নতুন ফ্যাসিবাদের আগমন ধ্বনি শোনা যাচ্ছে
Published: 31st, May 2025 GMT
নতুন ফ্যাসিবাদের আগমনধ্বনি শোনা যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির সদস্য অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। তিনি বলেন, যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হচ্ছে, তার মধ্যে নতুন ফ্যাসিবাদের আগমনধ্বনি শোনা যাচ্ছে। পুরো সমাজের মধ্যে আবার একটা নতুন ফ্যাসিবাদী শক্তির নড়াচড়া দেখা যাচ্ছে। এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে হবে।
শনিবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে ‘নাগরিক সংহতি সমাবেশ’–এ বক্তব্য দেন অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। এই সমাবেশের আয়োজন করা হয় ‘যুদ্ধাপরাধী এ টি এম আজহারুল ইসলামকে দায়মুক্তি এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ও চট্টগ্রামে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের মিছিলে জামায়াত-শিবিরের হামলার প্রতিবাদে’। গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের উদ্যোগে এই সমাবেশ করা হয়।
সমাবেশে অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, গণ–অভ্যুত্থানের যে প্রত্যাশা তৈরি হয়েছিল, সেখানে জনগণ একটি নতুন রাজনৈতিক কাঠামোর স্বপ্ন দেখেছিল। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে সরকারের ভূমিকা নির্লিপ্ত, কোথাও তাদের অস্তিত্ব আছে বলে মনে হয় না। বরং হামলা-নির্যাতনে কোনো কোনো ক্ষেত্রে সরকারি বাহিনীর সম্পৃক্ততা পাওয়া যাচ্ছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, নারী, শিক্ষার্থী, শ্রমিক, শিক্ষকসহ যেকোনো স্তরের মানুষ যখন নিজেদের অধিকার আদায়ে কথা বলেন, তখনই তাঁদের ওপর হামলা হয়। আর যারা হামলা করে তারা রক্ষা পায়, কারণ সরকারের ভেতরেই তাদের মদদদাতা রয়েছে।
২৭ মে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের শান্তিপূর্ণ মিছিলে হামলা হয়। এর প্রতিবাদে এবং মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা এ টি এম আজহারকে নির্দোষ ঘোষণার প্রতিবাদে ২৮ মে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের প্রতিবাদ সমাবেশেও পুলিশের উপস্থিতিতে হামলা হয়। দুটি ঘটনাতেই ‘শাহবাগবিরোধী ঐক্যের ব্যানার’–এ শিবিরের বর্তমান ও সাবেক কিছু নেতা–কর্মী হামলা চালান বলে অভিযোগ উঠেছে।
একজন যুদ্ধাপরাধীকে দায়মুক্তি দেওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন তুলে আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘এ টি এম আজহারুল ইসলাম ১৯৭১ সালে একটি যুদ্ধাপরাধী সংগঠনের নেতা ছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে যে অভিযোগ, তা দলিল-প্রমাণসহ ছিল। আদালত যদি কোনো ত্রুটির কারণে আগের রায় বাতিলও করে, তাহলেও যুদ্ধাপরাধের সত্যতা তো মুছে ফেলা যায় না।’
আনু মুহাম্মদ বলেন, যে ব্যক্তি ইতিহাসের বিবেচনায় চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী, তাঁকে নির্দোষ ঘোষণার মাধ্যমে ইতিহাসকেই বিকৃত করা হয়েছে। এর মাধ্যমে ’৭১–এর শহীদ, নির্যাতিত নারী ও মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘জামায়াত ও ছাত্রশিবিরের বর্তমান তরুণ কর্মীদের অনেকেই ’৭১ সালে জন্মায়নি। তারা যুদ্ধাপরাধ করেনি ঠিকই, কিন্তু তারা যদি সেই রাজনীতি ধারণ করে, তবে সেই অপরাধের দায় থেকেও তারা মুক্ত থাকতে পারে না।’
