Samakal:
2025-09-18@10:39:01 GMT

হজের প্রস্তুতি যেভাবে নেবেন

Published: 29th, May 2025 GMT

হজের প্রস্তুতি যেভাবে নেবেন

হজ বিশ্বমুসলিম ইতিহাসের সর্ববৃহৎ ইসলামী মহাসম্মেলন। পবিত্র কাবাগৃহকে কেন্দ্র করে মহান প্রভুর সান্নিধ্য লাভের উদ্দেশ্যে বিশ্বের সব প্রান্ত থেকে সামর্থ্যবান সচ্ছল মুসলমান হৃদয়পূর্ণ ভক্তি, শ্রদ্ধা ও আবেগজড়িত চিত্তে মক্কায় উপস্থিত হন এবং হজের আহকামগুলো সম্পাদন করেন। 

হজ মুসলিম জাতির সামাজিক, রাজনৈতিক, আধ্যাত্মিক ঐক্য এবং পারস্পরিক ভ্রাতৃত্ববোধের এক প্রকৃষ্ট নিদর্শন। হজের প্রতিটি কাজ ঐতিহাসিক স্মৃতিবিজড়িত ও তাৎপর্যপূর্ণ। আদি পিতা হজরত আদম (আ.

) থেকে আজ পর্যন্ত সর্বযুগের আল্লাহপ্রেমী, আল্লাহর ভালোবাসায় নিবেদিতপ্রাণ নবী-রাসুল, মুমিন-নেককার, সত্যাশ্রয়ী বান্দাদের যুগ যুগ ধরে পরম ব্যাকুলতার সঙ্গে আল্লাহর ঘর তাওয়াফের মাধ্যমে হজের সূচনা হয়। হাজার বছরের আত্মনিবেদনের মাধ্যমে সূচিত হয়েছে হজ ও জিয়ারতের সুবিশাল প্রেক্ষাপট। তাই এ মহৎ কাজে বের হওয়ার প্রাক্কালে বায়তুল্লাহর মেহমানদের কিছু আবশ্যকীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হয়।  

হজ পালনের প্রথম শর্ত হলো নিয়তের পরিশুদ্ধতা। অর্থাৎ আপনি একমাত্র আল্লাহর উদ্দশে হজ পালনের নিয়ত করেছেন। প্রতিটি আমল আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য হওয়ার ক্ষেত্রে নিয়তের পরিশুদ্ধতা একান্ত প্রয়োজন। বিশুদ্ধ মনে আল্লাহর জন্য হজ করার নিয়ত মনেপ্রাণে গ্রহণ করে হজের প্রস্তুতি শুরু করা আবশ্যক। রাসুল (সা.) বলেছেন, আমলের প্রতিদান নিয়তের ওপর নির্ভরশীল (বুখারি: ১)। 
পরিশুদ্ধ নিয়তের পর আপনার প্রাথমিক প্রস্তুতি দরকার। হজে গমনকারী প্রথমত প্রাক-নিবন্ধন, পাসপোর্ট, ভিসা কার্যক্রম, মেডিকেল চেকআপ, টিকা গ্রহণ, পুলিশ ভেরিফিকেশন প্রভৃতি কাজ সম্পন্ন করবেন।

হজে গমনের আগে শারীরিক ও মানসিক প্রস্তুতি নিতে হবে। এ ছাড়া তিনি স্বীয় কর্মস্থল বা নিয়মিত ব্যস্ততা থেকে প্রায় দুই মাসের জন্য অবসর নেবেন, যেন তাঁর অনুপস্থিতিতে পরিবার-পরিজনসহ কর্মস্থলে তাঁর অভাববোধ কোনো ব্যত্যয় সৃষ্টি না করে। এর পর দরকার হজ সফরের পাথেয় সংগ্রহ করা।

