এবি ব্যাংকের ১,৯০৬ কোটি টাকা লোকসান
Published: 1st, June 2025 GMT
শেয়াবাজারে তালিকাভুক্ত এবি ব্যাংক লোকসানে আছে। গত বছর ব্যাংকটির ১ হাজার ৯০৬ কোটি টাকা লোকসান হয়েছে। এ কারণে গত হিসাববছরের জন্য লভ্যাংশ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ব্যাংকটি। ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এবি ব্যাংকের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২৪ সালে সমন্বিতভাবে ব্যাংকটির শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ২১ টাকা ২৮ পয়সা। ফলে গত বছর ব্যাংকটির লোকসান হয়েছে ১ হাজার ৯০৬ কোটি টাকা। আগের বছর তাদের শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছিল এক টাকা। ২০২৩ সালে ব্যাংকটির মুনাফা হয়েছিল ৯০ কোটি টাকা।
সর্বশেষ বছরে সমন্বিতভাবে ব্যাংকটির শেয়ারপ্রতি নগদ অর্থপ্রবাহ ছিল মাইনাস ৪২ টাকা ২৩ পয়সা, যেখানে আগের বছর তা ছিল ১০ টাকা ৯৮ পয়সা। গত ৩১ ডিসেম্বর সমন্বিতভাবে ব্যাংকটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) ছিল ৭ টাকা ১৯ পয়সা।
আগামী ৫ আগস্ট সকাল ১০টায় হাইব্রিড পদ্ধতিতে ব্যাংকটির বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) অনুষ্ঠিত হবে। সে জন্য রেকর্ড তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ২৬ জুন।
সেবায় উৎকর্ষ ঘটিয়ে একসময় গ্রাহক আকর্ষণে অন্যতম সেরা হয়ে উঠেছিল প্রথম প্রজন্মের এবি ব্যাংক। এর নেপথ্যে ছিলেন কর্মকর্তারা। ফলে ব্যাংকটি বিভিন্ন সূচকে বেশ এগিয়ে যায়। কিন্তু পরে শীর্ষ কর্মকর্তাদের অনিয়ম-দুর্নীতি এবং উদ্যোক্তাদের অনৈতিক সুবিধা নেওয়ার কারণে ব্যাংকটির আর্থিক সূচক ভঙ্গুর হয়ে পড়ে। বিশেষ করে খেলাপি ঋণ বেড়ে এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে চাহিদামতো নিরাপত্তা সঞ্চিতি রাখলে ব্যাংকটিকে আরও কয়েক গুণ লোকসান গুনতে হতো। দীর্ঘদিন ধরে ব্যাংকটিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের পর্যবেক্ষক থাকলেও উন্নতি হয়নি।
এবি ব্যাংকের অন্যতম উদ্যোক্তা সাবেক বিএনপি সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এম মোরশেদ খান। প্রতিষ্ঠার পর থেকে ব্যাংকটি তাঁর পরিবারের নিয়ন্ত্রণে। দীর্ঘ সময় তাঁর পক্ষে ব্যাংকের চেয়ারম্যান ছিলেন ওয়াহিদুল হক, যিনি মোরশেদ খানের চা-বাগানের পরিচালক ছিলেন। এরপর সাবেক ডেপুটি গভর্নর মোহাম্মদ এ (রুমী) আলীও তাঁদের প্রতিনিধি হিসেবে ব্যাংকের চেয়ারম্যান হন। তাতেও উন্নতি হয়নি। জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খায়রুল আলম চৌধুরীও চেয়ারম্যান ছিলেন; তিনিও ব্যাংকের উন্নতি করতে পারেননি। তাঁরা সবাই মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই পদত্যাগ করেন। এখন এই ব্যাংকের চেয়ারম্যান এবি ব্যাংকের সাবেক এমডি কাইজার এ চৌধুরী।
জানা গেছে, এবি ব্যাংকের শীর্ষ গ্রাহকদের বেশির ভাগই নিয়মিত ঋণ পরিশোধ করছে না। এর মধ্যে অন্যতম হলো সিকদার গ্রুপ, আশিয়ান সিটি, বিল্ডট্রেড, মাহিন গ্রুপ, আমান গ্রুপ, এরশাদ ব্রাদার্স ও স্বাস্থ্য খাতের আলোচিত ঠিকাদার মোতাজ্জেরুল ইসলাম ওরফে মিঠুর কয়েকটি প্রতিষ্ঠান। পাশাপাশি বেক্সিমকো গ্রুপের ঋণও আদায় করতে পারছে না ব্যাংকটি। এ ছাড়া মোরশেদ খানের মালিকানাধীন বন্ধ হয়ে যাওয়া মোবাইল অপারেটর সিটিসেলের ঋণও খেলাপি হয়ে রয়েছে। ফলে ব্যাংকটির ঋণ থেকে যে সুদ আয় হচ্ছে, তা দিয়ে আমানতকারীদের সুদ পরিশোধ করতে পারছে না।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
