রাজধানীর কমলাপুরে আবাসিক হোটেল সি ল্যান্ড থেকে সুমি রানী রায়ের লাশ উদ্ধারের ঘটনায় রুবেল (৩১) নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। বৃহস্পতিবার কুমিল্লা জেলার মেঘনা থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

র‍্যাব বলেছে, সুমিকে খুন করার কথা স্বীকার করেছেন রুবেল। কিছুদিন আগে টিকটকে সুমির সঙ্গে পরিচয় এবং তাঁদের মধ্যে সম্পর্ক হয়। পরে সুমিকে বিয়ে করার আশ্বাস দিয়ে রুবেল কমলাপুরের ওই হোটেলে ওঠেন। সেখানে কথা–কাটাকাটির একপর্যায়ে সুমিকে বালিশচাপা দিয়ে হত্যা করেন রুবেল।

বুধবার বেলা ১১টার দিকে পুলিশ কমলাপুর সি ল্যান্ড আবাসিক হোটেলের ছয়তলার একটি কক্ষ থেকে সুমি রানী রায়ের (৩৬) মরদেহটি উদ্ধার করে। ওই ঘটনায় সুমির স্বজনেরা মতিঝিল থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। এরপর র‍্যাব-৩ গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে এবং পরে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় আসামির নাম এবং অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হয়। বৃহস্পতিবার র‍্যাব-৩–এর একটি দল র‍্যাব-১১–এর সহযোগিতায় কুমিল্লার মেঘনা এলাকা থেকে রুবেলকে গ্রেপ্তার করে।

বৃহস্পতিবার র‍্যাব-৩–এর পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গ্রেপ্তার রুবেল র‍্যাব কর্মকর্তাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বলেছেন, দেড় বছর আগে সুমির সঙ্গে টিকটকের মাধ্যমে তাঁর পরিচয় হয়। একপর্যায়ে তাঁদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এ ঘটনা জানাজানি হলে সুমির পরিবারের পক্ষ থেকে রুবেলকে বলা হয় সুমির দুটি সন্তান রয়েছে। তাঁরা সুমির সঙ্গে রুবেলকে যোগাযোগ করতে নিষেধ করেন। এ নিয়ে সুমির বোন রুবেলের সঙ্গে কথা বললে রুবেল সুমিকে বিয়ে করবেন বলে জানান। পরে গত ২৫ মে সুমি তাঁর বোনকে ফোন করে জানান, তিনি ও রুবেল ঢাকায় অবস্থান করছেন। তাঁরা গত মঙ্গলবার মতিঝিলের কমলাপুরের আবাসিক হোটেল সি ল্যান্ডের একটি কক্ষে ভাড়ায় ওঠেন।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রুবেল র‍্যাব কর্মকর্তাদের বলেছেন, নিজেদের মধ্যে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে তাঁদের মধ্যে ঝগড়াঝাঁটি বাধে। এর জের ধরে রুবেল বুধবার সুমিকে বালিশচাপা দিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে হোটেল থেকে কৌশলে পালিয়ে যান।

মতিঝিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেজবাহ উদ্দিন বলেন, এর আগে একাধিকবার সি ল্যান্ড হোটেলের নিবন্ধন খাতায় সুমিকে স্ত্রী পরিচয় দিয়ে রুবেল ওই হোটেলে ওঠেন। রুবেল হোটেলের নিবন্ধন খাতায় মানিক চন্দ্র হিসেবে তাঁর নাম লিপিবদ্ধ করেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কমল প র

এছাড়াও পড়ুন:

মোহাম্মদপুরে বাসে বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া তরুণীকে হেনস্তার ভিডিও ভাইরাল, হেনস্তাকারী গ্রেপ্তার

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে বাসে বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া তরুণীর পোশাক নিয়ে কটূক্তি ও হেনস্তার ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার তিন দিন পর হেনস্তাকারীকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। গ্রেপ্তার নাজিম উদ্দিন (৪৫) ওই বাসের কন্ডাক্টর ও চালকের সহকারী বলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জানিয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মোহাম্মদপুরের বছিলা এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব।

ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, একটি বাসে এক তরুণী তাঁর পোশাক নিয়ে কটূক্তির প্রতিবাদ করছেন। বাসে ওঠার পর সামনের আসনে বসা ওই ব্যক্তি তাঁর পোশাক নিয়ে অশোভন মন্তব্য করেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে তরুণী প্রতিবাদ জানাতে সামনে এগিয়ে যান এবং প্রশ্ন করেন, ‘আমার পোশাক নিয়ে আপনার সমস্যা কী?’ পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে ওই ব্যক্তি উঠে দাঁড়িয়ে তরুণীকে চড় মারেন। মুহূর্তেই তরুণী জুতা খুলে পাল্টা আঘাত করেন। ভিডিওতে আরও দেখা যায়, ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে দুজনই বাসের সামনের দিকে পড়ে যান। তরুণী নিজেকে সামলে নিয়ে আবারও প্রতিরোধ করেন।

ঘটনার ভিডিওটি ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ার পর নানামুখী প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। অনেকেই তরুণীর সাহসী অবস্থানের প্রশংসা করেছেন, অন্যদিকে কেউ কেউ ঘটনাটিতে উভয় পক্ষের আচরণ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

নাজিম উদ্দিনকে আটক করার সঙ্গে যুক্ত র‍্যাব-৪–এর মেজর আবরার ফয়সাল সাদী প্রথম আলোকে বলেন, তরুণীকে কটূক্তি ও হেনস্তা করার ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ার পর হেনস্তকারী ব্যক্তিকে আটক করতে র‍্যাব-৪–এর একটি দল অভিযান শুরু করে। গতকাল সন্ধ্যায় নাজিম উদ্দিনকে শনাক্ত করে আটক করা হয়। পরে তাঁকে মোহাম্মদপুর থানায় সোপর্দ করা হয়।

যোগাযোগ করা হলে মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী রফিক প্রথম আলোকে বলেন, হেনস্তার শিকার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী শ্লীলতাহানির অভিযোগ এনে আজ শুক্রবার সকালে নাজিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। ওই মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। নাজিম উদ্দিন ধানমন্ডি ১৫ থকে মোহাম্মদপুরের বছিলায় চলাচলরত রমজান পরিবহনের কন্ডাক্টর। ভাড়া নিয়ে কথা–কাটাকাটির জের ধরে তাঁদের দুজনের মধ্যে মারামারি হয়। ছাত্রীটি মোহাম্মদপুরের একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েন।

আজ সন্ধ্যায় পাঠানো র‍্যাব-৪–এর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি রমজান পরিবহনের একটি বাস ধানমন্ডি ১৫ থেকে মোহাম্মদপুরের বছিলায় যাচ্ছিল। বাসটি বছিলার মেট্রো হাউজিংয়ের সামনে পৌঁছালে চালকের সহকারী মো. নিজাম উদ্দিন বাসটির যাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া তরুণীর দিকে তাকিয়ে তাঁর পোশাক নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেন। এতে ওই তরুণী প্রতিবাদ করায় নাজিম উদ্দিন তাঁর সঙ্গে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেন এবং তাঁকে চড় মারেন। একপর্যায়ে তরুণীও আত্মরক্ষার্থে নিজের পায়ের জুতা খুলে অভিযুক্ত নাজিম উদ্দিনকে আঘাত করেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দুই শিশুর ঝগড়ায় জড়ালেন বড়রা, বড় ভাইয়ের হাতে খুন ছোট ভাই
  • রাজশাহীতে ‘প্রেমিকার’ সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে মারধরের শিকার কিশোরের মৃত্যু
  • প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে মারধরের শিকার কিশোরের মৃত্যু
  • মোহাম্মদপুরে বাসে বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া তরুণীকে হেনস্তার ভিডিও ভাইরাল, হেনস্তাকারী গ্রেপ্তার