যুদ্ধাপরাধের বিচারকে ইসলামবিরোধী বলে প্রচার করা হচ্ছে উল্লেখ করে অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘এটা ভয়ংকর মিথ্যাচার। ১৯৭১ সালে শহীদ হওয়া মানুষের অধিকাংশই ছিলেন ধার্মিক মুসলমান। সুতরাং, তাঁদের হত্যাকারীদের বিচারকে ইসলামবিরোধী বলা মানে ইসলামেরই অবমাননা করা।’
যারা ইতিহাস বিকৃত করছে, বৈষম্য–নিপীড়নের রাজনীতি করছে, তাদের বিরুদ্ধে সম্মিলিতভাবে প্রতিরোধ গড়ে তোলার কথা বলেন আনু মুহাম্মদ। তিনি বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের রাজনীতি যত দিন থাকবে, তত দিন গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের পক্ষে লড়াই চলবে। আর সেই লড়াই হবে বৈষম্যহীন, মানবিক বাংলাদেশের পথচলার ভিত্তি।
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন ভাসানী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক হারুন উর রশীদ ও গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির সদস্য মানজুর আল মতিন। প্রবল বৃষ্টির কারণে অনুষ্ঠান সংক্ষেপ করেন আয়োজকেরা। এই সংহতি সমাবেশের সঞ্চালক ছিলেন গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের সমন্বয়ক জাবির আহমেদ।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গণত ন ত র ক ছ ত র জ ট র নত ন ফ য স ব দ য দ ধ পর ধ র জন ত ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
বেলুচিস্তানে আইএসের আগমন, কোন দিকে যাচ্ছে পাকিস্তান
বেলুচিস্তানের নিরাপত্তা পরিস্থিতি দিন দিন জটিল হয়ে উঠছে। একদিকে বেলুচ বিদ্রোহীদের তৎপরতা বেড়েই চলেছে। অন্যদিকে পরিকল্পিতভাবে সেখানে প্রবেশ করেছে ইসলামিক স্টেট খোরাসান (আইএস-কে)।
সবচেয়ে চমকপ্রদ বিষয় হলো, আইএস-কে শুধু পাকিস্তান রাষ্ট্রের বিরুদ্ধেই যুদ্ধ ঘোষণা করেনি, তারা সরাসরি বেলুচ বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধেও লড়াইয়ের ঘোষণা দিয়েছে। জাতিগত-ভাষাগত জাতীয়তাবাদী আন্দোলনকে তারা ইসলামবিরোধী বলে ঘোষণা করেছে।
সম্প্রতি আইএস-কে একটি বই প্রকাশ করেছে। সেখানে পাকিস্তানের জাতিগত-ভাষাগত জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের সমালোচনা করা হয়েছে। বিশেষ করে বেলুচ ও পশতুন জাতীয়তাবাদীদের। এতে বেলুচ ইয়ুথ কাউন্সিল (বিওয়াইসি) ও এর নেত্রী মহরাং বেলুচ ও পশতুন তাহাফফুজ মুভমেন্ট (পিটিএম) এবং এর নেতা মানজুর পশতিনকে টার্গেট করা হয়েছে।
এই বইয়ের প্রকাশই যথেষ্ট উদ্বেগজনক ছিল। কিন্তু এর পরদিনই আইএস-কে একটি অডিও বার্তায় আনুষ্ঠানিকভাবে বেলুচ বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। তারা দাবি করেছে, বেলুচিস্তানের মাসতুং জেলায় বেলুচ লিবারেশন আর্মি (বিএলএ) তাদের যোদ্ধাদের হত্যা করেছে। এই হত্যা যুদ্ধ ঘোষণার পেছনে প্রধান কারণ।
আরও পড়ুনবেলুচিস্তান কেন স্বাধীন হতে চায়১৪ মার্চ ২০২৫আইএস-কে শুরু থেকেই বেলুচিস্তানে উপস্থিত ছিল তাদের মূল সংগঠন ইসলামিক স্টেট অব ইরাক অ্যান্ড সিরিয়ার প্রাথমিক পর্যায় থেকেই। তারাই প্রথম এই জঙ্গিগোষ্ঠীর নেতৃত্বে আনুগত্য ঘোষণা করেছিল। তবে তারা এত দিন সরাসরি জাতীয়তাবাদী বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়নি। তাহলে এখন এই নতুন তৎপরতা কী বার্তা দিচ্ছে? তাহলে বেলুচিস্তানের সংঘাত কী নতুন মোড় নিচ্ছে?
