের বিপক্ষে অস্ত্র ধরেছে। তাদের বিচার বাংলাদেশ হয়নি। ২৪ এর জুলাই গণহত্যার বিচার আমরা চাই, সঙ্গে ৭১ এর গণহত্যার বিচারও চাই।”
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী