কুড়িগ্রামের রৌমারী সীমান্তের আকাশে শুন্যরেখা থেকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে এক কিলোমিটার ভিতরে ঢুকে অবৈধভাবে পাঁচটি ড্রোন উড়িয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)।

শুক্রবার (৩০ মে) রাত সাড়ে ৮টা থেকে রাত ৯টা ৪৫ মিনিট পর্যন্ত কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার বড়াইবাড়ী ও বারবান্দা সীমান্তের গ্রামের ওপরে ভারতীয় কাকড়িপাড়া বিএসএফ ক্যাম্প থেকে এ ড্রোনগুলো উড়ানো হয়েছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রৌমারী সদর ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ফিরোজ মিয়া।

ফিরোজ মিয়া জানান, গত ২৭ মে বড়াইবাড়ী সীমান্তের ১০৬৭ মেইন পিলার দিয়ে আসামের ১৪ জন ভারতীয় নাগরিককে বিএসএফ কর্তৃক পুশইন করার পর থেকে ভারত বিভিন্নভাবে বাংলাদেশে নজদারি করছে। গত ২৭ মে সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটের দিকেও পাঁচটি ড্রোন উড়িয়ে বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকা পর্যবেক্ষণ করেছিল বিএসএফ। 

এরপর শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টায় বাংলাদেশের বড়াইবাড়ী ও বারবান্দা গ্রামের আকাশে ভারতের ৪-৫টি ড্রোন অবৈধভাবে উড়ছিল। এসময় বড়াইবাড়ী বিজিবি ক্যাম্পের ওপরও ড্রোনগুলো উড়িয়ে পর্যবেক্ষণ করছে বিএসএফ।

তিনি বলেন, “ভারতের এমন আচরণের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। পাশাপাশি রাষ্ট্রীয়ভাবে এর প্রতিকার চাচ্ছি। কেন বাংলাদেশের সাথে ভারত এরকম বৈরী আচরণ করছে!”

বড়াইবাড়ী সীমান্তের স্থানীয় বাসিন্দা ফারুক মিয়া জানান, শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টায় আমাদের গ্রামসহ বিজিবি ক্যাম্পের ওপর দিয়ে ভারত অন্যায়ভাবে ড্রোন উড়িয়েছে। এতে সীমান্তবর্তী সাধারণ মানুষের মাঝে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। ভারতের এসব ড্রোন উড়ানো বন্ধে সরকার যেন পদক্ষেপ নেয়। তা না হলে সীমান্তের বড় দুর্ঘটনা ঘটাতে পারে বিএসএফ।

এ বিষয়ে জানতে বড়াইবাড়ী ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার আঞ্জু মিয়ার মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে জামালপুর ৩৫ বিজিবি এক কর্মকর্তা বলেন, ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিএসএফ রাতে ড্রোন উড়িয়ে আন্তর্জাতিক আইন ভঙ্গ করেছে।

বিজিবির পক্ষ থেকে প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। বিজিবিও ড্রোন উড়িয়ে পর্যবেক্ষণ করছে। 

উল্লেখ্য, এর আগে গত মঙ্গলবার (২৭ মে) সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে পুশইন উত্তেজনার মধ্যে রৌমারী সীমান্তের বড়াইবাড়ী সীমান্ত এলাকায় ড্রোন উড়িয়ে পর্যবেক্ষণ করেছিল বিএসএফ। একই দিন রাত ১০টা ৪৩ মিনিটে সাহেবের আলগা বিওপি এলাকায় তিনটি ড্রোন উড়িয়েছিল ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ।

ঢাকা/বাদশাহ্/এস

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এসএফ

এছাড়াও পড়ুন:

পরশুরাম সীমান্তের নোম্যান্সল্যান্ডে ভারতের খাল খনন, বিজিবির প্রতিবাদ

জমে থাকা বৃষ্টির পানি সরানোর জন্য ফেনীর পরশুরাম উপজেলার মির্জানগর ইউনিয়নের বল্লামুখা বেড়িবাঁধ এলাকার নোম্যান্সল্যান্ডে খাল খনন করছে বিএসএফ। শনিবার (৩১ মে) দুপুরে ভারী বৃষ্টির মধ্যে তারা কাজ করে। এ ঘটনায় বিকেলে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে প্রতিবাদ জানিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।

পতাকা বৈঠকে বিজিবির পক্ষে কালিকাপুর ক্যাম্পের সুবেদার হানিফ এবং বিএসএফের পক্ষে আইসিনগর ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার উপস্থিত ছিলেন।

