দায়িত্ব ছাড়ছেন ট্রাম্পের ‘ঘনিষ্ঠজন’ ইলন মাস্ক
Published: 30th, May 2025 GMT
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘ঘনিষ্ঠজন’ হিসেবে পরিচিত ধনকুবের ইলন মাস্ক মার্কিন প্রশাসনে তাঁর বিশেষ দায়িত্ব ছাড়ছেন। হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা স্থানীয় সময় বুধবার গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। ওই কর্মকর্তা জানান, ইলন মাস্ক প্রশাসন ছেড়ে যাচ্ছেন। দ্রুতই এ প্রক্রিয়া শুরু হবে।
ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারণায় বিশ্বের শীর্ষ ধনী এবং টেসলা ও স্পেসএক্সের প্রধান ইলন মাস্ক জোরালো ভূমিকা রেখেছিলেন। তিনি নির্বাচনে সবচেয়ে বড় অনুদানদাতাও ছিলেন। তাঁর সঙ্গে প্রেসিডেন্টের ঘনিষ্ঠতা সব মহলে আলোচনার কেন্দ্রে থেকেছে। রয়টার্স জানায়, গত মঙ্গলবার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে পোস্ট করেন মাস্ক। তিনি লেখেন, ট্রাম্প প্রশাসনের ‘সরকারি দক্ষতা বিভাগে’র (ডোজ নামে পরিচিত) অংশ হিসেবে তাঁর বিশেষ সরকারি কর্মকর্তার দায়িত্ব শেষ হয়ে আসছে।
গত জানুয়ারিতে দ্বিতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পর ট্রাম্প তাঁর নতুন প্রশাসনে ইলন মাস্ককে যুক্ত করেন। তাঁকে নবগঠিত ডোজের দায়িত্ব দেওয়া হয়। নতুন এ বিভাগের কাজ যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সরকারের ব্যয় ও কর্মিবহর কমানো।
বিবিসি জানায়, ইলন মাস্কের দায়িত্ব ছিল সাময়িক। তাই এ বিদায় কোনো অপ্রত্যাশিত ঘটনা নয়। বিশেষ সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে তাঁর সরকারি দায়িত্বের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা আগামী ৩০ মে। ১৩০ দিনের মেয়াদে তিনি দায়িত্বে এসেছিলেন। তবে ট্রাম্প প্রশাসন জানিয়েছে, ফেডারেল সরকারকে পুনর্গঠন ও ব্যয়-কর্মী কমাতে ডোজের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। মাস্ক বলেন, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ডোজের কার্যক্রম আরও জোরদার হবে। সরকারের মাধ্যমে এটা জীবনের অংশ হয়ে উঠবে।
দ্য নিউইয়র্ক টাইমস লিখেছে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অভ্যন্তরীণ নীতি নিয়েও সমালোচনা করেছেন মাস্ক। এতে মূল্যস্ফীতি বাড়বে বলেও তিনি সতর্ক করেন। মধ্যপ্রাচ্যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা-সংক্রান্ত তথ্যকেন্দ্র স্থাপনের চুক্তি প্রতিদ্বন্দ্বী কোম্পানির হাতে চলে যাওয়া নিয়েও তিনি ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সমালোচনা করেন।
এক সময় মাস্ককে ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ’ মনে করা হতো। তবে এখন তাদের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে। ইলন মাস্ক জানান, নিজের কোম্পানিগুলোকে বেশি সময় দিতেই তিনি সরকারি দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ইলন ম স ক ইলন ম স ক কর মকর ত সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
কে জানত, এই নগরীর রাজপথ আমাকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে রাখবে
২৯ মে ২০২৫। আমার জীবনের অন্যতম দুঃসহ একটি দিন হয়ে থাকবে। সকাল ৯টার দিকে জরুরি সাক্ষাৎকার ছিল বনানীতে। উত্তরা থেকে রওনা দিলাম সাড়ে ৬টায়। তখনো মনে হয়েছিল, হাতে যথেষ্ট সময় আছে। কিন্তু কে জানত, এই নগরীর রাজপথ আমাকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে রাখবে?
আবদুল্লাহপুর মোড় দাঁড়িয়ে দেখলাম, ঘন কালো মেঘে ছেয়ে গেছে আকাশ। মুহূর্তেই শুরু হলো মুষলধারে বৃষ্টি। সেই সঙ্গে শুরু যানজটও। এমন ঝোড়ো বৃষ্টিতে রাস্তায় ট্রাফিক পুলিশ নেই বললেই চলে। যে কয়জন ছিলেন, তাঁরাও বিপর্যস্ত অবস্থায়।
আমি তখন রাইড শেয়ারিংয়ের একটি মোটরসাইকেলে বসে। হঠাৎ চালক মোটরসাইকেল থেকে নামার অনুরোধ করলেন। কারণ, রাস্তায় অনেক বেশি কাদা। প্যান্ট হাঁটু অবধি গুটিয়ে প্রায় আধা কিলোমিটার হেঁটে চলে এলাম আজমপুর পর্যন্ত। সেখানে সিএনজিচালিত অটোরিকশা বা রিকশা খোঁজার চেষ্টা করলাম। লাভ হলো না। রাস্তার সবাই যেন উদ্ভ্রান্ত। কী করবেন বুঝতে পারছেন না।
রাস্তায় প্রায় সবার চোখে-মুখে লেগে আছে বিরক্তি আর ক্লান্তির স্পষ্ট ছাপ। হঠাৎ নজর গেল এক মায়ের দিকে। ছোট্ট বাচ্চাকে কোলে নিয়ে এই ঝড়-বৃষ্টিতে হাঁটছেন তিনি। দুজনেই ভিজে একাকার। শিশুটি অনবরত কাঁদছে। আর মায়ের মুখে কেবলই অসহায়ত্ব।
সব মিলিয়ে প্রায় চার ঘণ্টা পর পৌঁছে যাই বনানীতে। সাক্ষাৎকারের সময় পেরিয়েছে অনেক আগেই। সেখানেও দেখি, অনেকেই বৃষ্টিতে ভিজেছেন। ক্লান্ত ও হতাশ হয়ে অফিসে প্রবেশ করছেন। কেউ কেউ নাকি মুঠোফোনে জানিয়েছেন, এখনো তাঁরা রাস্তাতেই আটকে।
এখানেই শেষ নয়। রাতেও এই ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। গন্তব্যে পৌঁছাতে পৌঁছাতে রাত প্রায় ১০টা বেজে যায়। তখন মনে হচ্ছিল, ঢাকার রাস্তায় ভোগান্তি থেকে কোনো মুক্তি নেই।