ব্রাজিল কোচ হিসেবে গত সোমবার আনুষ্ঠানিকভাবে যোগদানের পর পরিচিতিপর্ব শেষে প্রথম সাক্ষাৎকার দেন কার্লো আনচেলত্তি। ব্রাজিল কোচ হিসেবে তাঁর এই প্রথম সাক্ষাৎকার নিয়েছে টিভি গ্লোবো নেটওয়ার্কের চ্যানেল ‘জর্নাল ন্যাসিওনাল’। ইতালিয়ান এই কোচ সেই আলাপচারিতায় মন খুলে কথা বলেছেন। ব্রাজিলিয়ান ফুটবল নিয়ে তাঁর ধারণা, নিজের খেলোয়াড়ি ও কোচিং ক্যারিয়ার, সিনেমা দেখার নেশা এবং লেখালেখি নিয়েও কথা বলেন আনচেলত্তি।

আরও পড়ুনবিচারকের পদত্যাগ, ম্যারাডোনার ‘হত্যা মামলার’ ভবিষ্যৎ অন্ধকারে৪ ঘণ্টা আগে

ফুটবল ইতিহাসে অন্যতম সেরা এ কোচ নিজের একটি স্বপ্নের কথাও বলেছেন, ঐতিহ্যাবাহী মারাকানা স্টেডিয়ামে ব্রাজিল দলের কোচ হিসেবে ডাগআউটে দাঁড়াতে চান। কোচিং ক্যারিয়ারে তিনি ৩৪ জন ব্রাজিলিয়ান ফুটবলারকে কোচিং করিয়েছেন বলে জানিয়েছেন। যদিও ব্রাজিলের সংবাদমাধ্যম ‘ইউওএল’ আনচেলত্তির স্মরণশক্তির ভুল শুধরে জানিয়েছে, সংখ্যাটা আসলে ৪০ জন। তো যতজন ব্রাজিলিয়ানকে আনচেলত্তি কোচিং করিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে সবচেয়ে প্রতিভাবান কে? সাক্ষাৎকারে এই প্রশ্নের উত্তরে আনচেলত্তি রোনালদো নাজারিও এর নাম বলেছেন।

কোপা লিবার্তোদোরেসে গ্রুপপর্বের ম্যাচে স্টেডিয়ামে উপস্থিত হয়ে দর্শকদের উদ্দেশে হাত নাড়েন আনচেলত্তি.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে মারাত্মক সংকটে তিস্তা নদী

আন্তর্জাতিক নিয়ম না মেনে উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ফলে তিস্তা নদী মারাত্মক সংকটে পড়েছে। আর প্রস্তাবিত তিস্তা প্রকল্প নিয়েও কেউ খোলামেলা কথা বলতে চাইছেন না।

রোববার রাজধানীর প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশে (পিআইবি) ‘সংকটে তিস্তা নদী: সমাধানের পথ কী?’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এ কথা বলেন। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও বাংলাদেশ পরিবেশ নেটওয়ার্ক (বেন) যৌথভাবে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।

মতবিনিময় সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাপার সহসভাপতি অধ্যাপক মো. খালেকুজ্জমান। প্রবন্ধে তিনি উল্লেখ করেন, ভারতের সঙ্গে কোনো পানিবণ্টন চুক্তি না থাকায় এবং আন্তর্জাতিক নিয়ম না মেনে উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ফলে তিস্তা নদী মারাত্মক সংকটে পড়েছে। শুষ্ক মৌসুমে পানির অভাবে আর বর্ষাকালে নিয়ন্ত্রণহীন পানিনির্গমনের ফলে বাংলাদেশ অংশে বন্যা ও ভাঙনের ঝুঁকি বাড়ছে।

মতবিনিময় সভায় বিশেষজ্ঞরা তিস্তা সমস্যার সমাধানে ভারতের সঙ্গে গঠনমূলক সম্পৃক্ততা, আন্তর্জাতিক আইনের প্রয়োগ এবং প্রকল্পে স্থানীয় জনগণের মতামত গ্রহণের ওপর জোর দেন। তাঁরা তিস্তা মহাপরিকল্পনা সম্পর্কে স্বচ্ছতা ও পুনর্মূল্যায়নের দাবি জানান।

অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘সরকারের কাছে তিস্তা মহাপরিকল্পনার কোনো তথ্য নেই। বিগত বছরগুলোতে উন্নয়নের নামে দেশের নদীগুলোকে সংকুচিত করা হয়েছে। আমরা আর সংকুচিত করার উন্নয়ন চাই না। নদীকে নদীর মতোই রাখতে হবে।’

আনু মুহাম্মদ আরও বলেন, দেশের উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে ব্যক্তিস্বার্থকে উপেক্ষা করে দেশের স্বার্থকে বড় করে দেখতে হবে। যেসব প্রকল্প দীর্ঘমেয়াদি, সেসব প্রকল্প গ্রহণের আগে অবশ্যই জনগণের মতামত নিতে হবে।

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন বলেন, ‘আমাদের নিজস্ব সামর্থ্য অনুযায়ী প্রকল্প নেওয়া উচিত। নদীকে রক্ষা করতে হবে কিন্তু তাকে খালে পরিণত করে নয়। এই প্রকল্প পুনর্মূল্যায়ন করা প্রয়োজন।

বাপার প্রতিষ্ঠাতা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বাপা কখনো উন্নয়নবিরোধী নয়। আমরাও চাই দেশের উন্নয়ন হোক। কিন্তু সেই উন্নয়ন হতে হবে দেশের প্রাণপ্রকৃতি, পরিবেশ ও নদীকে ঠিক রেখে। তিস্তা প্রকল্প নিয়ে কেউ খোলামেলা কথা বলতে চাইছেন না। সরকার ও বিরোধী দল উভয়ই চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ক নিয়ে সংবেদনশীল হওয়ায় এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি উপেক্ষিত থেকে যাচ্ছে।’

বাপার সভাপতি অধ্যাপক নুর মোহাম্মদ তালুকদারের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবিরের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, পরিবেশবিদ, গবেষক ও তিস্তাপাড়ের বাসিন্দারা অংশ নেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