চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার মইজ্জারটেক কোরবানির পশুর হাটে এবার দেখা মিলেছে মরুর উটের। এর আগে ২০২২ সালে এ হাটে গোলাপি মহিষ তুলে বেশ সাড়া ফেলে দিয়েছিলেন এক খামারি। এবার সেই চমককে ছাপিয়ে গেছে উটের উপস্থিতি। যশোরের বেনাপোলের ফিরোজ-মামুন ডেইরি ফার্ম থেকে আনা হয়েছে তিনটি উট। হাটে তোলার পরপরই উট দেখতে ভিড় করছেন দর্শনার্থী ও ইউটিউবাররা।

ফিরোজ-মামুন ডেইরি ফার্মের প্রতিনিধি গাজী সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে নতুন কিছু উপস্থাপনের চিন্তা থেকেই উটগুলো হাটে এনেছি। একেকটি ১২ থেকে ১৫ মণ। কোরবানিতে শৌখিন ক্রেতাদের জন্য এসব উট আনা হয়েছে। পাশাপাশি বড় আকৃতির প্রায় ৫০টি গরুও এনেছি।’

গাজী সিরাজুল ইসলাম জানান, দুই বছর আগে ঢাকার একটি প্রতিষ্ঠান থেকে কিনে খামারে নেওয়া হয় এসব উট। এগুলোকে প্রতিদিন ভুট্টা, ছোলা, গম, বুটের খোসা, গমের ছোলা ও ঘাস খেতে দিতে হয়।

হাটসংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার সকালে যশোরের বেনাপোল থেকে ট্রাকে করে তিনটি উট আনা হয় মইজ্জারটেক পশুর হাটে। প্রতিটি উটের দাম হাঁকানো হয়েছে ৩০ থেকে ৩৫ লাখ টাকা। তবে গতকাল শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য কোনো দরদাম হয়নি।

গতকাল দুপুরে হাটে গিয়ে দেখা যায়, মূল প্রবেশপথের বাঁ পাশে ত্রিপলের নিচে রাখা হয়েছে উটগুলো। সেগুলোর চারপাশে জটলা করে আছেন নানা বয়সী মানুষ। অনেকেই মুঠোফোনে ছবি তুলছেন, ভিডিও করছেন, কেউ কেউ আবার ইউটিউব কনটেন্ট তৈরিতে ব্যস্ত। হাটে মাইকে ঘোষণা দিয়ে জানানো হচ্ছে—এখানে গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়ার পাশাপাশি উটও পাওয়া যাচ্ছে।

ডেইরি ফার্মের আরেক প্রতিনিধি মন্টু মিয়া বলেন, ‘মইজ্জারটেক হাটে চাহিদা বেশি, পশুর দামও তুলনামূলক ভালো পাওয়া যায়। তাই এবার উট এনেছি। আশাবাদী, উপযুক্ত দামে বিক্রি হবে।’

মইজ্জারটেক হাটের ইজারাদার জসিম উদ্দিন জুয়েল বলেন, ‘নগরের কাছাকাছি হওয়ায় হাট ইতিমধ্যেই জমে উঠেছে। এবার উট আসায় হাটে নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে। ক্রেতারা পছন্দমতো দরদাম করে পশু কিনতে পারছেন।’

ব্যাপারীরা জানান, সাধারণত ঈদ উপলক্ষে ভারতের রাজস্থান, গুজরাটের মরুভূমি এলাকা এবং হরিয়ানা থেকে উট ও দুম্বা আমদানি করা হয়। কখনো কখনো পাকিস্তান থেকে উট আনা হয়। সীমান্তবর্তী জেলা যশোর, চাঁপাইনবাবগঞ্জের স্থলবন্দর হয়ে উটগুলো বাংলাদেশে আসে। প্রতিবছর হাটে গরু, খাসি, মহিষের পাশাপাশি উট ও দুম্বারও ক্রেতা থাকে। রাজধানী ঢাকার বাজারে উটের দেখা বেশি মেলে, চট্টগ্রামে তুলনামূলক কম দেখা যায়।

