যত কষ্টই হোক, পাঠ্যবই নির্ভুল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি: শিক্ষা উপদেষ্টা
Published: 4th, June 2025 GMT
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. সিআর আবরার বলেছেন, ‘‘সামান্য ভুলসহও পাঠ্যবই কোমলমতি শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দিতে আমার মন সায় দিচ্ছে না।’’
তিনি বলেন, ‘‘সময় স্বল্পতার কারণে ২০২৬ সালের বই চলমান বছরের কারিকুলাম অনুযায়ী ছাপানো হবে এবং এতে যেসব সাধারণ ভুলভ্রান্তিগুলো ছিল, সেগুলো ঠিক করে আগামী বছরের শুরুতেই যাতে শিক্ষার্থীরা পাঠ্যবই হাতে পায় তার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তাই যত কষ্টই হোক, বইগুলো যত্ন এবং দায়িত্বের সঙ্গে নির্ভুল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি আশাবাদী, এনসিটিবি এই গুরুদায়িত্ব পালন করতে পারবে।’’
বুধবার (৪ জুন) সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, ‘‘২০২৫ সালে সম্পন্ন হওয়া এসএসসি পরীক্ষায় শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তাসহ সবার অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে প্রশ্নপত্র ফাঁসের মতো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। আমরা আশা করছি, এইচএসসি পরীক্ষাও একইভাবে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হবে। এক্ষেত্রে সবার সহযোগিতা চাই।’’
ড.
তিনি বলেন, ‘‘দায়িত্ব নেওয়ার পর শিক্ষা ব্যবস্থাকে শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড় করাতে অনেকে নানা পরামর্শ দিয়েছেন। আমার নিজেরও রয়েছে অনেক স্বপ্ন। শিক্ষা কারিকুলামকে মানসম্পন্ন করা, অনলাইন শিখনের ব্যপ্তি ঘটিয়ে কেন্দ্র থেকে প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত একই মানের শিক্ষা নিশ্চিত করা, সাধারণ শিক্ষা এবং মাদ্রাসা শিক্ষাকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিনির্ভর করা, কারিগরি শিক্ষা ব্যবস্থার সম্ভাবনার দ্বার খুলে দেওয়া, জাতীয় পর্যায়ে পাবলিক এবং প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভেতরে প্রতিযোগিতা তৈরি করে সব শিক্ষা মাধ্যমগুলোর রেটিং বৃদ্ধি করাসহ আরো অনেক স্বপ্ন!’’
উপদেষ্টা বলেন, ‘‘আমরা মনে করি দেশের বেকারত্ব দূর করার ক্ষেত্রে কারিগরি শিক্ষার একটা বিরাট ভূমিকা রয়েছে। সেই লক্ষ্যে মন্ত্রণালয় কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। আমরা বিশ্বাস করি, কারিগরি শিক্ষা কার্যক্রম প্রণয়ন এবং ছাত্র-ছাত্রীদের প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে ব্যক্তিখাতের একটা বড় ভূমিকা রয়েছে। সেই লক্ষ্যে মন্ত্রণালয় খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ, গ্লাস ও সিরামিক, চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণ ও ওষুধ শিল্পসহ বিভিন্ন শিল্পের নেতৃত্বদানকারী সংগঠন এবং বিশিষ্ট শিল্প-প্রতিষ্ঠানের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে তাদের পরামর্শ নেওয়া হয়েছে। কারিগরি শিক্ষা ব্যবস্থার চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় করণীয় চিহ্নিত করতে শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রী, গবেষক, প্রাইভেট সেক্টরের প্রতিনিধি ও বিশেষজ্ঞদের নিয়ে কর্মশালা করা হয়েছে। এখানে কারিগরি শিক্ষা কার্যক্রম এবং দেশ ও বিদেশের শ্রমবাজারে কীভাবে বাজারের চাহিদা অনুযায়ী কারিগরি শিক্ষায় দীক্ষিত মানবসম্পদ অন্তর্ভুক্ত করা যায় সে বিষয়ে