বিজিবি জানায়, ভারতীয় অংশে জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য বিএসএফ তাদের অংশে ড্রেনেজ ব্যবস্থা করে। যার কিছু অংশ নোম্যান্সল্যান্ডের ২০-৩০ মিটারের মধ্যে চলে আসায় বিজিবি বাধা দিয়েছে।

আরো পড়ুন:

ফেনী সীমান্ত দিয়ে আরো ১৩ জনকে ঠেলে পাঠাল বিএসএফ

খাগড়াছড়ি সীমান্ত দিয়ে আরো ১৪ জনকে ঠেলে পাঠাল বিএসএফ

এলাকাবাসী জানান, খাল খননের প্রথম চেষ্টা হয় গত বৃহস্পতিবার রাতে মির্জানগর ইউনিয়নের পূর্ব রাঙ্গামাটিয়া গ্রামের সীমান্ত পিলার ২১৫৭/১১-এস সংলগ্ন এলাকায়। স্থানীয়দের সহযোগিতায় বিজিবির বাধায় সেদিন পিছু হটে বিএসএফ। 

স্থানীয় বাসিন্দা মমতাজ মিয়া বলেন, ‍“বৃষ্টির রাতে স্কেভেটর নিয়ে এসে তারা (বিএসএফ) খাল কাটার চেষ্টা করে। বিজিবির সঙ্গে আমরাও গিয়ে তাদের বাধা দেই। পরে তারা চলে যায়।”

পূর্ব রাঙ্গামাটিয়ার বাসিন্দা মো. মজনু বলেন, “সীমান্ত পিলারের কাছে বাঁধ না দিলে ভারতীয় পানি আমাদের গ্রামগুলোতে ঢুকবে।”

বিজিবি সূত্র জানায়, পতাকা বৈঠকে বিএসএফ জানিয়েছে, অতিরিক্ত বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের জন্য তারা ড্রেন তৈরি করেছে, যা বাংলাদেশে বন্যা বা বাঁধে ক্ষতির কারণ হবে না। তারা দাবি করেছে, বাংলাদেশ বল্লামুখায় নোম্যান্সল্যান্ডে বাঁধ নির্মাণ করেছে, যার ফলে ভারতীয় এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।

বিজিবি ফেনী ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মোশারফ হোসেন বলেন, “নোম্যান্সল্যান্ডে স্থাপনা নির্মাণ উভয় দেশের নীতিমালায় নিষিদ্ধ। তাই আমরা পতাকা বৈঠকে এ বিষয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছি।”

তিনি আরো বলেন, “নোম্যান্সল্যান্ডে ভারত খাল খনন করেছে বিষয়টি পুরোপুরি সত্য নয়। মূলত বাংলাদেশ অংশে বল্লামুখা বাঁধ নির্মাণের কারণে ভারতের ত্রিপুরা এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য তারা তাদের অংশে ড্রেনেজ ব্যবস্থা করে। যার কিছু অংশ নোম্যান্সল্যান্ডের ২০-৩০ মিটারের মধ্যে চলে আসায় আমরা বাঁধা দিয়েছি। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।” 

পরশুরাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরিফুর রহমান বলেন, “ভারতের সুবিধার্থে সীমান্তে টিলা কেটে পানি বাংলাদেশে ঢুকিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল। বিজিবি ও স্থানীয়দের প্রচেষ্টায় তা ঠেকানো গেছে। আমরা সতর্ক আছি, এমন কাজ করতে দেওয়া হবে না।”

ঢাকা/সাহাব/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বনে শুটিংয়ে জয়ার প্রশ্ন
  • বৃষ্টিতে গলে পড়ছে ভবনের ইট
  • সীমান্তে বাংলাদেশিকে গুলি করে হত্যার পর লাশ নিয়ে গেছে বিএসএফ
  • কুলাউড়া সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি তরুণ নিহত
  • পরশুরাম সীমান্তের নোম্যান্সল্যান্ডে ভারতের খাল খনন, বিজিবির প্রতিবাদ
  • মনের ক্ষত সারাতে এসব কাজ করতে পারেন
  • সাম্য হত্যায় ডিএমপির ব্যাখ্যা বিভ্রান্তিকর: ছাত্রদল
  • ৯ মাসেই কেন এমন বিরোধ, অবিশ্বাস
  • শীর্ষ মার্কিন কূটনীতিককে তিরস্কার করল কিউবা