হজের সফরকালীন প্রায় ৫০ দিনের জন্য প্রয়োজনীয় পাথেয় সঙ্গে রাখতে হবে। যেমন– আবশ্যকীয় পোশাক, দুই সেট ইহরামের কাপড়, ওষুধ, ব্যাগ, লাগেজ, জুতা, স্যান্ডেল, মিসওয়াক, সাবান, নেল কাটার, আয়না, চিরুনি, তায়াম্মুমের সামগ্রী, নারীদের ক্ষেত্রে হিজাব-নিকাব প্রভৃতি প্রস্তুত রাখতে হবে। আবার এটাও খেয়াল রাখতে হবে, অতিরিক্ত জিনিসপত্র নিতে গিয়ে যাতে সমস্যার সৃষ্টি না হয়। 
হজে আর্থিক ব্যয়ের ব্যাপারটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এ ক্ষেত্রে বেশ অর্থের দরকার পড়ে। সুতরাং পূর্বপ্রস্তুতি থাকা অত্যাবশ্যক। সরকারি-বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রী এজেন্সির মাধ্যমে সব বিষয়ে অবগত হবেন ও একটি প্রশিক্ষণে অংশ নেবেন। তিনি মক্কা-মদিনায় হোটেল ভাড়া, খাবার ব্যবস্থাপনা, কোরবানির প্রস্তুতি সম্পর্কে জেনে নেবেন এবং তার জন্য পরিমাণমতো সৌদি রিয়াল সংগ্রহ করবেন। 
হজের নিয়মকানুন জেনে নেওয়া জরুরি। হজ-সংক্রান্ত সুনির্দিষ্ট মাসআলা-মাসায়েল ভালোভাবে বুঝে নেবেন। মুআল্লিমের সাক্ষাতের আশায় বসে না থেকে হজের ফরজ, ওয়াজিব, নফল হুকুম-আহকাম, মাসআলা-মাসায়েল সম্পর্কে পূর্বজ্ঞান থাকা দরকার। এ ছাড়া তিনি জিয়ারত, মর্যাদাপূর্ণ স্থান ও তৎস্থানে পালনীয় আমলগুলো সম্পর্কে অবগত থাকবেন। তিনি এ বিষয়ে মাতৃভাষায় লিখিত বই-পুস্তিকা সঙ্গে নিতে পারেন।  

মুমিন অন্তরে পবিত্র মক্কা-মদিনা জান্নাতুল বাকি-মুয়াল্লা, বদর-উহুদ প্রান্তরের প্রতি যে শ্রদ্ধাবোধ আবহমানকাল থেকে চলে আসছে, তার পূর্ণতা পায় হজ আদায়ের মাধ্যমে। হজযাত্রী নিজ গৃহ থেকে বের হয়ে হজ ক্যাম্প, বিমানবন্দর, মক্কা-মদিনা, আরাফাহ-মিনা-মুজদালিফা সফর করবেন। সেখান থেকে তাওয়াফ, সায়ি কোরবানি, জিয়ারা সম্পন্ন শেষে নিজ বাড়িতে সহি সালামতে ফেরার ক্ষেত্রে মহান আল্লাহর তাওফিক চাইবেন। তাঁর কৃত হজ যেন ‘হজ্জে মাবরুর’ হিসেবে আল্লাহতায়ালা কবুল করেন– কায়মনোবাক্যে সে দোয়া করতে থাকবেন। ইনশাআল্লাহ, উল্লিখিত নিয়ম ও প্রয়োজনীয়তা মাথায় রাখলে হজ পালনকালে তেমন অসুবিধার সম্মুখীন হতে হবে না।
 
মুহাম্মদ ফয়েজুল্লাহ: অধ্যক্ষ, বসুরহাট ইসলামিয়া কামিল (স্নাতকোত্তর) মাদ্রাসা,
কোম্পানীগঞ্জ, নোয়াখালী
 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প রস ত ত র জন য আল ল হ দরক র

এছাড়াও পড়ুন:

মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলা: নাহিদের জবানবন্দি পেশ

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে জুলাই-আগস্টে ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ৪৭তম সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি পেশ করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক ও জুলাই আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া নাহিদ ইসলাম।

বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ জবানবন্দি পেশ শেষ করেন নাহিদ। তিনি গতকাল জবানবন্দি পেশ শুরু করেন।

আরো পড়ুন:

মালয়েশিয়ায় পৌঁছেছেন নাহিদ ইসলাম

মালয়েশিয়া যাচ্ছেন নাহিদ ইসলাম

আজ বিকেলে তাকে জেরা করবেন এই মামলায় পলাতক শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন।

এ মামলায় প্রসিকিউসন পক্ষে আজ চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম ও গাজী এসএইচ তামিম শুনানি করেন। সেই সাথে অপর প্রসিকিউটররা শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন। 

উক্ত মামলায় পলাতক শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে ছিলেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন। এ মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে পরে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।

মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলায় শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। 

একপর্যায়ে এ মামলায় দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদঘাটনে (অ্যাপ্রোভার) রাজসাক্ষী হতে সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের আবেদন মঞ্জুর করেন ট্র্যাইব্যুনাল। পরবর্তীকালে এ মামলার ৩৬ তম সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দেন রাজসাক্ষী পুলিশের সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন।খবর বাসসের।

এ মামলাটি ছাড়াও শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে আরো দুটি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে গুম-খুনের ঘটনায় তাকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হয়েছে রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায়।

গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, এর দলীয় ক্যাডার ও সরকারের অনুগত প্রশাসনসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে একের পর এক অভিযোগ জমা পড়ে। দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এসব অপরাধের বিচার কাজ চলছে।

ঢাকা/এসবি

সম্পর্কিত নিবন্ধ