ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসিতে নতুন যোগদানকৃত আইটি অফিসারদের ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রাম রবিবার (১ জুন) রাজধানীর ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

ইসলামী ব্যাংক ট্রেনিং অ্যান্ড রিসার্চ একাডেমি (আইবিটিআরএ) আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন ব্যাংকের ম্যানেজিং ডিরেক্টর (চলতি দায়িত্ব) মো.

 ওমর ফারুক খান। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডিরেক্টর মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন মজুমদার।

ব্যাংকের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর মো. মাহবুব আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও আইবিটিআরএ-এর মহাপরিচালক কে.এম. মুনিরুল আলম আল-মামুন। অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন ব্যাংকের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. আমিনুর রহমান এবং সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. মিজানুর রহমান।

আরো পড়ুন:

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিষেধ, তাই লভ্যাংশ দেবে না ১০ ব্যাংক

এনআরবিসি ব্যাংকের মুনাফা বেড়েছে ১০০ শতাংশ

ঢাকা/চিশতী/ফিরোজ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অন ষ ঠ ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

শেষ দু’দিনের প্রত্যাশায় ক্রেতা-বিক্রেতা

তেজগাঁওয়ের ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট-সংলগ্ন অস্থায়ী পশুর হাটে ১৪টি গরু নিয়ে এসেছেন ষাটোর্ধ্ব রিয়াজুল ইসলাম। সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর থেকে গত রোববার আনা তাঁর গরুগুলোর প্রতিটিতে ৩ থেকে ৫ মণ পর্যন্ত মাংস হবে বলে জানান তিনি। গতকাল মঙ্গলবার এক ক্রেতার সঙ্গে তিনি দাম-দর করছিলেন। সাদা রঙের পৌনে চার মণ মাংসের গরুর দাম চাইলেন দেড় লাখ টাকা। ব্যবসায়ী রফিক আহমেদ দাম বলেন ৭০ হাজার টাকা। 

গরু না কিনে পরে এ প্রতিবেদককে রফিক জানান, হাটে পর্যাপ্ত গরু থাকলেও এ বছর একটু বেশিই দাম চাচ্ছেন খামারিরা। ঈদের আরও তিন দিন বাকি। মঙ্গল আর বুধবার (আজ) আরও গরু ঢুকবে হাটে। তখন গরুর দাম কমে যাবে। 

খামারি রিয়াজুল ও রফিক আহমেদের দাম-দরের এ চিত্রই বলে দেয়, রাজধানীর পশুর হাট এখনও জমেনি। ক্রেতারা আশা করছেন, হাটে আরও গরু আসবে। তখন কিছুটা কম দামে গরু পাওয়া যাবে। খামারিদের প্রত্যাশা, আজ বুধবার সরকারি অফিসের শেষ কর্মদিবস শেষে হাটে আসবেন ক্রেতারা। 

মঙ্গলবার রাজধানীর তেজগাঁও পলিটেকনিক, গাবতলী, মোহাম্মদপুরের বছিলা হাট ঘুরে ক্রেতা, খামারি-ব্যাপারী-ইজারাদারদের সঙ্গে কথা বলে হাটের নানা চিত্র দেখা যায়। সারি সারি গরু থাকলেও বিক্রি কম। ক্রেতারা এসে গরু দেখে চলে যাচ্ছেন। 

ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট-সংলগ্ন অস্থায়ী পশুর হাটের ১ নম্বর কাউন্টার থেকে সামনে খেলার মাঠে ঢুকতে দেখা যায়, একসঙ্গে ৩৪টি গরু বেঁধে রেখেছেন শেরপুরের শফিকুল ইসলাম। শুক্রবার সকালে পৌঁছালেও এখন পর্যন্ত একটি গরুও বিক্রি হয়নি। প্রতিটা গরুর মাংস হবে ৭ থেকে ৯ মণ। তিনি গরুর দাম হাঁকিয়েছেন তিন থেকে চার লাখ টাকা পর্যন্ত। তবে এখন পর্যন্ত দাম উঠেছে ১ লাখ ৮০ হাজার থেকে দুই লাখ ১০ হাজার টাকা। সমকালকে তিনি বলেন, গত বছর এ হাটে ৭২টি গরু নিয়ে এসেছিলেন। এ বছর দেশের পরিস্থিতির কারণে ঝুঁকি নেননি।

খেলার মাঠের ফটক থেকে আরও সামনে গেলে ছোট ভাইয়ের সঙ্গে গরু নিয়ে বসে আছেন সরকারি চাকরিজীবী হাবীব। ঈদের ছুটিতে বাড়ি না গিয়ে বাড়ির খামারের গরু বিক্রি করতে তিনি ছোট ভাইকে সঙ্গ দিচ্ছেন। হাবীব বলেন, ‘সিরাজগঞ্জের বাড়িতে পারিবারিক খামার আছে। ওই খামারের গরু প্রতিবছর ঢাকায় এনে বিক্রি করা হয়। এ বছরও ছোট ভাই সাতটি গরু নিয়ে হাটে এসেছে। প্রতিটা গরুর পাঁচ থেকে ছয় মণ মাংস হবে। গরুর দাম তারা বলছেন, দেড় লাখ থেকে দুই লাখ টাকা। ক্রেতারা ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত দাম দিয়েছেন।’

