জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলার তারতাপাড়া গ্রামে ‘জামালপুর-১ অনুসন্ধান’ নামের গ্যাসকূপে গ্যাসের সন্ধান পাওয়া গেছে। আজ রোববার দুপুর ১টা পর্যন্ত কূপ থেকে ৭ দশমিক ৩ মিলিয়ন ঘনফুট চাপে গ্যাস বের হচ্ছে।

এর আগে শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে প্রাথমিক পরীক্ষায় গ্যাসের সন্ধান মেলে। আগামী ৭২ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণ ও পরীক্ষা শেষে কি পরিমাণ গ্যাস রয়েছে তা জানা যাবে।

জামালপুর-১ অনুসন্ধান কূপ খনন প্রকল্পের কর্মকর্তারা জানান, ২ হাজার ৬০০ মিটার খনন করা হয়েছে। ১ হাজার ৪৪১ থেকে ১ হাজার ৪৪৫ মিটার মাটির নিচের স্তর থেকে ৭ দশমিক ২ মিলিয়ন চাপে গ্যাস বের হচ্ছে। তার উপরে আরও একটি স্তর রয়েছে, ওইখানেও গ্যাস রয়েছে। আগামী ৭২ ঘণ্টা প্রাথমিক পরীক্ষা শেষে কি পরিমাণ গ্যাস রয়েছে তা জানা যাবে। এছাড়াও তেল বা পদার্থ রয়েছে কি না তা পরীক্ষা শেষে জানা যাবে।

খবরের সত্যতা নিশ্চিত করে জামালপুর-১ অনুসন্ধান কূপ খনন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মো.

মোজাম্মেল হক বলেন, গ্যাস বের হচ্ছে, তবে এই মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না কি পরিমাণ গ্যাস রয়েছে। পরীক্ষা শেষে কি পরিমাণ গ্যাস রয়েছে তা জানা যাবে। এছাড়া অন্য কোনো খনিজ পদার্থ থাকলে সেটিও পরীক্ষা শেষে জানা যাবে।

এর আগে এ বছরের ২৪ জানুয়ারি উপজেলার তারতাপাড়া গ্রামে গ্যাস খনন কূপটির খনন‌ কাজ উদ্বোধন করেন জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সচিব মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম। প্রায় ১৬৮ কোটি টাকা ব্যয়ে কূপ খননের কাজ শুরু হয়।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: পর ক ষ

এছাড়াও পড়ুন:

বৈষম্যহীন ও টেকসই উন্নয়নের উদ্যোগ চোখে পড়ল না

এই বাজেটের উদ্দেশ্য সম্পর্কে বলা হয়েছে, বৈষম্যহীন ও টেকসই অর্থনৈতিক কাঠামো বিনির্মাণ। অর্থাৎ অন্তর্বর্তী সরকার এমন পরিবর্তন বা সংস্কার করতে চায়, যার মধ্য দিয়ে এই লক্ষ্য-উদ্দেশ্য অর্জন করা যায়। কিন্তু বাজেটের ঘোষণায় দৃশ্যত সে রকম উদ্যোগ চোখে পড়ল না।

বিষয়টি হলো, রাজনৈতিক সরকারের আমলে অনেক কিছু করা সম্ভব হয় না। তাদের নানা ধরনের অঙ্গীকার থাকে। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকারের সে রকম বাধ্যবাধকতা নেই। ফলে সার্বিকভাবে কাঠামোগত পরিবর্তনের সূচনা হবে, তেমনটা আশা করেছিলাম। কাঠামোগত পরিবর্তন করতে চাইলে বেশ কিছু কৌশলগত সংস্কার প্রয়োজন। এসব পরিবর্তন দীর্ঘমেয়াদি। রাতারাতি তা করা সম্ভব নয়। আশা ছিল, সব ক্ষেত্রে না হলেও অন্তত কিছু ক্ষেত্রে এই সরকার এসব পরিবর্তনের সূচনা করবে; সেটা হলে আমরা কিছু দূর এগোতে পারতাম। কিন্তু শেষমেশ সে রকম কিছু দেখা গেল না।

আমরা জানি, আমাদের সমাজে দিনে দিনে বৈষম্য বাড়ছে। বিশেষ করে আমি বলব সুযোগ বৈষম্যের কথা। শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও নারী অধিকারের ক্ষেত্রে যে বৈষম্য আছে, সেই বৈষম্য আমলে নেওয়া দরকার ছিল। এ ক্ষেত্রে কিছু পরিবর্তনের সূচনা হলে সমাজে বড় পরিবর্তনের ভিত্তি রচিত হতো।

আরও পড়ুনবাজেট ‘স্মল’, কিন্তু ‘বিউটিফুল’ নয় ১ ঘণ্টা আগে

দ্বিতীয়ত, যে ক্ষেত্রে আমি পরিবর্তন দেখতে চেয়েছিলাম সেটা হলো, অর্থনীতির কাঠামোগত পুনর্বিন্যাস। বিশেষ করে কর্মসংস্থান নিয়ে বলব। কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি করা গেলে সামাজিক বৈষম্য কমত বা সামগ্রিকভাবে মানুষের জীবনমানের উন্নতি হতো। সেটা হলে জীবনমান উন্নয়নের কাঠামোগত সম্ভাবনা তৈরি হতো।

এ ক্ষেত্রে বিনিয়োগের কথা বলা দরকার। বিনিয়োগ না বাড়লে দেশে কর্মসংস্থান বাড়বে না। আর কর্মসংস্থান না বাড়লে মানুষের জীবনে নিরাপত্তা আসবে না। কিন্তু বিনিয়োগ পরিস্থিতি ভালো নয়। দেশের বিনিয়োগের অনুকূল পরিস্থিতি নেই। ফলে কেবল বিনিয়োগ সম্মেলন করে বিনিয়োগ বাড়ানো সম্ভব নয়। অভ্যন্তরীণ বিনিয়োগের ক্ষেত্রে যেসব অন্তর্নিহিত সমস্যা বা দুর্বলতা আছে, সেগুলো দূর করতে হবে।

এরপর বলতে হয় মূল্যস্ফীতির কথা। কেন্দ্রীয় ব্যাংক মুদ্রানীতির মাধ্যমে বা নীতি সুদহার বাড়িয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছে; কিন্তু তাতে ফল হয়নি। মুদ্রানীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে রাজস্ব নীতি ও বাজার ব্যবস্থাপনা করতে হবে। তা না হলে মূল্যস্ফীতির লাগাম টেনে ধরা সম্ভব নয়। রাজস্ব নীতির বিষয়টি আমলে নেওয়ার ক্ষেত্রে বাজেট গুরুত্বপূর্ণ। সরকার এই সময় বিভিন্ন পণ্যের শুল্ক হ্রাস-বৃদ্ধি করে। কিন্তু এ ক্ষেত্রেও বিশেষ কিছু দেখা গেল না।

দেশে প্রায় তিন বছর ধরে উচ্চ মূল্যস্ফীতি বিরাজ করছে। এই উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা হ্রাস পাচ্ছে। অনেক মানুষ আবারও দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে যাচ্ছে। এতে যেমন মানুষের জীবনমানের অবনতি হচ্ছে, তেমনি বিনিয়োগের পরিবেশও ব্যাহত হচ্ছে।

মোদ্দা কথা হলো, দেশের অর্থনীতিতে মূল যেসব সমস্যা আছে, তার কোনোটি যথাযথভাবে আমলে নেওয়া হলো না এই বাজেটে।

মুস্তফা কে মুজেরী: সাবেক মহাপরিচালক, বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস)

সম্পর্কিত নিবন্ধ