চোখ কপালে তুলে দেওয়া রেকর্ড ট্রান্সফার ফিতে নিয়ে আসা নেইমারকে দিয়ে হয়নি, এমবাপ্পেকে দিয়ে না। এই দুজনের সঙ্গে লিওনেল মেসিকে যোগ করেও না। প্রতিপক্ষের রক্ষণভাগে ভয়ের কাঁপনজাগানো এই ত্রিফলার জন্যও যা অসাধ্য হয়ে থেকেছে, সেটিই কিনা সাধন করে ফেলল তরুণ এক দল! যে দলে সেই অর্থে তারকা বলতে কেউ নেই। অথবা এমনও বলতে পারেন, যে দলে কেউই তারকা নন, আবার সবাই তারকা।

প্রথম একাদশের গড় বয়স ২৫-এর নিচে। চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনাল এর চেয়ে তরুণতর দলকে মাঠে নামতে দেখেছে মাত্র একবারই। ২ গোল করে ফাইনালের নায়কের বয়স মাত্র ১৯। ম্যাচ যখন শেষ বাঁশির অপেক্ষায়, তখন শেষ গোল করা বদলি হিসেবে নামা তরুণেরও তা-ই। ইউরোপের সেরা ক্লাব দল—এটা তো চ্যাম্পিয়নস ট্রফির গায়েই খোদাই হয়ে গেছে। গতকাল রাতে মিউনিখের আলিয়াঞ্জ অ্যারেনায় উৎসবে মেতে ওঠা বর্তমানের সেরা এই দল কি সুবর্ণ ভবিষ্যতের একটা ঘোষণাও দিয়ে রাখেনি!

দলটির নাম যে প্যারিস সেন্ট জার্মেই, এটা আপনি জানেন বলেই অনুমান করি। হয়তো এটাও জানেন, মিউনিখের এই রাতের জন্য, মার্কিনিওসের হাতে ট্রফি ওঠার ওই মুহূর্তটির জন্য কত বছরের সাধনা, কত হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ। শেষটা একেবারে নির্দিষ্টভাবে না-ও জানতে পারেন। তাহলে জানিয়ে দিই, ২০১১ সালে কাতারি স্পোর্টস ইনভেস্টমেন্ট গ্রুপ প্যারিসের ক্লাবটিকে বিশ্বসেরা বানানোর মিশন নেওয়ার পর ১৪ বছরে খরচ করেছে প্রায় ২৮ হাজার কোটি টাকা!

পিএসজির প্রথম গোলটি আশরাফ হাকিমির.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

সুদানের এল-ফাশের শহরে ‘চরম বিপদে’ বাসিন্দারা: ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস

সুদানের আধা সামরিক বাহিনী র‌্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) কাছে দেশটির এল–ফাশের শহরের পতনের পর সেখানকার বাসিন্দারা ‘চরম বিপদের’ মধ্যে রয়েছেন। তাঁরা শহরটিতে আটকা পড়েছেন। গতকাল শনিবার ফ্রান্সভিত্তিক আন্তর্জাতিক দাতব্য চিকিৎসা সংস্থা ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস (এমএসএফ) এমন শঙ্কার কথা জানিয়েছে।

২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে সুদানের সেনাবাহিনীর সঙ্গে আরএসএফের লড়াই চলছে। গত ২৬ অক্টোবর এল-ফাশের দখল করে নেয় আধা সামরিক বাহিনীটি। শহরটির পতনের পর থেকে সেখানে বিচারবহির্ভূত হত্যা, যৌন সহিংসতা, ত্রাণকর্মীদের ওপর হামলা, লুটপাট এবং অপহরণের খবর পাওয়া যাচ্ছে। সেখানকার যোগাযোগব্যবস্থা প্রায় পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

আরও পড়ুনসুদানে ‘গণহত্যা’ হয়েছে২২ ঘণ্টা আগে

এল–ফাশের শহর থেকে যাঁরা পালিয়ে কাছের তাউইলা শহরে আশ্রয় নিয়েছেন, তাঁরা বেসামরিক লোকজনের ওপর গণহত্যা চালানোর কথা বলেছেন। তাঁদের ভাষ্য, এল–ফাশেরে মা–বাবার সামনে সন্তানদের হত্যা করা হচ্ছে। মানুষজন শহরটি থেকে পালানোর সময় তাঁদের মারধর করা হচ্ছে। জাতিসংঘের হিসাবে, ২৬ অক্টোবর থেকে ‍৬৫ হাজারের বেশি মানুষ শহরটি থেকে পালিয়েছেন।

শনিবার ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস জানিয়েছে, এল–ফাশেরের বিপুল মানুষ ‘চরম বিপদের’ মধ্যে রয়েছে। তাদের শহরটি ত্যাগ করতে দিচ্ছে না আরএসএফ ও তাদের সহযোগীরা। সংস্থাটির জরুরি বিভাগের প্রধান মাইকেল ওলিভিয়ার লাচেরিটে বলেন, এল–ফাশের থেকে যাঁরা নিখোঁজ হয়েছেন, তাঁরা কোথায়? সম্ভাব্য উত্তরটা হলো—তাঁদের হত্যা করা হয়েছে।

গত শুক্রবার জাতিসংঘের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, আরএসএফের হামলায় এল–ফাশেরে কয়েক শ মানুষ নিহত হয়েছেন। তবে সুদানের সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে দুই হাজার বেসামরিক মানুষকে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের হিউম্যানিটারিয়ান রিসার্চ ল্যাব বলেছে, এল–ফাশেরে গণহত্যা অব্যাহত থাকার বিভিন্ন ইঙ্গিত স্পষ্টভাবে দেখা গেছে।

সুদান ‘মহাবিপর্যয়কর পরিস্থিতির’ মধ্যে রয়েছে বলে শনিবার উল্লেখ করেছেন জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোহান ওয়েডফুল। বাহরাইনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, বেসামরিক লোকজনকে সুরক্ষা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল আরএসএফ। এরপরও এমন নৃশংসতার জন্য তাদের জবাবদিহির আওতায় আনা হবে। একই সংবাদ সম্মেলনে সুদানের পরিস্থিতি ‘ভয়ংকর’ বলে উল্লেখ করেছেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইভেট কুপার।

আরও পড়ুনসুদানে আরএসএফের গণহত্যায় আরব আমিরাত ইন্ধন দিচ্ছে কেন৭ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