মনের ক্ষত সারাতে এসব কাজ করতে পারেন
Published: 31st, May 2025 GMT
জীবনে আপনি যত খারাপ অনুভূতির সম্মুখীনই হোন না কেন, সব সময়ের জন্যই খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো নিজেকে ভালোবাসা। অন্যের কথায় নিজেকে ছোট ভাবতে নেই। প্রত্যেক মানুষই অনন্য। নিজের প্রতি বিশ্বাস রাখুন। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে নিজের মনের ক্ষত আপনি নিজেই সারিয়ে তুলতে পারবেন। মনের ক্ষত সারানোর কিছু উপায় জানালেন রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতাল লিমিটেডের চিকিৎসা মনোবিজ্ঞানী শারমিন হক।
কারণ বিশ্লেষণঠিক কোন কারণে মনটা বেশি আহত হয়েছে, তা বুঝতে চেষ্টা করুন। আবেগের মুহূর্তে গোটা পৃথিবীকেই অন্য রকম দেখায়। ধীরেসুস্থে ঠান্ডা মাথায় ভেবে দেখুন কেন কষ্ট পাচ্ছেন। অনেক ক্ষেত্রেই মনের ক্ষতের কারণ হয়ে দাঁড়ায় কেবল অন্যের তির্যক কথা। কারও কোনো কথা আপনার জীবনে বড়সড় প্রভাব ফেলছে কি না, তা ভেবে দেখুন। অবশ্যই মনে রাখবেন, চমৎকার সুন্দর এই পৃথিবী অনেক ক্ষেত্রেই নিষ্ঠুর আচরণ করতে পারে যে কারও সঙ্গে। অনেক মানুষ তাঁর ব্যক্তিগত রাগ-ক্ষোভ অন্যের ওপর প্রকাশ করে ফেলেন। যাঁর কারণে আপনি কষ্ট পেলেন, তিনি যদি আপনার আপনজন হয়ে থাকেন, তাঁর ওই আচরণের কারণ উপলব্ধি করতে চেষ্টা করুন। আর খুব কাছের কেউ না হলে অন্যের আচরণকে অতটা গুরুত্ব দিতে নেই।
ক্ষমা করুন, নিজেকেওকাছের মানুষদের ক্ষমা করে দিন। তাতে আপনার নিজের মনের ক্ষত সারানো সহজ হবে। আবেগের বশে আপনি কারও সঙ্গে খারাপ আচরণ করে থাকলে সেটিও আপনার মন খারাপের কারণ হতে পারে। নিজের কৃতকর্মের জন্য নিজেকে ক্ষমা করুন। আপনজনের কাছে ছোট্ট একটি শব্দে দুঃখ প্রকাশ করলে তাতেও মনের আঘাত সামলানো সহজ হয়।
ভাবনাগুলো ভাগ করে নিনকী কারণে কষ্ট পাচ্ছেন, তা নিয়ে আলাপ করতে পারেন খুব কাছের কোনো মানুষের সঙ্গে। যাঁর সঙ্গে সমস্যা হয়েছে, তাঁর সঙ্গেই আলোচনা করতে পারেন। সমাধানে আসতে পারেন। কিংবা ধরা যাক, অফিসে কোনো সমস্যা হয়েছে, যা নিয়ে আপনি অশান্তিতে আছেন। সে বিষয়ে জীবনসঙ্গীর সঙ্গে কথা বলতে পারেন। তাতে বিষয়টির সমাধান না হলেও আপনার মনের কষ্ট কমবে।
এমন কিছু কথা থাকতে পারে, যা আপনি কাউকেই বলতে পারছেন না, সেসব নিজের মতো করে লিখে রাখুন.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু : পুলিশের দাবি, বাড়ির ছাদ থেকে পড়েছেন, হত্যার অভিযোগ পরিবারের
ভোলা সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সাইফুল্লাহ আরিফকে (৩০) হত্যা করা হয়েছে বলে তাঁর পরিবার অভিযোগ করেছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ভোলা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে তাঁর বাবা বশির উদ্দিন (মাস্টার) এই অভিযোগ করেন।
এ সময় বশির উদ্দিন বলেন, পুলিশ দাবি করছে, ছাদ থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ছাদ থেকে পড়ার কোনো সুযোগ নেই; সেখানে বাঁশের বেড়া ও প্রতিটি তলায় ব্যালকনি ছিল। পুলিশের আচরণ শুরু থেকেই সন্দেহজনক।