উটের মাংস অনেকের কাছেই একেবারে নতুন অভিজ্ঞতা। এই মাংস স্বাদে হালকা মিষ্টি ও নরম। বিশেষ করে কম বয়সী উটের মাংস বেশি সুস্বাদু। মাংসে চর্বির পরিমাণ থাকে কম।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ধবলধোলাইয়ের শঙ্কা, সম্মান বাঁচানোর মিশনে বাংলাদেশ

একদিকে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে (বিসিবি) নেতৃত্ব পরিবর্তনের উত্তেজনা, অন্যদিকে মাঠে টানা দুই টি-টোয়েন্টিতে হারের হতাশা। সব মিলিয়ে অস্থির সময় পার করছে দেশের ক্রিকেট। এমন এক সময়েই আজ রোববার পাকিস্তানের বিপক্ষে তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টি খেলতে নামছে বাংলাদেশ। লক্ষ্য একটাই, ধবলধোলাই এড়ানো।

নতুন বিসিবি সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন সাবেক অধিনায়ক আমিনুল ইসলাম বুলবুল। তিনি দায়িত্ব নেয়ার কয়েক ঘণ্টার মাথায়ই সিরিজ খুইয়েছে বাংলাদেশ দল। স্বাভাবিকভাবেই এত অল্প সময়ে মাঠের পারফরম্যান্সে তার প্রভাব পড়ার সুযোগ ছিল না। কিন্তু দায়িত্ব গ্রহণের পর দুই দিন যেতে না যেতেই ভক্তদের প্রত্যাশার ভার তার কাঁধে।

পাকিস্তানের বিপক্ষে শেষ ম্যাচে হারলেই তিন ম্যাচের সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হবে বাংলাদেশ। আরব আমিরাতের মতো দলের কাছেও হারের পর পাকিস্তানের কাছে ধবলধোলাই হলে তা হবে লিটন দাসদের জন্য আরেকটি বড় ধাক্কা।

দলের দুরবস্থার মূল কারণ ব্যাটিং। প্রথম দুই ম্যাচে ভালো সূচনা করেও মাঝপথে ভেঙে পড়ে বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপ। দুই ম্যাচেই পাকিস্তান আগে ব্যাট করে ২০১ রানের বড় পুঁজি গড়লেও জবাবে বাংলাদেশ প্রথম ম্যাচে অলআউট হয় ১৬৪ রানে এবং দ্বিতীয়টিতে ১৪৪ রানে।

পাকিস্তানের ব্যাটারদের আক্রমণাত্মক মেজাজ বিপাকে ফেলেছে সফরকারীদের। তবে কিছুটা স্বস্তি দিয়েছে বাংলাদেশের বোলাররা, বিশেষ করে ডেথ ওভারে। দুই ম্যাচেই শেষ দিকে পাকিস্তানকে নিয়ন্ত্রণে আনতে পেরেছেন তারা। কিন্তু ব্যাটিংয়ে আগ্রাসনের অভাব স্পষ্ট। ব্যাটাররা বারবার ছন্দপতনের শিকার হয়েছেন, রান তাড়ায় চাপ নিতে পারেননি। এ অবস্থায় কেউ কেউ মনে করছেন, টার্গেট ডিফেন্ড করাই হতে পারে বাংলাদেশের জন্য বেশি উপযোগী কৌশল।

আইসিসির সর্বশেষ র‍্যাংকিং বলছে, টি-টোয়েন্টিতেও ১০ নম্বরে নেমে গেছে বাংলাদেশ। এখন দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। তাই সম্মান বাঁচাতে হলেও আজ জয়ের বিকল্প নেই লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের। আজকের ম্যাচের পারফরম্যান্সেই জানা যাবে, শেষ পর্যন্ত ধবলধোলাই এড়াতে পারে কি না বাংলাদেশ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