মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘ঘনিষ্ঠজন’ হিসেবে পরিচিত ধনকুবের ইলন মাস্ক মার্কিন প্রশাসনে তাঁর বিশেষ দায়িত্ব ছাড়ছেন। হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা স্থানীয় সময় বুধবার গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। ওই কর্মকর্তা জানান, ইলন মাস্ক প্রশাসন ছেড়ে যাচ্ছেন। দ্রুতই এ প্রক্রিয়া শুরু হবে।

ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারণায় বিশ্বের শীর্ষ ধনী এবং টেসলা ও স্পেসএক্সের প্রধান ইলন মাস্ক জোরালো ভূমিকা রেখেছিলেন। তিনি নির্বাচনে সবচেয়ে বড় অনুদানদাতাও ছিলেন। তাঁর সঙ্গে প্রেসিডেন্টের ঘনিষ্ঠতা সব মহলে আলোচনার কেন্দ্রে থেকেছে। রয়টার্স জানায়, গত মঙ্গলবার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে পোস্ট করেন মাস্ক। তিনি লেখেন, ট্রাম্প প্রশাসনের ‘সরকারি দক্ষতা বিভাগে’র (ডোজ নামে পরিচিত) অংশ হিসেবে তাঁর বিশেষ সরকারি কর্মকর্তার দায়িত্ব শেষ হয়ে আসছে।
গত জানুয়ারিতে দ্বিতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পর ট্রাম্প তাঁর নতুন প্রশাসনে ইলন মাস্ককে যুক্ত করেন। তাঁকে নবগঠিত ডোজের দায়িত্ব দেওয়া হয়। নতুন এ বিভাগের কাজ যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সরকারের ব্যয় ও কর্মিবহর কমানো।

বিবিসি জানায়, ইলন মাস্কের দায়িত্ব ছিল সাময়িক। তাই এ বিদায় কোনো অপ্রত্যাশিত ঘটনা নয়। বিশেষ সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে তাঁর সরকারি দায়িত্বের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা আগামী ৩০ মে। ১৩০ দিনের মেয়াদে তিনি দায়িত্বে এসেছিলেন। তবে ট্রাম্প প্রশাসন জানিয়েছে, ফেডারেল সরকারকে পুনর্গঠন ও ব্যয়-কর্মী কমাতে ডোজের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। মাস্ক বলেন, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ডোজের কার্যক্রম আরও জোরদার হবে। সরকারের মাধ্যমে এটা জীবনের অংশ হয়ে উঠবে।

দ্য নিউইয়র্ক টাইমস লিখেছে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অভ্যন্তরীণ নীতি নিয়েও সমালোচনা করেছেন মাস্ক। এতে মূল্যস্ফীতি বাড়বে বলেও তিনি সতর্ক করেন। মধ্যপ্রাচ্যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা-সংক্রান্ত তথ্যকেন্দ্র স্থাপনের চুক্তি প্রতিদ্বন্দ্বী কোম্পানির হাতে চলে যাওয়া নিয়েও তিনি ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সমালোচনা করেন। 
এক সময় মাস্ককে ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ’ মনে করা হতো। তবে এখন তাদের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে। ইলন মাস্ক জানান, নিজের কোম্পানিগুলোকে বেশি সময় দিতেই তিনি সরকারি দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইলন ম স ক ইলন ম স ক কর মকর ত সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন

টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।

এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।

গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।

প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