এর আগে গত শনিবার পুলিশ সুপার শরীফুল হক তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন, প্রাথমিক তদন্তের তথ্য অনুযায়ী অসতর্কতাবশত নিজ বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে সাইফুল্লাহ আরিফ মারা গেছেন।
সাইফুল্লাহ আরিফ ভোলা পৌরসভার কালীবাড়ি রোডে নবী মসজিদ গলি এলাকার বশির উদ্দিনের ছেলে। গত ৩১ আগস্ট ভোরে নিজ বাড়ির সামনে থেকে সাইফুল্লাহ আরিফের লাশ উদ্ধার করা হয়।
আজ দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে বশির উদ্দিন বলেন, ‘আমার ছেলে দুর্ঘটনায় নয়, তাঁকে হত্যা করা হয়েছে। এর কিছু প্রমাণ আছে। আরিফের শরীরে একাধিক কাটা ও ভাঙা জখম ছিল, এমনকি হাতের রগ কাটা ছিল। পুলিশের দাবি করছে, ছাদ থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যুর সুযোগ নেই, কারণ, ছাদে বাঁশের বেড়া ও প্রতিটি তলায় ব্যালকনি ছিল। পুলিশ সুপার আমার ছেলেকে নেশাগ্রস্ত আখ্যা দিলেও তাঁর কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন ছাড়া পুলিশ কীভাবে এমন কথা বলতে পারে। পুলিশের আচরণ শুরু থেকেই সন্দেহজনক। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
বশির উদ্দিন আরও বলেন, সাইফুল্লাহ আরিফ কোনো ধরনের মাদকের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। সে ছাত্রলীগের সহসভাপতি হলেও কখনো ক্ষমতার অপব্যবহার করেনি। হত্যাকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় পুলিশ সত্য গোপন করছে। সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত করতে মামলাটি সিআইডি বা পিবিআইয়ের কাছে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়ার দাবি জানান তিনি।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বশির উদ্দিন বলেন, তাঁর ছেলের সঙ্গে অনেকের বিরোধ ছিল। তবে জমিজমার বিরোধ ও মাদক ব্যবসার বিরোধ নিয়ে তাঁর ছেলে খুন হয়নি। এগুলোর সঙ্গে সে জড়িত ছিল না।
শনিবার পুলিশ শরীফুল হক তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সাইফুল্লাহ আরিফের মৃত্যুর রহস্য উদ্ঘাটনে প্রাথমিক তদন্ত শেষে জানা যায়, তিনি অসতর্কতাবশত নিজ বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে মারা গেছেন। ৩০ আগস্ট দিবাগত রাত অনুমান ১২টা ১৫ মিনিটে রাতের খাবার শেষে সাইফুল্লাহসহ পরিবারের সবাই নিজ নিজ ঘরে ঘুমাতে যান। ভোর ৫টা ১০ মিনিটে ফজরের নামাজের জন্য বের হওয়ার সময় তাঁর বাবা বশির উদ্দীন (৭০) বাড়ির সামনে গেটের পাশে রক্তাক্ত অবস্থায় ছেলের মরদেহ দেখতে পান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ভোলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। সুরতহালে দেখা যায়, আরিফের মাথা ও হাতে গুরুতর আঘাত ছিল। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, আরিফ দীর্ঘদিন ধরে নেশায় আসক্ত ছিলেন এবং হতাশাগ্রস্ত অবস্থায় প্রায়ই ছাদে যেতেন। ঘটনার দিন রাতেও তিনি ছাদে ওঠেন এবং অসতর্কতাবশত রেলিংবিহীন অংশ থেকে পড়ে গিয়ে গুরুতর জখমপ্রাপ্ত হয়ে মারা যান।
পরিবারের অভিযোগ সম্পর্কে আজ দুপুরে পুলিশ সুপার শরীফুল হক মুঠোফোনে বলেন, ‘ওই ঘটনায় তদন্ত চলমান। সংবাদ সম্মেলনে প্রাথমিক তদন্তের কথা জানানো হয়েছে। তদন্তে তথ্য সংযোগ-বিয়োগের সুযোগ রয়েছে।’