২০১৬ সাল থেকে এখন পর্যন্ত আইএস-কে বেলুচিস্তানে মোট ৩৩টি সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছে। হামলাগুলোতে ৪৩৬ জন নিহত ও ৬৯১ জন আহত হয়েছে। তাদের মূল লক্ষ্য ছিল দরগাহ ও চার্চ। এই পর্যন্ত তারা আটবার দরগাহ ও চার্চে হামলা চালিয়েছে। মানুষের মধ্যে যাদের তারা টার্গেট করেছে, তাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন রাজনৈতিক নেতারা। বিশেষ করে জামিয়াতে উলেমায়ে ইসলামের (জেইউআই) রাজনীতিকেরা। এরপরই টার্গেট তালিকায় রয়েছে নিরাপত্তা বাহিনী ও পোলিও স্বাস্থ্যকর্মীরা।
বেলুচিস্তানে আইএস-কে অনেক জেইউআই নেতার ওপর হামলা করেছে। এঁদের মধ্যে রয়েছেন মাওলানা আবদুল গফুর হায়দারি, হাফিজ হামদুল্লাহ ও মাওলানা আবদুল ওয়াসায়। তারা সিবি শহরে পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) এক প্রার্থীকে টার্গেট করেছিল।
সবচেয়ে ভয়াবহ হামলাগুলোর মধ্যে অন্যতম ছিল তৎকালীন প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভির ওপর হামলার চেষ্টা। হামলায় তিনি কোনোমতে বেঁচে যান। এমনকি তারা রাষ্ট্রপন্থী ও জাতীয়তাবাদী রাজনীতিকদেরও ছাড় দেয়নি। ২০১৮ সালের নির্বাচনী প্রচারণার সময় বেলুচিস্তান আওয়ামী পার্টির সিরাজ রইসানিকে হত্যা করা হয়। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ছিল, চীনা নাগরিকদের অপহরণ করে মাসতুংয়ে আটকে রাখা।
বেলুচিস্তান ও খাইবার পাখতুনখোয়া—দুই প্রদেশে আইএস-কের তৎপরতা নির্দিষ্ট এলাকায় সীমাবদ্ধ। খাইবার পাখতুনখোয়ায় তাদের হামলা বেশি হয়েছে বাজউর উপজাতি এলাকায় ৩৬টি ও পেশোয়ারে ১৯টি। আইএস-কে সালাফি মতাদর্শ অনুসরণ করে। এই মত বাজউর ও পার্শ্ববর্তী আফগান অঞ্চলে যেমন কুনার ও নুরিস্তানেও প্রচলিত। এই আফগান এলাকাগুলোর সঙ্গে পাকিস্তানের সীমান্ত রয়েছে এবং সেখানে আইএস-কে শক্তিশালী অবস্থানে আছে।
কিন্তু বেলুচিস্তানে পরিস্থিতি আলাদা। এখানে তাদের কার্যক্রম মূলত কেন্দ্র—পশ্চিম অঞ্চলজুড়ে সীমিত—কোয়েটা শহরের উপকণ্ঠ থেকে শুরু করে মাসতুং, কালাত, খুজদার পর্যন্ত। মাসতুং থেকে তাদের উপস্থিতি ছড়িয়ে পড়েছে বোলান হয়ে সিন্ধুর সীমানার কাছাকাছি সিবি জেলায়।
মাসতুং ও কোয়েটার উপকণ্ঠে আইএস-কের প্রধান ঘাঁটি রয়েছে। সেখানে তারা যথাক্রমে ১২ ও ১০টি হামলা চালিয়েছে। তারা কালাত, বোলান ও খুজদারেও সক্রিয়। এই অঞ্চলগুলোর বেশির ভাগ জনগণ বেলুচ সম্প্রদায়ের, যাদের মধ্যে অনেকেই ধর্মীয় সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত। এখানে জামিয়াতে উলেমায়ে ইসলাম (জেইউআই) শক্তিশালী রাজনৈতিক ভিত্তি গড়ে তুলেছে।একসময় সিন্ধুর কাউন্টার টেররিজম ডিপার্টমেন্ট (সিটিডি) জানিয়েছিল, বেলুচিস্তানের এই সীমান্ত এলাকায় আইএস-কে প্রশিক্ষণ শিবির গড়ে তুলেছে। সেখানে সিন্ধি তরুণদের, বিশেষ করে ব্রাহুই জনগোষ্ঠীর যুবকদের উগ্রপন্থায় দীক্ষিত করে সন্ত্রাসবাদে ঠেলে দিচ্ছে তারা। ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে সেহওয়ান শরিফের বিখ্যাত দরগাহতে আইএস-কের হামলার তদন্তের পর এই তথ্য সামনে আসে।
