সেবা বন্ধ ৫ দিন, রোগীরা এসে ফিরে যাচ্ছেন
Published: 2nd, June 2025 GMT
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অবস্থিত জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের অচলাবস্থা কাটেনি। পাঁচ দিন ধরে এই হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা বন্ধ। চিকিৎসক, নার্স ও কর্মচারীরা গতকাল রোববারও হাসপাতালে যাননি।
চিকিৎসক-কর্মচারীদের সঙ্গে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহত ব্যক্তিদের মারামারি-সংঘর্ষের জেরে গত বুধবার থেকে এমন অচলাবস্থা চলছে। চিকিৎসাধীন জুলাই আহতরা গত মঙ্গলবার উন্নত চিকিৎসাসহ বিভিন্ন দাবিতে হাসপাতালের পরিচালককে অবরুদ্ধ করেন। এ সময় বাগ্বিতণ্ডার এক পর্যায়ে পরিচালক খায়ের আহমেদ চৌধুরী হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে যান। এর পর থেকে তিনি ছুটিতে আছেন।
সংকট নিরসনে চেষ্টা চলছে। যাঁরা চিকিৎসার মাঝপথে আছেন, তাঁদের অন্য কোনো হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে অনুরোধ করা হয়েছে। জানে আলম, ভারপ্রাপ্ত পরিচালক, জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালহাসপাতালটির ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জানে আলম গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, সংকট নিরসনে চেষ্টা চলছে। যাঁরা চিকিৎসার মাঝপথে আছেন, তাঁদের অন্য কোনো হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে অনুরোধ করা হয়েছে।
গতকাল সকাল ১০টার দিকে হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসক, নার্স ও কর্মকর্তাদের পাওয়া যায়নি। তবে রোগীরা ঠিকই এসেছেন। চিকিৎসাসেবা বন্ধ থাকায় ফেরত যান তাঁরা। অনেকে কী করবেন বুঝতে না পেরে অপেক্ষা করছিলেন। প্রধান ফটকে দায়িত্ব পালন করা আনসার সদস্যরা জানান, সকাল সাতটার পর থেকে অনেক রোগী এসে ফিরে গেছেন। তাঁদের কেউ নতুন রোগী। কেউ কেউ আগে অস্ত্রোপচার করিয়েছেন, এখন আবার চিকিৎসক দেখাতে এসেছেন। অনেকের অস্ত্রোপচারের তারিখ ছিল গতকাল।
হাসপাতালে ভেতরে কথা হয় মিজানুর রহমানের সঙ্গে। তিনি এসেছেন সিরাজগঞ্জ থেকে। তাঁর ভাই এখনো ভর্তি আছেন। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ‘চিকিৎসা না করিয়ে ফিরে গেলে আবার আসতে হবে। তবে এখন মনে হচ্ছে, আর কোনো উপায় নেই। সামনে ঈদ, আর অপেক্ষা করতে পারছি না। বাড়ি চলে যেতে হবে।’
২৫০ শয্যার বিশেষায়িত এই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, সেবা চালু অবস্থায় জরুরি ও সাধারণ বিভাগ মিলিয়ে প্রতিদিন ১৫০ থেকে ২০০টি অস্ত্রোপচার করা হয় এখানে। আর বহির্বিভাগসহ প্রতিদিন এ হাসপাতাল থেকে তিন হাজারের বেশি রোগী চিকিৎসা নেন। পাঁচ দিন ধরে সব সেবা বন্ধ আছে।
চাঁদপুরের মতলব থেকে ৭০ বছর বয়সী মায়ের চোখের চিকিৎসা করাতে এসেছেন অমল বিশ্বাস। আসার পর দেখতে পান, হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা বন্ধ। তিনি বলেন, গত রোববার মায়ের চোখে অস্ত্রোপচার হয়েছে। গতকাল আবার চিকিৎসক দেখানোর কথা ছিল। তাঁর মায়ের শরীর অত ভালো নয়। অনেক দূর থেকে এসেছেন।
হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগীরা জানান, বর্তমানে এখানে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহত হয়ে চিকিৎসা নেওয়া রোগী আছেন ৬০ থেকে ৭০ জন। আর কিছু সাধারণ রোগী এখনো হাসপাতালে আছেন। চিকিৎসার মাঝপথে থাকায় তাঁরা কোথাও যেতে পারছেন না। তাঁদের সংখ্যা ২৫ থেকে ৩০।
মারামারি-সংঘর্ষের পর থেকে হাসপাতালটিতে নিরাপত্তার জন্য সার্বক্ষণিকভাবে আনসার ও পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। দায়িত্বরত আনসার ও পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বুধবারের পর থেকে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। তবে চিকিৎসক, নার্স ও কর্মকর্তা কেউ আসছেন না।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র পর থ ক চ ক ৎসক এস ছ ন গতক ল
এছাড়াও পড়ুন:
বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলন শুরু
২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে সংবাদ সম্মেলন শুরু হয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে মঙ্গলবার বেলা ৩টায় রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বাজেটোত্তর এ সংবাদ সম্মেলন শুরু হয়।
অর্থ সচিব ড. মো. খায়রুজ্জামান মজুমদারের সঞ্চালনায় এই সংবাদ সম্মেলনে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিনসহ আরও উপস্থিত রয়েছেন পরিকল্পনা উপদেষ্টা অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মানসুর প্রমুখ।
এর আগে গতকাল আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেটের আকার ধরা হয়েছে ৭ লাখ ৮৯ হাজার ৯৯৯ কোটি টাকা—যা চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মূল বাজেটের তুলনায় ৭ হাজার কোটি টাকা কম। প্রস্তাবিত বাজেটে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ। বাজেট ঘাটতি ২ লাখ ৬৬ হাজার কোটি টাকা, যা মোট বাজেটের ৩ দশমিক ৬ শতাংশ। মূল্যস্ফীতি ৬ দশমিক ৫ শতাংশ এবং এডিপি ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকার প্রস্তাব করা হয়েছে। এটি বর্তমান সরকারের দৃষ্টিতে সংকোচনমূলক বাজেট।