ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকে সৌদি আরবে ধরে রাখতে তাঁর সঙ্গে ‘কঠিন’ এক আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন দেশটির অফিশিয়ালরা। সহজ কথায় আলোচনাটি স্বস্তিদায়ক হচ্ছে না কিংবা ফলপ্রসূ না হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। এ বিষয়ে জানেন, এমন এক সূত্র খবরটি জানিয়েছেন বার্তা সংস্থা এএফপিকে।

গত মঙ্গলবার আল নাসর সৌদি প্রো লিগের মৌসুম শেষ করার পর ক্লাবটি ছাড়ার ইঙ্গিত দেন রোনালদো। আল ফাতেহর কাছে ৩-২ গোলে হেরে তৃতীয় হয়ে লিগ শেষ করে আল নাসর। রোনালদোর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম হ্যান্ডলে এরপর লেখা হয়,‘এই অধ্যায় শেষ। গল্পটা? এখনো লেখা হচ্ছে। সবার কাছে কৃতজ্ঞ।’  

আরও পড়ুন১৬ হাজার কোটি টাকা খরচ করে অবশেষে কিছু একটা পেল চেলসি৯ ঘণ্টা আগে

আল নাসরের সঙ্গে রোনালদোর বর্তমান চুক্তির মেয়াদ শেষ হবে আগামী ৩০ জুন। ৪০ বছর বয়সী পর্তুগিজ কিংবদন্তি ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ছেড়ে ২০২২ সালে আল নাসরে যোগ দেন। ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপে রোনালদোর খেলার গুঞ্জন চলছে।

রোনালদোর ক্লাব আল নাসর বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করতে পারেনি। অনেকের ধারণা, ক্লাব বিশ্বকাপে খেলতেই আল নাসর ছাড়তে চান রোনালদো। এ নিয়ে ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনো কিছুদিন আগে বলেছেন, রোনালদোর খেলার সম্ভাবনা নিয়ে ‘আলোচনা চলছে’।

সৌদি আরব থেকে ক্লাব বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে শুধু আল হিলাল। এএফপিকে সূত্র জানিয়েছে, দলবদলের মাধ্যমে আল নাসর থেকে রোনালদোকে আল হিলালে পাঠানো হতে পারে। সৌদি আরবের সরকারি বিনিয়োগ তহবিল পাবলিক ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড (পিআইএফ) দেশটির ফুটবলে প্রচুর অর্থ বিনিয়োগ করেছে। পিআইএফের সেই সূত্র বলেছেন, সৌদি প্রো লিগের আগামী মৌসুমে ‘থাকার জন্য রোনালদোকে রাজি করাতে তাঁর সঙ্গে কঠিন এক আলোচনা চলছে।’

রোনালদোর বিষয়ে আল নাসরের অবস্থান আজ সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন ক্লাবটির পরিচালক ফার্নান্দো হিয়েরো, ‘আমরা তার চুক্তি নবায়নের চেষ্টা করব, যেন সে আমাদের সঙ্গে চালিয়ে যেতে পারে। তাকে সই করাতে অনেক ক্লাবই আগ্রহী। চুক্তি নবায়ন করতে আমরা রোনালদোর সঙ্গে আলোচনা করছি। সৃষ্টিকর্তা চাইলে আমরা সমাধান খুঁজে বের করতে পারব।’

আরও পড়ুনমেসি-সুয়ারেজের জোড়া গোল, জয়ে ফিরল মায়ামি১১ ঘণ্টা আগে

রোনালদোকে নিয়ে এএফপিকে সেই সূত্র আরও বলেছেন, ‘প্রথম পথটা হলো আল আহলিতে যোগদান, যেখানে ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ থাকবে। কিংবা এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন আল আহলিতে যোগদান।’

তেলসমৃদ্ধ সৌদির সরকারি স্বাধীন বিনিয়োগ তহবিল পিআইএফ প্রো লিগে আল নাসর, আল হিলাল ও আল আহলিকে নিয়ন্ত্রণ করে।

খেলোয়াড় সই করাতে ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপে অংশ নেওয়া ৩২টি দলকে ১ থেকে ১০ জুন পর্যন্ত দলবদলের বিশেষ সময় দেবে ফিফা। যুক্তরাষ্ট্রে আগামী ১৪ জুন থেকে শুরু হবে ক্লাব বিশ্বকাপ।

রোনালদোর সৌদি প্রো লিগে যোগদান দেশটির ঘরোয়া ফুটবলে কত প্রভাব ফেলেছে, তা নিয়ে কথা বলেছেন সেই সূত্র, ‘গত আড়াই বছরে সৌদি প্রো লিগের উন্নতিতে অন্যতম বড় ভূমিকা রোনালদোর উপস্থিতি। অভিজাত ও তরুণ খেলোয়াড়দের সৌদি আরবে আসার দ্বার খুলেছেন তিনি।’

আল নাসর এবার লিগে তৃতীয় হলেও ৩০ ম্যাচে ২৫ গোল করে সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়েছেন রোনালদো। গত মাসে এশিয়ান চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালে হেরে যাওয়া আল নাসরের হয়ে সৌদি লিগ কিংবা মহাদেশীয় ট্রফি জিততে পারেননি।