মঙ্গলবার তেজগাঁওয়ের এ হাট পরিদর্শনে আসেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। তিনি বলেন, কোরবানির জন্য দেশে পর্যাপ্ত পশু মজুত রয়েছে। পার্শ্ববর্তী দেশের গরুর প্রয়োজন নেই। সীমান্ত দিয়ে চোরাই পথে যেন প্রতিবেশী কোনো দেশের গরু ঢুকতে না পারে, সে জন্য কড়া নজরদারি রাখছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, সারাদেশের হাটগুলোতে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ভেটেরিনারি চিকিৎসকরা সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করছেন। গরু মোটাতাজাকরণ থেকে ব্যবসায়ীদের বিরত থাকতে বলা হয়েছে।

এ হাটের ইজারাদার মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান সমকালকে বলেন, হাটে পর্যাপ্ত গরু ঢুকেছে। তবে ঈদের আগের দিন পর্যন্ত গরু আসবে। আজ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে হাটে গরু বিক্রি শুরু হয়েছে। টুকটাক বিক্রিও শুরু হয়েছে। তবে বুধবার রাত থেকেই হাট জমে উঠতে পারে।

মোহাম্মদপুরের বছিলায় কোরবানির পশুর হাটে ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলা থেকে ১৫টি গরু নিয়ে এসেছেন আবুল কাশেম ব্যাপারী। তিনি জানান, গ্রামের বিভিন্ন হাট থেকে গরু কিনে এনেছেন। বেশির ভাগই দেশি গরু। গত বছরের তুলনায় এবার গরুর দাম সামান্য বেশি।

বছিলা হাটে গরু নিয়ে আসা আরেক ব্যাপারী নওগাঁর আইজুল মিয়া বলেন, এবার কোরবানির পশুর বাজার খুব একটা সুবিধার মনে হচ্ছে না। গ্রামের হাট জমজমাট হলেও ঢাকার হাট জমেনি। দু-একজন হাটে এলেও দাম যাচাই করে ফিরে যাচ্ছেন।

এই হাটে ধানমন্ডি থেকে এসেছেন বাহারুল ইসলাম। সমকালকে তিনি বলেন, হাটে এসে গরু দেখে দাম বোঝার চেষ্টা করছি। এখন একটু দাম বেশি বলছেন ব্যাপারীরা। তবে দুই দিন পর দাম কমে যাবে। এ ছাড়া এখন গরু কিনলে রাখার জায়গা নেই। বাসার মালিক এক দিন আগে গরু কিনতে বলেছেন। এসব সমস্যায় রাজধানীর সবাই ঈদের দুই-এক দিন আগে গরু কিনে থাকে।

মঙ্গলবার গাবতলী হাট ঘুরে দেখা যায়, দেশের নানা প্রান্ত থেকে ট্রাকে এখনও গরু আসছে। কিন্তু হাটে সেভাবে ক্রেতা নেই। বেশির ভাগ যারা এসেছেন, গরু দেখাই তাদের মূল উদ্দেশ্য। হাসিল ঘরেও তেমন ভিড় দেখা যায়নি। 

রাজবাড়ীর আমজাদ ডেইরি ফার্ম থেকে সোমবার রাতে সাদাপাহাড়, কালাপাহাড়সহ ছয়টি বড় আকারের গরু নিয়ে এসেছেন ব্যাপারী মো. ফরিদ। গরুর নাম যেমন পাহাড়, দেখতেও তেমন। দুটির ওজন প্রায় ৬০ মণ। এ জোড়া গরুর দাম ৪০ লাখ টাকা হাঁকছেন ব্যাপারী। আরও যে কয়টা গরু রয়েছে, সবটার ওজন ১৫ মণের একটু কম বা বেশি। 

ব্যাপারী মো. ফরিদ বলেন, গত বছরের চেয়ে এবার কিছুটা বেশি দাম আশা করছি। কারণ গরুর খাদ্যের দাম কিছুটা বাড়তি ছিল। এ ছাড়া গরু যত বড় হয়, যত্নও তত বেশি নিতে হয়। 

ঢাকা উত্তর সিটির প্রশাসক (ডিএনসিসি) মোহাম্মদ এজাজ সমকালকে বলেন, হাটগুলোতে নিরাপত্তার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি ভ্রাম্যমাণ আদালত থাকবে। নিরাপত্তা, জাল টাকা শনাক্তের ব্যবস্থাও থাকবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