চট্টগ্রাম–কক্সবাজার রুটে দুই ট্রেনের সময় বদলে যাচ্ছে
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে চলা সৈকত এক্সপ্রেস ও প্রবাল এক্সপ্রেস ট্রেনের সময়সূচি পরীক্ষামূলকভাবে নতুন করে নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। নতুন সময়সূচি আগামী ১০ আগস্ট থেকে কার্যকর হবে।
রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজারগামী সৈকত এক্সপ্রেস (৮২১ নম্বর ট্রেন) ট্রেনটি এখন সকাল সোয়া ৬টায় চট্টগ্রাম স্টেশন ছেড়ে যায়। নতুন সূচি অনুযায়ী, পরীক্ষামূলকভাবে এ ট্রেন চলাচল করবে ভোর ৫টা ৫০ মিনিটে।
আর কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রামগামী প্রবাল এক্সপ্রেস (৮২২ নম্বর ট্রেন) ট্রেনটি কক্সবাজার স্টেশন ছাড়বে সকাল ১০টায়। এখন এ ট্রেন ছাড়ে ১০টা ২০ মিনিটে। গত মঙ্গলবার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেলওয়ে।
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে চলাচলরত সৈকত এক্সপ্রেস ও প্রবাল এক্সপ্রেসের সময়সূচি পরীক্ষামূলকভাবে পরিবর্তনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের উপপ্রধান পরিচালন কর্মকর্তা তারেক মুহাম্মদ ইমরান।
রেলওয়ের সহকারী প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবু বক্কর সিদ্দিকীকের সই করা এক চিঠিতে বলা হয়েছে, যাত্রীদের চাহিদা ও সময়ানুবর্তিতা রক্ষায় সুষ্ঠুভাবে ট্রেন পরিচালনার জন্য কক্সবাজারগামী সৈকত এক্সপ্রেস এবং চট্টগ্রামমুখী প্রবাল এক্সপ্রেস ট্রেনের সময়সূচি পরিবর্তন করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার রুটে এখন দুই জোড়া আন্তনগর ট্রেন চলাচল করে। ঢাকা থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত চলাচল করে আরও দুই জোড়া আন্তনগর ট্রেন।
কক্সবাজার রেললাইনে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছিল ২০২৩ সালের ১ ডিসেম্বর। প্রথমে ঢাকা থেকে কক্সবাজার এক্সপ্রেস নামে আন্তনগর বিরতিহীন ট্রেন দেওয়া হয়। এরপর গত বছরের জানুয়ারিতে চলাচল শুরু করে পর্যটক এক্সপ্রেস। এটাও দেওয়া হয় ঢাকা থেকে। চট্টগ্রাম থেকে ট্রেন না দেওয়ায় স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দেয়।
গত বছরের ৮ এপ্রিল চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত এক জোড়া বিশেষ ট্রেন চালু করা হয়। দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এই ট্রেন। এরপর ইঞ্জিন ও কোচের সংকটের কথা বলে গত বছরের ৩০ মে তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের চাপে সেই অবস্থান থেকে সরে আসে রেলওয়ে। গত বছরের ১২ জুন থেকে আবার চালু হয় ট্রেন। আর নিয়মিত ট্রেন চলাচল শুরু হয় চলতি বছরের ১ ফেব্রুয়ারি থেকে।
সৈকত এক্সপ্রেস ট্রেনটি যাত্রী ওঠানামার জন্য ষোলশহর, জানালী হাট, পটিয়া, দোহাজারী, সাতকানিয়া, চকরিয়া, ডুলাহাজরা ও রামু স্টেশনে থামবে।
আর প্রবাল এক্সপ্রেস যাত্রাপথে থামবে ষোলশহর, গোমদণ্ডী, পটিয়া, দোহাজারী, সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, চকরিয়া, ডুলহাজারা, ইসলামাবাদ ও রামু স্টেশনে।