মির্জাপুরে কৃষি বিভাগের পিপি গুদাম দীর্ঘদিন ধরে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। ফলে কয়েক কোটি টাকা মূল্যের সরকারি জায়গাটি দখল হয়ে গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

জানা গেছে, মির্জাপুর বাজারের শহীদ মিনারের উত্তর পাশে থানা রোডে ৩০ দাগে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর মির্জাপুরের ২৪ শতাংশ জমি রয়েছে। যার বর্তমান বাজার মূল্য অন্তত ১০ কোটি টাকা। এই জমির ওপর রয়েছে ‘পিপি গোডাউন’ নামে একটি ভবন। যা জরাজীর্ণ হয়ে পড়ায় দীর্ঘদিন আগে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। স্বাধীনতার পর পিপি গুদামটি নির্মাণ করে কৃষি বিভাগ। এখান থেকে বীজ বিতরণ এবং ফসলে কীটনাশক প্রয়োগের কাজ চলত। আশির দশকে কীটনাশক বাজারে বিক্রি শুরু হলে পিপি গুদামটির কার্যক্রম আস্তে আস্তে বন্ধ হয়ে যায়।

কার্যক্রম বন্ধ হওয়ার পর কয়েক বছর গুদামটিতে জনবল থাকলেও পরে ভবনটি বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়ায় তাদের প্রত্যাহার করা হয়। এর পর নৈশপ্রহরী কয়েক বছর সেখানে দায়িত্ব পালন করে। গত পাঁচ-ছয় বছর ধরে নৈশপ্রহরীও জরজীর্ণ ভবনে থাকছেন না। এ অবস্থায় ভবনটির দেখভাল বন্ধ এবং আশপাশের জায়গা দখল হয়ে যায় বলে অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি সীমানা প্রাচীর নির্মাণের উদ্দেশ্যে জায়গাটি পরিমাপের উদ্যোগ নেয় কৃষি বিভাগ। পরিমাপে পুরো ২৪ শতাংশ জায়গা না থাকায় সীমানা প্রাচীর নির্মাণের কাজ থেমে যায়। পরিমাপে দেখা যায়, ২৪ শতাংশ জমির মধ্যে রয়েছে ১৭ দশমিক ৫ শতাংশ। এ ছাড়া গুদামটির সামনে পৌরসভার ময়লা ফেলার ডাস্টবিন নির্মাণ করা হয়েছে। নির্মাণ কাজের উপকরণ সামগ্রী ও পিকআপ, রিকশা, ভ্যান গুদামটির আশপাশ ঘিরে রাখা হয়। পরিত্যক্ত গুদামটি এখন ময়লা-আবর্জনা ফেলার ভাগাড় হয়ে গেছে। এতে আশপাশের পরিবেশ অস্বাস্থ্যকর হয়ে উঠেছে। এই পিপি ভবনের পূর্ব পাশ দিয়ে রয়েছে সরকারি রাস্তা, যা নিয়ে কৃষি বিভাগের কোনো অভিযোগ নেই।

দক্ষিণ পাশের ভবনের মালিক বেল্লাল হোসেন বলেন, ‘আমি আমার কেনা জমিতেই ভবন নির্মাণ করেছি। এখানে কৃষি বিভাগের কোনো জায়গা নেই।’

একই ভবনের দক্ষিণ পাশে নির্মিত হয়েছে বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল আজিজের চারতলা ভবন। তিনি প্রয়াত হওয়ার পর তাঁর উত্তরাধিকারীরা এ ব্যাপারে কিছু বলতে পারেননি।

এ ছাড়া ভবনের উত্তর পাশের একটি ছয়তলা ভবন নির্মিত হয়েছে যার মালিক অরুন, বরুন ও করুন সাহা। যোগাযোগ করা হলে তারা জানান, তাদের ছয় শতাংশ জমি কৃষি বিভাগের লোকজনের উপস্থিতিতে পরিমাপ করা হয়েছে। তবে পশ্চিম পাশে কোনো স্থাপনা নির্মিত না হওয়ায় জমির মালিক কে তা জানা সম্ভব হয়নি। এ ছাড়া পশ্চিম পাশে অব্যবহৃত ছোট একটি পুকুরও রয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহমুদা খাতুনের সঙ্গে যোগোযোগ করা হলে তিনি বলেন, কৃষি বিভাগের ওই জায়গাটি পরিমাপ করতে গিয়ে আশপাশের জায়গা দখল হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। দখলদারদের উচ্ছেদ করতে আইনি প্রক্রিয়া চলমান বলে জানিয়েছেন তিনি।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: পর ম প আশপ শ ভবন র

এছাড়াও পড়ুন:

দশমিনায় ভবন নির্মাণের ছয় মাসের মধ্যে খসে পড়ছে পলেস্তারা

পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার একটি মাদ্রাসার চারতলা ভবন নির্মাণের ছয় মাস যেতে না যেতেই পলেস্তারা খসে পড়ছে। উপজেলার মধ্য বগুড়া নূরিয়া দাখিল মাদ্রাসায় এ ঘটনা ঘটেছে। ভবনটি নির্মাণে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে।

জেলা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯-২০ অর্থবছরে দরপত্রের মাধ্যমে ৩ কোটি ১৯ লাখ টাকা ব্যয়ে ভবনটির নির্মাণকাজের দায়িত্ব পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আবুল কালাম আজাদ। ২০২০ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ভবনটির নির্মাণকাজ শুরু হয়। চলতি বছরের জানুয়ারিতে ওই ভবনে পাঠদান কার্যক্রম শুরু হয়।

সরেজমিনে দেখা গেছে, চারপাশের দেয়ালের পলেস্তারা খসে পড়ছে। সিমেন্টের পরিমাণ কম ও নিম্নমানের বালু ব্যবহার করার অভিযোগ করেন স্থানীয় লোকজন। নির্মাণকাজের সময় এলাকাবাসী প্রতিবাদ করলেও ঠিকাদার তাঁদের কথায় কর্ণপাত করেননি।

মধ্য বগুড়া নূরিয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপারিনটেনডেন্ট মো. মিজানুর রহমান বলেন, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ভবনটিতে পাঠদান শুরু হয়। এপ্রিল মাসের শুরুর দিকে দেয়ালের পলেস্তারা খসে পড়তে শুরু করে। যেভাবে পলেস্তারা খসে পড়ছে, তাতে মনে হচ্ছে ভবনটি ২০ বছর আগে নির্মিত হয়েছে। বিষয়টি তিনি সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি মো. আজমের মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার কল করলেও বন্ধ থাকায় তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি। জেলা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মোশফিকুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে তিনি অবগত। এ কারণে ঠিকাদারের ২৭ লাখ টাকা পরিশোধ করা হয়নি। দ্রুত সময়ের মধ্যে ঠিকাদারকে ভবনটির পলেস্তারার কাজ আবার করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দশমিনায় ভবন নির্মাণের ছয় মাসের মধ্যে খসে পড়ছে পলেস্তারা