অংশীদারদের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে ও পরামর্শ নেওয়া হয়েছে। কারিগরি শিক্ষাকে ছাত্র-ছাত্রী এবং অভিভাবক প্রিয় করার জন্য দেশের বিভিন্ন জেলায় জনসচেতনতামূলক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছে। আমরা মনে করি, কারিগরি শিক্ষায় নারীদের অংশগ্রহণ সীমিত, তাই সে বিষয়ে আমাদেরকে উদ্যোগ নিতে হবে এবং একইসঙ্গে অন্যান্য পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী এবং প্রতিবন্ধীদেরও বেকারত্ব দূর করার জন্য কারিগরি শিক্ষা ব্যবস্থায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। এছাড়া, মাদ্রাসা শিক্ষাকে প্রযুক্তিনির্ভর করতে আমরা কাজ করছি।’’
তিনি বলেন, ‘‘আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর দুটি বিশ্ববিদ্যালয় উচ্চপদে নিয়োগের প্রয়োজনে আমরা একটি উপাচার্য নির্বাচনী প্যানেল তৈরি করেছি। পত্রিকায় বিজ্ঞাপন প্রদান এবং ইচ্ছুকদের আবেদনপত্র গ্রহণের মাধ্যমে ভিসি নিয়োগ প্রদান করা হবে। আমরা মন্ত্রণালয়, ইউজিসি এবং বিজ্ঞ অধ্যাপকদের সমন্বয়ে সার্চ কমিটি গঠন করেছি। আমি আশাবাদী, আপনাদের সবার সহযোগিতায় যদি যোগ্যতা এবং কম্পিটিশনের ভিত্তিতে ভিসি নিয়োগের প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে পারি, তবে আমার যে স্বপ্ন; দেশে বসেই আগামী জেনারেশন বিশ্বকে নেতৃত্ব দেবে সে পথে এগোতে পারব।’’
ড. সিআর আবরার বলেন, ‘‘সাম্প্রতিককালে জাতীয় পর্যায়ে করণীয় সংক্রান্ত দুটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। অর্থনীতির ওপর শ্বেতপত্র ও টাস্কফোর্সের রিপোর্ট। এ দুই প্রতিবেদনে শিক্ষা খাতের নানা বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে। আমরা মনে করি, আমাদের ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা নিরূপণে এ প্রতিবেদনগুলোর তথ্য ও সুপারিশ নেওয়া আমাদের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘অবসরপ্রাপ্ত বেসরকারি শিক্ষকদের সুবিধা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সরকার সম্প্রতি ২০০০ কোটি টাকার বন্ড এবং ২০০ কোটি টাকার নগদ বরাদ্দ দিয়েছে। সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের সমস্যা নিরসনে এটি একটি বড় ধরনের পদক্ষেপ।’’
অনুষ্ঠানে মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব সিদ্দিক জোবায়ের এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব ড. খ ম কবিরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/হাসান/রাজীব
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব যবস থ উপদ ষ ট লক ষ য র জন য গ রহণ
এছাড়াও পড়ুন:
খাগড়াছড়িতে সাংবাদিক মিলন ত্রিপুরার ওপর হামলার অভিযোগ তদন্তের আহ্বান সিপিজের
খাগড়াছড়িতে সাংবাদিক মিলন ত্রিপুরার ওপর হামলার অভিযোগ তদন্ত করতে বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সাংবাদিকদের অধিকার রক্ষায় সোচ্চার বৈশ্বিক সংগঠন কমিটি টু প্রোটেক্ট জার্নালিস্টস (সিপিজে)। দোষীদের অবশ্যই শাস্তির আওতায় আনতে হবে বলে উল্লেখ করেছে সংগঠনটি।
মঙ্গলবার সিপিজের এক টুইটে এ আহ্বান জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ডিবিসি নিউজের প্রতিনিধি মিলন ত্রিপুরা ১৭ জুলাই একটি বিক্ষোভের সংবাদ সংগ্রহ করছিলেন। এ সময় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা তাঁকে মারধর করেন ও ধারণ করা ভিডিও ফুটেজ মুছে ফেলতে বাধ্য করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।