পাঁচবার ব্যালন ডি’অরজয়ী ৪০ বছর বয়সী রোনালদো গত বছর জানিয়েছিলেন, তিনি আল নাসরেই ক্যারিয়ার শেষ করতে পারেন। সৌদি রাজপরিবারের অনেকেরই পছন্দের ক্লাব আল নাসর। প্রচুর অর্থ বিনিয়োগ করে ইউরোপের বেশ কিছু বড় তারকাকে নিজেদের ঘরোয়া ফুটবলে নিয়ে এসেছে সৌদি আরব। ২০৩৪ বিশ্বকাপও আয়োজন করবে দেশটি।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ক ল ব ব শ বক প বল ছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

এককালের প্রেম যখন উপেক্ষিত

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার পুরনো বন্ধু কিম জং উনের সাথে সাম্প্রতিক এশিয়া সফরে হঠাৎ করেই আলোচনার আশা করেছিলেন। কিন্তু উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন এ ব্যাপারে কোনো সাড়া দেননি। 

ট্রাম্প তার এশিয়া সফরের সময় কিমকে বারবার আমন্ত্রণ জানিয়ে বলেছিলেন,  তিনি বৈঠকের জন্য শতভাগ উন্মুক্ত। এমনকি ট্রাম্প কয়েক দশক ধরে মার্কিন নীতির বিপক্ষে গিয়ে স্বীকার করেছেন যে উত্তর কোরিয়া ‘এক ধরণের পারমাণবিক শক্তিধর।’

কিন্তু পিয়ংইয়ং আমন্ত্রণে চুপ ছিল। এর পরিবর্তে তারা ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করেছে এবং রাশিয়া ও বেলারুশে তাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে পাঠিয়েছে, যাদের সাথে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সম্পর্ক আরো গভীর হয়েছে।

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় এশিয়া সেন্টারের একজন ভিজিটিং স্কলার সিওং-হিওন লি বলেন, “নিষ্ঠুর বাস্তবতা হল যে কিম জং উনের অংশগ্রহণের কোনো উৎসাহ ছিল না। ওয়াশিংটনের বিশ্বাস করা যে তিনি আসবেন, এটি একটি মৌলিক ভুল হিসাব ছিল।”

লি জানান, ট্রাম্পের বারবার প্রস্তাব উত্তর কোরিয়ার নেতার জন্য একটি ‘বিজয়’ হিসেবে দেখা যায়, যা তাকে এবং তার পারমাণবিক কর্মসূচিকে বিশাল মাত্রার বিশ্বাসযোগ্যতা প্রদান করে।

তিনি বলেন, “প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কিমকে একটি বিশাল, অপ্রাপ্ত ছাড় দিয়েছেন।”

২০১৯ সালে শেষবারের মতো ডিমিলিটারাইজড জোনের (ডিএমজেড) পানমুনজমে দেখা করেছিলেন ট্রাম্প ও কিম জং উন। ট্রাম্পের নেতৃত্বে পিয়ংইয়ংয়ের সাথে সেই বৈঠকে উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ এবং নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের সুযোগের ক্ষেত্রে ব্যর্থ হয়।

তারপর থেকে উত্তর কোরিয়া নিজেকে একটি‘অপরিবর্তনীয়’ পারমাণবিক রাষ্ট্র ঘোষণা করেছে এবং রাশিয়ার সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি করেছে, ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে মস্কোকে সমর্থন করার জন্য সেনা পাঠিয়েছে।

মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ-এর সাবেক বিশ্লেষক সু কিম এএফপিকে বলেছেন, কিম এখন ‘বেশ স্বাচ্ছ্যন্দের জায়গায়’ আছেন।

তিনি বলেন, “রাশিয়ার সমর্থন সম্ভবত আজকাল উত্তর কোরিয়ার কৌশলগত হাতকে শক্তিশালী এবং দৃঢ় করার সবচেয়ে নির্ধারক কারণগুলোর মধ্যে একটি। তিনিই (উন) সর্বোচ্চ ক্ষমতা ধরে রেখেছেন, যার ফলে ট্রাম্পকে আমন্ত্রণ জানানো তার পক্ষে সহজ হয়ে যায়।”

দক্ষিণ কোরিয়া থেকে বাড়ি ফিরে চীনা নেতা শি জিনপিংয়ের সাথে বৈঠকের সময় ট্রাম্প জানিয়েছিলেন, তিনি কিমের সাথে দেখা করার জন্য খুব ‘ব্যস্ত’ ছিলেন।

দৃশ্যটি ২০১৯ সালের থেকে সম্পূর্ণ বিপরীত ছিল, যখন ভিয়েতনামের হ্যানয়ে পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ এবং নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার আলোচনা নাটকীয়ভাবে ভেঙে পড়েছিল - কিমকে কোনো চুক্তি ছাড়াই পিয়ংইয়ং ফিরে যাওয়ার জন্য দীর্ঘ ট্রেন যাত্রা সহ্য করতে হয়েছিল।

অসলো বিশ্ববিদ্যালয়ের কোরিয়ান স্টাডিজের অধ্যাপক ভ্লাদিমির টিখোনভ এএফপিকে বলেছেন, “অভিজ্ঞতা পিয়ংইয়ংকে বেদনাদায়ক করে তুলেছে। তারা খুব তাড়াহুড়ো করে এগিয়ে যেতে চায় না।” 

তিনি জানান, পিয়ংইয়ং ট্রাম্পের কাছ থেকে আরো সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবের জন্য অপেক্ষা করছে, যার মধ্যে রয়েছে আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক স্বীকৃতি এবং পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ ছাড়াই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার।
 

ঢাকা/শাহেদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • তাঞ্জানিয়ায় নির্বাচনী বিক্ষোভে নিহত ৭০০
  • এককালের প্রেম যখন উপেক্ষিত