মাসতুং ও কোয়েটার উপকণ্ঠে আইএস-কের প্রধান ঘাঁটি রয়েছে। সেখানে তারা যথাক্রমে ১২ ও ১০টি হামলা চালিয়েছে। তারা কালাত, বোলান ও খুজদারেও সক্রিয়। এই অঞ্চলগুলোর বেশির ভাগ জনগণ বেলুচ সম্প্রদায়ের, যাদের মধ্যে অনেকেই ধর্মীয় সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত। এখানে জামিয়াতে উলেমায়ে ইসলাম (জেইউআই) শক্তিশালী রাজনৈতিক ভিত্তি গড়ে তুলেছে।
কেউ কেউ মনে করেন, কালাত রাজ্যে দেওবন্দি মাদ্রাসাগুলোকে পৃষ্ঠপোষকতা দেওয়ার কারণেই এই ধর্মীয় প্রভাব বিস্তার করেছে। কারণ যা–ই হোক, বেলুচিস্তানে বিভিন্ন ইসলামি সংগঠনের মধ্যে প্রতিযোগিতা বাড়ছে। এর মধ্যে রয়েছে তেহরিক-ই-লাব্বাইক পাকিস্তান (টিএলপি) এবং শিয়া সংগঠনগুলোও।
গত ১৫ বছরে শিয়া মাদ্রাসাগুলোর উপস্থিতিও এই অঞ্চলে বেড়েছে। বিশেষ করে মাসতুং ও নুশকির মধ্য দিয়ে শিয়া যাত্রীদের কাফেলার ওপর হামলা হয়ে আসছে। এসব হামলার জন্য দায়ী ছিল লস্কর-ই-ঝাংভি, যেটি পরবর্তী সময়ে আইএস-কেতে একীভূত হয়ে যায়।
টিএলপিও এই অঞ্চলে প্রভাব বিস্তার করেছে। তাদের প্রভাব এখন কোয়েটা-করাচি মহাসড়ক ধরে বিস্তৃত। এই এলাকায় বসবাসকারী করাচিভিত্তিক কিছু বেলুচ মানুষ এই প্রভাব বিস্তারে ভূমিকা রেখেছে। তবে এখনো জেইউআই এখানকার সবচেয়ে প্রভাবশালী রাজনৈতিক শক্তি। নির্বাচনী রাজনীতিতে তাদের দখল অনেক বেশি।
এখন বোঝা যায়, কেন আইএস-কে বেলুচিস্তান ও খাইবার পাখতুনখোয়ায় জেইউআইকে টার্গেট করছে। তারা মনে করে, জেইউআই তালেবানদের ঘনিষ্ঠ মিত্র। আফগানিস্তানেও তালেবান ও আইএস-কের সংঘাত অনেক আগে থেকেই চলছে।
এই দুই গোষ্ঠীর মধ্যে মূল পার্থক্য হলো রাষ্ট্রকাঠামো ও খেলাফতের ধারণা নিয়ে। আইএস-কে বিশ্বাস করে, তালেবান একটি জাতীয়তাবাদী আন্দোলন এবং পশ্চিমা শক্তির সহযোগী। তাদের দৃষ্টিতে পাকিস্তান, অন্যান্য মুসলিম রাষ্ট্র এবং তালেবান-সবই একই রকম ক্ষমতাকেন্দ্রিক গোষ্ঠী। আইএস-কে মনে করে, জাতীয়তাবাদ ইসলামবিরোধী। তাই তারা এখন শান্তিপূর্ণ ও সহিংস—উভয় ধরনের জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে।
আরও পড়ুনবেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মি কারা, তাদের জন্ম কীভাবে?১৬ মার্চ ২০২৫এই পরিস্থিতির ফলে বেলুচিস্তান ও খাইবার পাখতুনখোয়ায় জাতীয়তাবাদী ও মানবাধিকার আন্দোলনের জন্য হুমকি বেড়ে যাবে। একই সঙ্গে ইসলামপন্থী সশস্ত্র গোষ্ঠী ও জাতীয়তাবাদী বিদ্রোহীদের মধ্যে সংঘর্ষের সম্ভাবনাও তৈরি হয়েছে।
এখন পর্যন্ত উভয় পক্ষ একই এলাকায় সক্রিয় হলেও একে অপরকে এড়িয়ে চলছিল। কিন্তু এই কৌশল আর টিকবে বলে মনে হচ্ছে না। বিএলএ এখন পুরো প্রদেশজুড়ে কার্যক্রম চালাচ্ছে। আর আইএস-কে মূলত মাসতুং ও পার্শ্ববর্তী এলাকাতেই সীমাবদ্ধ। তবু তাদের উপস্থিতি বিএলএের জন্য একটি বড় ঝামেলা তৈরি করতে পারে।
এই সংঘর্ষ রাষ্ট্রের নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর জন্য কতটা ইতিবাচক হবে, তা নিশ্চিত নয়। কেউ কেউ ভাবতে পারেন, এই দ্বন্দ্ব পাকিস্তান রাষ্ট্রের দুই শত্রুকেই দুর্বল করবে। কিন্তু বাস্তবতা আরও জটিল। আইএস-কে হয়তো তাদের কৌশল পরিবর্তন করবে। কিন্তু অভিযান চালানো বন্ধ করবে না; বরং তারা নিজেদের কার্যক্রম সেখানকার বাস্তবতার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে পারে। এতে বেলুচিস্তানের নিরাপত্তা পরিস্থিতি আরও অস্থির হয়ে উঠবে।
মুহাম্মদ আমির রানা নিরাপত্তা–বিশ্লেষক
ডন থেকে নেওয়া, ইংরেজি থেকে অনুবাদ