ময়মনসিংহের ধোবাউড়া ও হালুয়াঘাট সীমান্ত দিয়ে ২২ জন এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট সীমান্ত দিয়ে আটজনকে ঠেলে পাঠিয়েছে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। গতকাল সোমবার গভীর রাত ও আজ মঙ্গলবার ভোরে তাঁদের বাংলাদেশে পাঠানো হয়। পরে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) তাঁদের আটক করে হেফাজতে নেয়।

বিজিবি জানিয়েছে, নেত্রকোনার অধীন ৩১ বিজিবির আওতাধীন ধোবাউড়ার মুন্সিপাড়া সীমান্ত দিয়ে দিবাগত রাত তিনটার দিকে ভারতের রসনাই গিরি বিএসএফ ক্যাম্পের সদস্যরা ১২ জনকে ঠেলে পাঠান। পরে বিজিবি তাঁদের আটক করে মুন্সিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিয়ে যায়।

আটক করা ব্যক্তিদের মধ্যে একজন শিশু, তিনজন নারী ও আটজন পুরুষ। জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা জানিয়েছেন, তাঁরা খুলনা বিভাগের বাসিন্দা। ২০০৪ সালে অবৈধভাবে ভারতের গুজরাট রাজ্যে গিয়ে বসবাস শুরু করেন তাঁরা।

আটক ব্যক্তিদের মধ্যে শরিফুল উল্লাহ নামের একজন বলেন, ২০০৪ সালে কাজের সন্ধানে বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে ভারতে যান। গুজরাটে পরিবার নিয়ে বসবাস করছিলেন এবং সেখানে একটি মুরগির দোকানে কাজ করতেন। গত ২৪ মে ভারতের পুলিশ তাঁদের আটক করে বিএসএফের কাছে হস্তান্তর করে। পরে বিএসএফ তাঁদের সঙ্গে থাকা টাকা, মুঠোফোনসহ অন্যান্য জিনিস রেখে সীমান্তে এনে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠায়।

বিজিবির মুন্সিপাড়া ক্যাম্পের নায়েক সুবেদার খাইরুল ইসলাম বলেন, রাতে বিএসএফ ১২ জনকে পুশইন করে। তাঁরা সবাই খুলনা বিভাগের নাগরিক। ২০০৪ সালে তাঁরা ভারতে গিয়েছিলেন। বৈধ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে বিএসএফ তাঁদের পুশইন করেছে। বর্তমানে তাঁদের পুলিশের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।

অন্যদিকে হালুয়াঘাট উপজেলার সূর্যপুর সীমান্ত দিয়ে গতকাল রাত তিনটার দিকে ৯ নারী ও ১ শিশুকে ঠেলে পাঠিয়েছে বিএসএফ। ময়মনসিংহ ৩৯ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুহাম্মদ সানবীর হাসান মজুমদার বলেন, আটক হওয়া ১০ জনই বাংলাদেশি। তাঁদের পরিচয় শনাক্ত করা হয়েছে। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে তাঁরা বিভিন্ন সময়ে ভারতে গিয়েছিলেন। তাঁদেরও পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হচ্ছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট উপজেলার চাঁনশিকারী সীমান্ত দিয়ে আটজনকে ঠেলে পাঠিয়েছে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। আজ ভোরে তাঁদের আটক করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।

বিজিবি ৫৯ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল গোলাম কিবরিয়া বলেন, আজ ভোর সাড়ে চারটার দিকে বিএসএফ আটজনকে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠায়। এর মধ্যে চারজন নারী ও চারজন পুরুষ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা জানিয়েছেন, তাঁদের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহীসহ বিভিন্ন জেলায়।

লেফটেন্যান্ট কর্নেল গোলাম কিবরিয়া জানান, আটক ব্যক্তিরা বিজিবির চাঁনশিকারী সীমান্ত ফাঁড়িতে আছেন। তাঁদের ভোলাহাট থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে। এ বিষয়ে পরে সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিস্তারিত জানানো হবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব এসএফ

এছাড়াও পড়ুন:

গাজীপুরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে জলাবদ্ধতা, ঈদযাত্রায় ভোগান্তির আশঙ্কা

কোথাও হাঁটুপানি, কোথাও এর চেয়ে কম। কয়েকটি স্থানে নালার স্লাব খুলে রাখা হয়েছে। ধীরগতিতে চলছে যানবাহন। কখনো কখনো দীর্ঘ যানজট দেখা দিচ্ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খাচ্ছে ট্রাফিক পুলিশ। সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের গাজীপুরের ভোগড়া থেকে চান্দনা চৌরাস্তা পর্যন্ত এ চিত্র দেখা যায়।

ভোগড়া এলাকায় কথা হয় গাজীপুর মহানগরের ট্রাফিক পুলিশের সদস্য আল আমিনের সঙ্গে। তিনি বলেন, মহাসড়কে পানি জমে থাকায় যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। সেই সঙ্গে ঢাকা-বাইপাস সড়কে টোল আদায় করায় ধীরগতির কারণে যানজট দীর্ঘ হচ্ছে। পুলিশ সদস্যরা এই যানজট নিরসন করতে হিমশিম খাচ্ছেন।

পবিত্র ঈদুল আজহার বাকি আর মাত্র চার দিন। প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদ উদ্‌যাপন করতে রাজধানী ও আশপাশের জেলা থেকে গ্রামের বাড়ি ফিরবেন কর্মজীবী মানুষেরা। রোববার সকাল থেকে গাজীপুরের দুই মহাসড়ক দিয়ে যাত্রীর চাপ স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে কিছুটা বেড়েছে। তবে চলমান বৃষ্টি দীর্ঘায়িত হলে এবং শিল্পকারখানা একসঙ্গে ছুটি হলে যানজটের শঙ্কা করছেন যাত্রী ও পরিবহনসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

এলাকাবাসী ও ট্রাফিক পুলিশ জানায়, গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টির কারণে গাজীপুরের ঢাকা–ময়মনসিংহ মহাসড়কের ভোগড়া বাইপাস, চান্দনা চৌরাস্তাসহ আশপাশের সড়কে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন নগরবাসী ও মহাসড়কের যাত্রীরা। বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টির কারণে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে যানবাহন চলাচলে ধীরগতি লক্ষ করা গেছে। এ জন্য আশঙ্কা করা হচ্ছে, বৃষ্টি না কমলে এবারের ঈদযাত্রায় ভোগান্তি পোহাতে হবে ঘরমুখী মানুষদের।

শিল্প–অধ্যুষিত গাজীপুরে ২ হাজার ১৭৬টি নিবন্ধিত কলকারখানা রয়েছে। এর মধ্যে ১ হাজার ১৫৪টি পোশাক কারখানা। এসব কারখানায় কাজ করেন লাখ লাখ কর্মী। খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, অধিকাংশ কারখানা ছুটি হবে ৪ থেকে ৬ জুনের মধ্যে। একসঙ্গে ছুটি হওয়ায় মহাসড়কে অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি হবে এবং যানজটের সৃষ্টি হতে পারে।

উত্তরবঙ্গের প্রবেশপথ–খ্যাত ঢাকা–টাঙ্গাইল মহাসড়কের চন্দ্রা ত্রিমোড় ও ঢাকা–ময়মনসিংহ মহাসড়কের ভোগড়া, চান্দনা চৌরাস্তা ধরেই মূলত রাজধানী ও গাজীপুরের লোকজন বাড়ি ফেরেন। ঈদের আগের চাপ এড়িয়ে চলার জন্য অনেকেই পরিবার-পরিজনকে আগেই গ্রামের বাড়িতে পাঠিয়ে দিচ্ছেন।

ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে জলাবন্ধতার কারণে যানবাহন চলাচল করছে ধীরগতিতে। গাজীপুর মহনগরীর ভোগড়া বাইপাস এলাকা। সোমবার বেলা সাড়ে ১১টায়

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নওফেলের স্ত্রী ইমার বিরুদ্ধে মামলার সিদ্ধান্ত দুদকের
  • ময়মনসিংহের কখন কোথায় ঈদ জামাত
  • ময়মনসিংহে বাড়ি ফেরার পথে আইনজীবীকে পেটাল দুর্বৃত্তরা
  • গাজীপুরে ঢাকা-টাঙ্গাইল ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যাত্রীর চাপ বেড়েছে
  • ছিনতাইকারীদের লাঠির আঘাতে আহত পুলিশ কর্মকর্তা
  • ময়মনসিংহ সীমান্তে ২২ জনকে ঠেলে দিলো বিএসএফ
  • ঈদের আগে-পরে যেমন থাকবে আবহাওয়া
  • চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে ৮ জনকে ঠেলে পাঠাল বিএসএফ
  • গাজীপুরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে জলাবদ্ধতা, ঈদযাত্রায় ভোগান্তির আশঙ্কা